প্রজাপতির বাচ্চাকাচ্চা ।। Caterpillar

ক্যাটারপিলার হলো প্রজাপতিদের বাচ্চা। প্রজাপতি দেখতে আমাদের ভালোই লাগে। তাহলে তাদের বাচ্চাদের চেহারা কেমন হবে? প্রজাপতি আমাদের কোনো ক্ষতি না করলেও এদের বাচ্চারা কিন্তু মানুষের যথেষ্টই ক্ষতি করে। কিভাবে? তারা মানুষের বিভিন্ন ফসল খেয়ে তার ক্ষতি করে। তবে যাই করুক না কেনো তাদের সৌন্দর্য্য কিন্তু দেখার মতোই। চলেন তবে আজ আমরা পৃথিবীর সবচে সুন্দর ১০ টি ক্যাটারপিলারের সঙ্গে পরিচিত হই।

স্পার্জ হ্যাওক মথ ক্যাটারপিলার (Spurge Hawk-Moth Caterpillar):


hybridknowledge.info hybridknowledge.info

সুদর্শন সব ক্যাটারপিলারদের দুনিয়াতে মনে হয় সবচেয়ে সুন্দর দেখতে স্পার্জ হ্যাওক মথ ক্যাটারপিলার। এর বাহারী রঙে আকর্ষণ বোধ করাটা খুব আশ্চর্য কিছু না। দারুণ দেখতে এই ক্যাটারপিলারগুলো বাংলাদেশেও দেখা যায়। কালো শরীরের উপরে সাদা ফোটায় এদের দেখতে সত্যি অসাধারণ লাগে।

সেকরোপিয়া মথ ক্যাটারপিলার (Cecropia Moth Caterpillar):


এই ক্যাটারপিলারগুলোর মধ্যে রঙের সমন্বয় সত্যি অবাক করার মতোই। এদের পূর্ণাঙ্গ মথ উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় মথগুলোর একটি। এই ক্যাটারপিলারগুলো পাওয়া যায় সাধারণত ম্যাপল গাছে। তবে এরা বুনো চেরি এবং বার্চ গাছের পাতা খেয়ে থাকে। এদেরকে কানাডাতে দেখা যায়। সবুজ শরীরের উপরে লাল আর হলুদের সমারোহের কারণে সেকরোপিয়া মথ ক্যাটারপিলারকে দেখায় দারুণ সুন্দর।

গোলাপের কাঁটাওয়ালা ক্যাটারপিলার (Stinging Rose Caterpillar):


উজ্জ্বল রঙ ওয়ালা ক্যাটারপিলারদের মধ্যে গোলাপের কাঁটাওয়ালা ক্যটারপিলারের নামটি চলে আসে। এদের সারা গায়ে শিং এর মতো কাটা থাকে। আবার কাটাগুলো ছোট বড়ও হয়। স্টিংগিং রোজ ক্যাটারপিলারদেরকে আপেল, তুলা এবং গোলাপের ঝাড়ে দেখা যায়।

লাল পেয়ে ফুজি উজি ক্যাটারপিলার (Red-Footed Fuzzy-Wuzzy Caterpillar):


আকর্ষণীয় বর্ণের অধিকারী এই ক্যাটারপিলারগুলোর পুরো গায়ে শুঁয়ো কাঁটা থাকে। আর তাদের রয়েছে লাল পা। যখন চলে তাকিয়ে থাকতে হয় পলক না ফেলে! তবে এরা যে ঠিক কোন গোত্রের পোকা, বিজ্ঞানীরা তা এখনও বের করতে পারেননি। এদেরকে দেখা যায় কোস্টারিকাতে ।

আজেলিয়া ক্যাটারপিলার (Azalea Caterpillar):


আজেলিয়া হলো রডোডেনড্রন জাতীয় ফুল। এই আজেলিয়া গাছের মারাত্মক ক্ষতিকারক পোকা হলো আজেলিয়া ক্যাটারপিলার। তবে এগুলোর যখন শুঁয়ো বের হয় তখন ততোটা ক্ষতিকারক থাকে না। হলুদ শরীরের নিচে লাল রঙের কারণে এদেরকে দেখায় অনিন্দ্য সুন্দর।

জিনওয়ালা ক্যাটারপিলার (Saddleback Caterpillar):


ঘোড়ার পিঠে ওঠার জন্য তাকে জিন পরাতে হয়। তারপর সওয়ার হয়ে আপনি চলেন যেদিকে খুশি। আর জিনওয়ালা ক্যাটারপিলারগুলো জন্ম থেকেই পিঠে জিন নিয়ে ঘোরে। কিন্তু আফসোস যে তাদের পিঠে যে সওয়ার হওয়া যায় না। আর দেখতে এই ক্যাটাপিলারগুলোকে লাগে সত্যিই দারুণ।

রহস্যময় টেট্রিও ক্যাটারপিলার (Tetrio Sphinx Caterpillar):


এই ক্যাটারপিলারগুলোকে ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আমেরিকাতে দেখা যায়। টেট্রিও মথের এই ক্যাটারপিলার দেখতেও দারুণ সুন্দর। কালো শরীরের উপরে হলদে ডুরে কাটা এবং তার সঙ্গে কমলা পা অদ্ভুত সুন্দর ভাবে মানিয়ে যায়।

মনার্ক ক্যাটারপিলার (Monarch Caterpillar):


পৃথিবীতে প্রায় সব জায়গাতেই এক ধরনের প্রজাপতি দেখা যায়। এর নাম হলো মনার্ক প্রজাপতি। আর এর ক্যাটারপিলারও কিন্তু পৃথিবীর সবচে সুন্দর ক্যাটারপিলারদের দলে আছে। হলুদ, সাদা আর কালো, এই তিন রঙের ডুরে কাটা মনার্ক ক্যাটারপিলারও দেখতে অনেক সুন্দর।

হিকরি গাছের শিংওয়ালা শয়তান (Hickory Horned Devil):


উত্তর আমেরিকাতে এক ধরনের বাদাম গাছ আছে, এগুলোকে বলা হয় হিকরি গাছ। এই গাছের এক ধরনের মথ হলো রয়াল ওয়ালনাট মথ। এদেরকে অবশ্য রিগাল মথও বলা হয়। এই মথের ক্যাটারপিলারগুলোকে বলা হয় শিংওয়ালা শয়তান। কারণ, এদের মাথার পিছনে শিং এর মতো কাঁটা থাকে। দেখতে প্রায় শিং এর মতোই লাগে। আর তাদের সৌন্দর্য! সেতো আপনার বুঝতেই পারছেন যে এরাও দেখতে দারুণ সুন্দর।

পুরোনো পৃথিবীর সআলোটেইল ক্যাটারপিলার (Old World Swallowtail Caterpillar):


উত্তর আমেরিকাতে আরো এক ধরনের প্রজাপতি দেখতে পাওয়া যায়, যাদের লেজটা মনে হয় দুই ভাগে বিভক্ত। এই প্রজাপতিগুলোর নাম হলো সআলোটেইল, আর এদের বাচ্চারাই হলো সআলোটেইল ক্যাটাপিলার। এই ক্যাটারপিলারদের গায়েও রঙের সমারোহ মুগ্ধ হবার মতোই। সাদা শরীরের উপরে হলুদ আর কালোর উপস্থিতিতে এদেরকে সত্যি সুন্দর দেখায়।

শুনলেন তো এতোক্ষণ সুন্দর যতো ক্যাটারপিলারদের কথা। অনেক সুন্দর প্রাণী বা কীট পতঙ্গ আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে। শুধু দেখে নিতে হবে দু'চোখ ভরে।

লেখকঃ শুভ অংকুর।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।