অমীমাংসিত ভারতীয় রহস্য (১ম পর্ব)

ভারতীয় সংস্কৃতি আর সভ্যতা বলা চলে বিশ্বের সব থেকে পুরাতন সভ্যতা গুলির মধ্যে অন্যতম। এই সভ্যতায় যে কত কিছু আছে তা বলে হয়ত শেষ করা যাবে না। এই যেমন ধরুন 'পৃথিবীর সর্ব প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়' প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই সভ্যতায়। যা হোক আজ আপনাদের জানাব এই ভারতীয় সভ্যতার ১০টি অমীমাংসিত রহস্য। তাহলে চলুন শুরু করা যাক প্রথম পর্ব।


১০) রাইট ভাইদের আগেই ভারতে আবিস্কার হয়েছিল উড়োজাহাজঃ
উড়োজাহাজের অবিস্কারক কে? এই প্রশ্নের জবাবে নিঃশ্চই এক বাক্যে সবাই বলে উঠবেন রাইট ভাতৃদ্বয়। আসলেই মানব ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল এরা। কিন্তু যদি বলি রাইট ভাইদের এই আবিস্কারের প্রায় এক দশক আগেই আবিস্কার হয়েছিল উড়োজাহাজ। কি অবাক হচ্ছেন? বেশ পুরাতন 'Deccan Herald' এবং 'Times of India' পত্রিকার সংস্করণ দেখলে এর প্রমান মেলে। আর এই উড়োজাহাজ তৈরি করেছিলেন 'শিবকর বাপুজি তলপাদ্দে' (Shivkar Bapuji Talpade)। মহারাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিবকর বাপুজি তলপাদ্দে যে শুধু উড়োজাহাজ বানিয়েছেন তাই নয়, ১৮৯৫ সালে তিনি যে উড়োজাহাজ উড়িয়েছিলেন সেটি ছিল মানুষ বিহীন প্রথম উড়ন্ত উড়োজাহাজ ছিল। যদিও প্রথম উড্ডয়নেই দূর্ঘটনায় উড়োজাহাজটি ধ্বংস হয়ে যায়। আর এই উড়োজাহাজের নাম দেওয়া হয়েছিল 'মারুথসখা' (MarutSakha)। শিবকর এই উড়োজাহাজের নকশা পান তার গুরুর কাছ থেকে আর এই উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ছিল মারকিউরি আয়ন ইঞ্জিন। তিনি তার এই আবিস্কার নিয়ে খুব বেশি একটা গবেষণা করার সুযোগ পান নি অর্থের অভাবে। আর তার এই আবিস্কারের জন্য তিনি কোন স্বীকৃতি পান নি।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info


০৯) তাজমহল আসলে শিবের মন্দিরঃ
এ নিয়ে আর আগে 'তাজমহলঃ লুকানো সত্য' লেখায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছিল। তাই এখানে আর কিছু লিখলাম না।


০৮) যোধপুরের সনিক বুমঃ
'সনিক বুম' (Sonic Boom) কেন তৈরি হয় তা তো অনেকেই জানেন। তবে যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, কোন উড়োজাহাজ যখন শব্দের গতি ধারন করার মূহুর্তে পৌছায় ঠিক তখন বিকট এক আওয়াজের সৃষ্টি হয়। আর এই কারনেই কোন উড়োজাহাজ কোন লোকালয় সমৃদ্ধ অঞ্চলে শব্দের গতিতে ছোটে না। কিন্তু ২০১২ সালের ১৮ই ডিসেম্বর যোধপুরে কানে তাক লাগান সনিক বুম শোনা যায়। প্রথমে অনেকেই ধারনা করেছিল এটি বিমান বাহিনীর কাজ। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিমান বাহিনী থেকে জানানো হয় এই এলাকার আশেপাশে তাদের কোন প্লেন ঐদিন উড়েই যায় নি। আজ অবধি এই সনিক বুমের উৎস রহস্যের আঁধারেই রয়েছে। অনেকেই একে যুক্তরাজ্য এবং টেক্সাসে ঘটে যাওয়া রহস্যজনক বুমের সাথে মিল খুজে ফেরেন।


০৭) U.F.O ঘাটিঃ
পৃথিবীর যেসকল জায়গায় একদম যাওয়াটা অসম্ভব, সেরক একটি জায়গা হচ্ছে লাদাখের 'কাংকা লা দা পাস' (Kongka La Pass)। এই জায়গাটি হচ্ছে ভারত চায়নার বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চল। যেহেতু এখান যাওয়াটা বেশ কঠিন আর আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিয়ে বিতর্কিত অঞ্চল তাই এখানে কোন মানুষের যাতায়ত নেই বললেই চলে। মানুষের যাতায়ত নেই বলে কি আর কারো যাতায়ত নেই এখানে? এই অঞ্চলের লোকদের মতে এইখানে বিভিন্ন ধরনের উড়ন্ত চাকতি তারা দেখেছে। এমনকি গুগল ম্যাপে পর্যন্ত উড়ন্ত চাকতি ধরা পরে। তাই অনেকেরই ধারনা ওখানে রয়েছে ভিনগ্রহ বাসীদের ঘাটি। তবে এর রহস্য এখন পর্যন্ত উৎঘাটন করা সম্ভব হয় নি।


০৬) খাবার আর পানি ছাড়া বেঁচে আছেন ৭৫ বছরঃ
'প্রালাদ জানি' (Prahlad Jani), যাকে সবাই চেনে 'মাতাজি' নামে। মাতাজির দাবি সে বেঁচে থাকতে পারে কোন খাবার ছাড়া এমনকি পানি ছাড়াও। আর সে এরকম করছে ১৯৪০ সাল থেকে। আর সে হিসেবে প্রায় ৭৫ বছর সে কিছু না খেয়েই বেঁচে আছে। এ পর্যন্ত দুবার বেশ কড়া ভাবে তার এই দাবিকে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। প্রথম পরীক্ষার সম্মুখীন হন ২০১০ সালে। তিনটি ক্যামেরা ২৪ ঘন্টা টানা ১৫ দিন তাকে পর্যবেক্ষন করে। বিশেষজ্ঞরা অবাক হয়ে যায় যখন তারা দেখে যে এই ১৫ দিন মাতাজি শুধু অক্সিজেন ছাড়া আর কিছুই গ্রহন করে নি। আর এই ১৫ দিন পরেও তার মধ্যে কোন ক্ষুদা বা শরীরে পানি শূন্যতার কোন লক্ষন ছিল না। এই বয়সেও তার স্বাস্থ্য অনেকটা ৪০ বছর বয়স্ক ব্যক্তির মত। আর বেঁচে থাকার এই রহস্য আজও উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

২টি মন্তব্য:

  1. আমি যতদুর জানি প্রলদ জনি এর ব্যাপারটা নিয়ে ভন্ডামি হবার সন্দেহ অনেকেই প্রকাশ করেছে কিন্তু ভারত দেখে কেউ তেমন ঘাটায় নাই , ওরাও তো ধর্মের ব্যাপারে একটু সেন্সেটিভ ।

    উত্তরমুছুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।