প্রথম দেখাতে জার্মানির 'Wewelsburg Castle' এর বেজমেন্টের বৃত্তাকার কক্ষটি দেখলে আপনার খুব বেশি অস্বাভাবিক কিছু মনে হবে না। মার্বেল পাথরে তৈরি করিডোর যে কাউকে মুগ্ধ করবে। ঝকঝকে দেয়াল গুলো এই ক্যাসেলে আগত ব্যক্তিকে স্বাগত জানাবে। কক্ষের ঠিক মাঝখানেই দেখা যাবে, একটা পালিশ করা বেদী ধাপে ধাপে একটা পোড়া ও ফাটল যুক্ত পাথরের দিকে উঠে গিয়েছে। এখানে উঠে এলেই দেখা যাবে, বাঁকানো দেয়ালে ১৩টি লন্ঠন জ্বলছে একসাথে। কিন্তু যখনই কক্ষটির উপরের দিকে কেউ তাকাবে, সে প্রচণ্ড মানসিক ঝাঁকুনি খাবে। বৃত্তাকার কক্ষটির ছাদে গম্ভুজ আকৃতির স্থানে এক বিরাট স্বস্তিকা চিহ্ন। যেটা একই সাথে ছিল জার্মান নাৎসী পার্টির প্রতীক।


এই কক্ষটি ছিল শয়তানের উপাসনার জন্য নির্ধারিত প্রধান মন্দির। শয়তানের উদ্দেশ্যে বলা মন্ত্রগুলোই জার্মানির নাৎসী পার্টির মূল উৎস ও পরিচালক। আর শয়তানের উপাসনাকারী বিশেষ এই গোষ্ঠীর নাম ছিল ‘ভ্রিল সোসাইটি’।
হিটলারের অনেক বিশ্বস্ত অনুচর যেমন হিমলার, বোরম্যান ও হেসসহ অনেকেই এই সোসাইটির সদস্য ছিলেন। আর এই মন্ত্রপাঠ সভার কেন্দ্রতে ছিলেন নাৎসী পার্টির প্রধান এডলফ হিটলার স্বয়ং। এই মন্ত্রপাঠ সভায় আগত অন্যান্যরা বিশ্বাস করতেন হিটলারের মাঝে অজ্ঞাত অশরীরি শক্তির সাথে যোগাযোগের ক্ষমতা আছে। যে অজ্ঞাত শক্তি নাৎসি বাহিনীকে সাহায্য করবে পুরো পৃথিবীতে তাদের ক্ষমতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে। হিটলারকে অনেকে ভাবতেন ‘অন্ধকারের প্রেরিত পুরুষ বা মুক্তিদাতা’ কিংবা ‘দ্য ডার্ক মেসিয়াহ’।
হিটলারের অনেক বিশ্বস্ত অনুচর যেমন হিমলার, বোরম্যান ও হেসসহ অনেকেই এই সোসাইটির সদস্য ছিলেন। আর এই মন্ত্রপাঠ সভার কেন্দ্রতে ছিলেন নাৎসী পার্টির প্রধান এডলফ হিটলার স্বয়ং। এই মন্ত্রপাঠ সভায় আগত অন্যান্যরা বিশ্বাস করতেন হিটলারের মাঝে অজ্ঞাত অশরীরি শক্তির সাথে যোগাযোগের ক্ষমতা আছে। যে অজ্ঞাত শক্তি নাৎসি বাহিনীকে সাহায্য করবে পুরো পৃথিবীতে তাদের ক্ষমতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে। হিটলারকে অনেকে ভাবতেন ‘অন্ধকারের প্রেরিত পুরুষ বা মুক্তিদাতা’ কিংবা ‘দ্য ডার্ক মেসিয়াহ’।
ইতিহাসবিদরা নাৎসি বাহিনীর ক্ষমতার উৎস ও তাদের চালানো গণহত্যা এবং গোপন ধর্মীয় আচার-আচরণ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে এসেছেন। আর খুব অদ্ভুত ও হাস্যকর মনে হলেও সত্য, তাদের এই ভয়াবহ ও ব্যতিক্রমী ধর্মীয় আচার-আচরণের মূল উৎস হচ্ছে উনবিংশ শতাব্দীতে 'Edward Bulwer-Lytton' এর লিখিত একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ভিত্তিক উপন্যাস ‘Vril-The Coming Race’ । এতে ভিন্ন গ্রহের উড়ন্ত যান, পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উঠে আসা এলিয়েন ও ‘ভ্রিল’ নামে একটি রহস্যময় শক্তির আবির্ভাবের ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে। নাৎসিবাদের প্রসারের ক্ষেত্রে গুপ্তবিদ্যা বিদ্যা ও কিংবদন্তীর ভূমিকা ছিল অনেক। তাদের আচরিত রীতি-নীতির কথা পড়লে এখনকার অনেকের কাছে অদ্ভুত, বীভৎস মনে হবে। কিন্তু এই জিনিসগুলোই বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে নাৎসি বাহিনীর উত্থান ও এর ধ্বংসযজ্ঞের মূল নিয়ন্ত্রক ছিল। আর ভ্রিল সোসাইটি যেহেতু শয়তানের প্রতি অনুগত ছিল, তাই ইতিহাসবিদরা মনে করেন, তাদের পক্ষে বিশ্বের ভয়াবহতম গণহত্যা ঘটানো খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। আর্যশক্তির প্রতিষ্ঠার জন্য ভ্রিল গুপ্ত শক্তির অনুসারীরা সম্ভব সব ধরণের অপরাধ করেছে। এর মাঝে রয়েছে সরাসরি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, নর বলি, মৃত আত্মাদের উপাসনা ও তাদেরকে নিজেদের মাঝে ধারণ করার প্রচেষ্টা এবং যৌনাঙ্গের মাধ্যমে নিজেদের মাঝে ‘রহস্যময় শক্তি’র সঞ্চালন করা।
এছাড়া তাদের মাঝে পৃথিবীর পূর্বাঞ্চলীয় দেশ গুলোর গুপ্তবিদ্যা ও গুপ্তবিদ্যার প্রচারকদের নিয়েও বিশাল আগ্রহ ছিল। এদের মাঝে একজন ছিলেন মাদাম ব্ল্যাভাৎস্কি। তিনি বিশ্বাস করতেন খাঁটি ইউরোপীয়রা হচ্ছে আর্য বা আরিয়ান নামের দেবদূতদের উত্তরসূরি। তিনি ও তার মতো আরো অনেকে বিশ্বাস করতেন, এই আর্যরাই পিরামিড, আটলান্টিস তৈরি করেছিল, এন্টারটিকা মহাদেশের নিচে অনেক গুলো শহর তৈরি করেছিল। এছাড়া তারা এটাও বিশ্বাস করতেন, আর্যদের কিছু বংশধর হিমালয়ে বসবাস করে ও তাদের প্রতীক হচ্ছে ‘স্বস্তিকা চিহ্ন'।
সবচেয়ে বীভৎস যে বিষয়টি ছিল, তা হচ্ছে এই ভ্রিল সোসাইটির সদস্যরা বুকে ছুরি বসিয়ে ও শিরশ্ছেদের মাধ্যমে শিশু বলি দিত। ১৯২০ সালের দিকে মিউনিখে যখন নাৎসী বাহিনীর উত্থান ঘটলো, তখন হাজার হাজার শিশু নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল রহস্যময় ভাবে। এদেরকে অন্ধকারের শক্তি ‘ভ্রিল’ এর সামনে বলি দেয়া হত, এই বিশ্বাস থেকে যে ভ্রিল এতে সন্তুষ্ট হয়ে নাৎসিদের অপরিসীম ক্ষমতা দিবেন। তাদের এটাও বিশ্বাস ছিল, আর্যদের সারাবিশ্বের উপর নিয়ন্ত্রণ ও অন্য সব জাতি বিশেষত ইহুদীদের নির্মূল করতে একজন জার্মান মুক্তিদাতার আবির্ভাব ঘটবে। থুল সোসাইটি (ভ্রিল সোসাইটির আগে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়) আলফ্রেড রোজেনবার্গ ও দিয়েত্রিচ ইকার্ট এক প্রেতসাধনা আয়োজন করেন। তারা দাবি করেন, অন্ধকারের আত্মা তাদেরকে জানায় যে, সেই জার্মান মুক্তিদাতার নাম হবে ‘হিটলার’, যিনি ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন ও আর্যদেরকে পৃথিবীর বুকে পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করবেন।
সবচেয়ে বীভৎস যে বিষয়টি ছিল, তা হচ্ছে এই ভ্রিল সোসাইটির সদস্যরা বুকে ছুরি বসিয়ে ও শিরশ্ছেদের মাধ্যমে শিশু বলি দিত। ১৯২০ সালের দিকে মিউনিখে যখন নাৎসী বাহিনীর উত্থান ঘটলো, তখন হাজার হাজার শিশু নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল রহস্যময় ভাবে। এদেরকে অন্ধকারের শক্তি ‘ভ্রিল’ এর সামনে বলি দেয়া হত, এই বিশ্বাস থেকে যে ভ্রিল এতে সন্তুষ্ট হয়ে নাৎসিদের অপরিসীম ক্ষমতা দিবেন। তাদের এটাও বিশ্বাস ছিল, আর্যদের সারাবিশ্বের উপর নিয়ন্ত্রণ ও অন্য সব জাতি বিশেষত ইহুদীদের নির্মূল করতে একজন জার্মান মুক্তিদাতার আবির্ভাব ঘটবে। থুল সোসাইটি (ভ্রিল সোসাইটির আগে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়) আলফ্রেড রোজেনবার্গ ও দিয়েত্রিচ ইকার্ট এক প্রেতসাধনা আয়োজন করেন। তারা দাবি করেন, অন্ধকারের আত্মা তাদেরকে জানায় যে, সেই জার্মান মুক্তিদাতার নাম হবে ‘হিটলার’, যিনি ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন ও আর্যদেরকে পৃথিবীর বুকে পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করবেন।
এর কয়েক সপ্তাহ পরেই থুল সোসাইটির সভাতে একজন তেজস্বী ব্যক্তির আগমন ঘটে। তার নাম এডলফ হিটলার! খুব শীঘ্রই হিটলার তার বাগ্মীতা ও ব্যক্তিত্ব দিয়ে সেখানে গুরত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করেন। তিনি এক সাথে অনেক মানুষকে হিস্টিরিয়া আক্রান্ত উপাসনাকারীতে পরিণত করতে পারতেন, সক্ষম ছিলেন এক সাথে অনেক মানুষকে সম্মোহিত করে ফেলতে। তার অনুসারীরা বিশ্বাস করত যে কোন অজ্ঞাত শক্তি তার উপর ভর করেছে ও তার দেহের মাঝ দিয়ে সে শক্তি প্রবাহিত হত। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে একদিকে জার্মান বিজ্ঞানীদের নিত্যনতুন উদ্ভাবন ও আরেকদিকে হিটলারের এই রহস্যময় শক্তির আরাধনা; আজো ব্যাখ্যার বাইরের পরস্পর সম্পর্কহীন ঘটনা।
লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন