আমরা সাধারণত ভয়ংকর প্রাণী বলতে বাঘ, সিংহ, সাপ, কুমির এসবকেই বুঝি। আবার সুন্দর প্রাণী বললে চোখের সামনে ভেশে উঠে হরিণ, একুরিয়াম ফিস, খরগোস, জিরাফ ইত্যাদি। তাহলে ভয়ঙ্কর সুন্দর প্রাণী বলতে এখানে আমরা কি বুঝাতে চেয়েছি? হুম পৃথিবীতে এমন কিছু প্রাণী আছে যাদের সুন্দর চেহারার আড়ালে লুকিয়ে আছে মৃত্যুর হাতছানি। তারা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার ভয়ঙ্করও মানুষ বা অন্য প্রাণীদের জন্য। সেই সব ব্যতিক্রমী প্রাণীদের নিয়ে এই আয়োজন।
উলভেরিন (Wolverine):
উলভেরিন (Wolverine):
উলভেরিন নামটা পরিচিত মনে হচ্ছে না। হ্যাঁ, X-Men এর মতো অনেক হলিউডি মুভির কল্যাণে আমরা অনেকেই নামটার সাথে পরিচিত। উপরের যে প্রজাতির উলভেরিনটা দেখছেন তাকে বলা হয় ‘গুলো গুলো’ (Gulo Gulo)। এটি দেখতে খুব সুন্দর নিরীহ একটা ছোটখাটো ভল্লুকের মতো, দেখলেই আদর করতে ইচ্ছা করে। শিকারি হিসেবে এদের বেশ সুনাম আছে। শক্তিশালী বাহু এবং ধারালো নখের সাহায্যে নিজের চাইতেও বড় আকারের প্রাণীকে ঘায়েল করে ফেলে। কি, আদর করে দেখবেন নাকি?
অস্ট্রেলিয়ান বক্স জেলিফিশ (Australian Box Jellyfish):
অস্ট্রেলিয়ান বক্স জেলিফিশ (Australian Box Jellyfish):
অস্ট্রেলিয়ান বক্স জেলিফিশ, যা সম্ভবত জেলিফিশের সকল প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর। এটা অনেকটা স্বচ্ছ পর্দার মত। এটি প্রায় ১৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। সাগরে ডাইভ করার সময় কখনো বক্স জেলিফিশ দেখলে কোনকিছু না ভেবেই পলায়ন করুন। কারণ, এটি ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত প্রাণী’ হিসাবে পরিচিত। এক একটি জেলিফিশে যে পরিমাণ বিষ থাকে তা ৬০ জন মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট।
ব্লু রিংড অক্টোপাস (Blue Ringed Octopus):
ব্লু রিংড অক্টোপাস (Blue Ringed Octopus):
এবার ব্লু রিংড অক্টোপাস। এই অক্টোপাস খুব ছোট মাত্র ৫ থেকে ৮ ইঞ্চি এবং দেখতেও চমৎকার। এর সারা শরীর উজ্জ্বল নীলাভ ফ্লোরসেন্ট বাতির মতো রিং থাকে। এটি বিপদ দেখলে খুব দ্রুত রঙ পরিবর্তন করে নীলাভ রিং সহ উজ্জ্বল হলুদ বর্ণে পরিণীত হয়। এটি এতই সুন্দর যে, মনে হয় ধরে নিয়ে গিয়ে বাড়ির একুরিয়ামে রেখে দিই। কিন্তু, সমস্যা হোল এর বিষ আপনাকে বিনা পয়সায় পরলোক যাত্রার ব্যবস্থা করে দিবে, যার কোন প্রতিষেধক এখনো পর্যন্ত নেই। কি, রাখবেন নাকি আপনার একুরিয়ামে?
Pfeffer’s flamboyant cuttlefish:
Pfeffer’s flamboyant cuttlefish:
এর নামটা আপনারা কষ্ট করে উচ্চারণ করে নিন। এর নামের শেষ ওয়ার্ড Cuttlefish (কাতল ফিশ) দেখে বুঝা যাচ্ছে এটা একটা মাছ তবে, আমাদের দেশের কাতল মাছের মতো নয়। এটি দেখতে সুন্দর এবং ছোট, মাত্র ৩.১ ইঞ্চি (৮ সে:মি:)। এটা উত্তর অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ নিউগিনিতে বেশি দেখা যায়। এটি খুবই আক্রমণাত্মক এবং প্রায় ব্লু রিংড অক্টোপাসের মতই বিষাক্ত।
পয়জন ডার্ট ফ্রগ (Poison Dart Frog):
পয়জন ডার্ট ফ্রগ (Poison Dart Frog):
দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি আমাদের দেশের কুনোব্যাঙ বা সোনাব্যাঙ নয়। এটি দক্ষিণ আমেরিকায় বেশি দেখা যায়। একে পয়জন অ্যারো ফ্রগও (poison arrow frog) বলা হয়। এটি Dendrobatidae পরিবারের সদস্য। এই প্রজাতির ব্যাঙেরা বেশিরভাগই দিনের বেলায় সক্রিয় থাকে। এরা বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের হয়ে থাকে। এদের চামড়ায় লিপোথিলিক আলকালোইড (lipophilic alkaloid) থাকে। এটা তেমন মারাত্মক নয় যদি না আপনি বা আপনার বাড়ির পোষা প্রাণীটি এর সাঁতরানো পানি পান না করেন।
রেকুন (The Raccoon):
রেকুন (The Raccoon):
বিদেশী লোমশ কুকুরের মতো দেখতে রেকুন কে না পছন্দ করে ? এরা ক্যাম্পিং এর সময় ময়লা ফেলে, খাবার চুরি করে মানুষকে বিরক্ত করে। দেখলে মনে হয় ধরে একটা বাড়ি নিয়ে যাই, পোষ মানিয়ে নেব। বাঘ, সিংহ মানুষকে ভয় পেলেও রেকুন কখনো মানুষকে ভয় পায় না। কিছু বিজ্ঞানী বলেছেন, কয়েক প্রজন্ম ধরে চেষ্টা করলে রেকুনকে হয়তো কুকুর বিড়ালের মতো পোষ মানানো যেতে পারে। এরা মাঝে মাঝে খুবই আক্রমণাত্মক আচরণ করে। মানুষের দ্বারা বিরক্ত হলে এরা ঝাঁক বেধে লোকালয়েও আক্রমণ করে।
লেখকঃ মরু ভূমির জলদস্যু।
সম্পাদকঃ জানা অজানার পথিক।
লেখকঃ মরু ভূমির জলদস্যু।
সম্পাদকঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন