জার্মান সেনাবাহিনী প্রধানের কথা

উইলহেম বল্ডউইন গুস্তাভ কেইটল (১৮৮২ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ই অক্টোবর ১৯৪৬) হলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একজন জার্মান ফিল্ড মার্শাল। তিনি ছিলেন জার্মান সেনাবাহিনীর ওয়ার্চমুট (সুপ্রিম কমান্ড অব আর্মাড ডিভিশন) এর প্রধান এবং জার্মান ফুয়েরর এডলফ হিটলারের যুদ্ধ মন্ত্রী। তিনি ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার জার্মান সেনাবাহিনীর অন্যতম সিনিয়র অফিসার। যুদ্ধ শেষে মিত্র বাহিনীর সামরিক আদালত নুরেমবার্গে যুদ্ধ অপরাধের দায়ে তার বিচার করা হয় এবং সেখানে তিনি মৃত্যু দন্ডে দন্ডত হন।

প্রথম চাকরি জীবনঃ
কেইটল ২২ সেপ্টেম্বর ১৮৮২ সালে জার্মান সাম্রাজ্যের হেলসচেরডো প্রদেশের বার্নউইক জেলার ব্যাড গ্র্যান্ডস্কিম গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা র্কাল কেইটল ও মাতার নাম এপোলিনা ভিসারিং। কার্ল কেইটল ছিলেন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোক। তার কিছু জমি ছিল এবং সেখানকার আয়েই তার সংসার চলতো। গুটেনগেনে তার শিক্ষা শেষ হবার পর তিনি জার্মান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯০১ সালে তিনি ক্যাডেট অফিসার হিসাবে ষষ্ঠ রৌয়ার স্যাকসন ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টে যোগ দেন।

তিনি ১৯০৯ সালে লিসা ফাউন্টেন নামে এক ভূস্বামীর কন্যাকে বিয়ে করেন। তাদের ৬ সন্তান ছিল। এর মধ্য একজন শৈশবে মারা যায়। তার বড় ছেলে কার্ল হেইঞ্জ কেইটল ওয়েফেন এস এস এর ডিভিশনাল কমান্ডার ছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় উইলহেম কেইটল পশ্চিম ফ্রন্টে ফিল্ড আর্টিলারির ৪৬ নাম্বার রেজিমেন্টের হয়ে যুদ্ধ করেছেন। সেপ্টেম্বর ১৯১৪ সালে তিনি ফ্লেন্ডারসের কাছে যুদ্ধের সময় ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন।

কেইটলকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় এবং ১৯১৫ সালের প্রথম দিকে জার্মান জেনারেল স্টাফ অফিসার হিসাবে যোগ দেন। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শেষে তিনি নতুন করে গঠিত সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী রাইচওয়েরে নিয়োগ পান এবং পোল্যান্ড সীমান্তে ফ্রিকর্পস এলাকার দায়িত্ব পালন করেন। পরে কেইটল ডিভিশনাল জেনারেল স্টাফ অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং এরপর হ্যানোভার ক্যাভলরী স্কুলে দুই বছরের জন্য শিক্ষা গ্রহন করেন।

১৯২৪ সালের শেষের দিকে কেইটল প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ে ট্রুপ অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। তিনি ভার্সাইয়ে জেনারেল স্টাফ অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৩৩ সালে নাৎসিরা জার্মানীর ক্ষমতায় আসলে তিনি সংগঠন বিভাগের প্রধান হন। এর আগে তিনি ১৯৩২ সালে শীতে প্রথমে র্হাট এ্যাটাক এবং পরে নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হন। ১৯৩৫ সালে জেনারেল ওয়ার্নার ভন ফ্রিটচ এর সুপারিশে তিনি মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ভলর্মাখ (জার্মান সেনাবাহিনীর আর্মাড ফোর্স) এ যোগদান করেন। ভালর্মাখের উপর জার্মান সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখার সমস্ত দায়িত্ব ছিল। তিন বাহিনীর সমস্ত কর্মকান্ডের উপরও ভালর্মাখের দায় ছিল।

সুপ্রিম কমান্ড কাউন্সিল ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধঃ
১৯৩৭ সালে কেইটল জেনারেল হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। এবং এর পরের বছর ব্লুমবার্গ ফ্রেটিস ঘটনার পর যুদ্ধ মন্ত্রনালয় থেকে তাকে ভালর্মাখের প্রধান হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয় এবং ভালর্মাখকে সুপ্রিম মিলিটারি অপারেশনের কমান্ডে ন্যস্ত করা হয়। এ্ররপর তিনি জার্মানির যুদ্ধমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং তিনি সেই অনুযায়ি জার্মান সামরিক বাহিনীকে গড়ে তুলেছিলেন। সুপ্রিম কাউন্সিলে তার নিয়োগের কয়েকদিন পরেই ফুয়েরার এডলফ হিটলারের অনুমতি নিয়ে তার বন্ধু ফিল্ড মার্শাল ওয়াল্টার ভন ব্রুন্চিসকে জার্মান সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ হিসাবে নিয়োগ দেন।

যুদ্ধ শুরুর আগমুহূর্তে ১৯৩৮ সালের অক্টোবরে কেইটলকে সুদেনল্যান্ডের সামরিক গর্বনর হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু ১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে তাকে পুনরায় সুপ্রিম মিলিটারি অপারেশনের প্রধান হিসাবে নিয়োগ করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কেইটল পূর্ব ও পশ্চিম রনাঙ্গনে ভালর্মাখের অভিযান পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিলেন। সেই সাথে তিনি এডলফ হিটলারকে ফ্রান্স দখল ও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে পরিচালিত অপারেশন বারবারোসা পরিচালিত না করতে না করেছিলেন। এর প্রেক্ষিতে দুইবারই তিনি হিটলারের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছিলেন। যা কোনবারই হিটলার গ্রহন করেন নি।

১৯৪০ সালে ফ্রান্সে সফল অভিযান করার পর হিটলার কেইটলকে আরো কয়েকজন জার্মান জেনারেলের সাথে তাকে ফিল্ড মার্শাল পদে পদন্বতি দেন, যদিও তিনি কোন অভিযানের কমান্ডার ছিলেন না। ফ্রান্স দখলের পরিকল্পনার জন্য জার্মান সরকার তাকে নাইট ক্রস পদকে ভূষিত করে। জার্মানী যখন ব্রিটেন আক্রমনের পরিকল্পনা করে তখন কেইটল বুঝতে পারেন ব্রিটেন আক্রমনের ফলে জার্মানীর কোন লাভ হবে না। কারন হিসাবে তিনি বুঝতে পারেন ব্রিটেন প্রচুর পরিমানে আমেরিকা থেকে সাহায্য পাচ্ছে যার ফলে ব্রিটেন আক্রমনে জার্মানীর কোন লাভ হবে না।

কেইটল ১৯৪১ সালে এডলফ হিটলারকে পরামর্শ দেন সোভিয়েত ইউনিয়ন আগক্রমন না করতে। সে হিটলারকে বুঝাতে চেষ্টা করে অপারেশন বারবারোসা ব্যর্থ হবে। কিন্তু অপারেশন বারবারোসার প্রাথমিক সাফল্যে কেইটল চাপের মুখে পড়েন। এবং তার অনুরোধ না মানার কারনে স্পষ্ট হয়ে যায় হিটলারই সব নিয়ন্ত্রন করছে, কেইটলের আসলে কোন ক্ষমতাই নেই।

১৯৪২ সালে ফিল্ড মার্শাল উইলহেম লিস্টের ব্যাপারে হিটলার ও কেইটল প্রায় মুখোমুখি অবস্থান নেন। তখন জার্মান সেনাপ্রধান উইলহেম লিস্টের আর্মি গ্রুপ এ ককেশাস অভিযানে ছিল। কেইটল হিটলারকে ফিল্ড মার্শাল উইলহেম লিস্টকে বরখাস্ত করার জন্য অনুরোধ করেন। যা হিটলার প্রত্যাক্ষান করেন। কেইটলের সাথে হিটলারের এই ছিল শেষ মুথোমুখি অবস্থান। এর পর তিনি আর কখনো হিটলারের আদেশের উপর কথা বলার সাহস পান নি। উদাহরন স্বরুপ যুদ্ধের শেষ সময়ে এক ব্রিফিং এর সময় জার্মান বিমান বাহিনী গোয়েন্দা সুত্রে খবর পায় সোভিয়েত বিমানবাহিনীর প্রচুর সংখ্যক বিমান যুদ্ধ ক্ষেত্র অংশ নেবার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এর উত্তরে জার্মান বিমান বাহিনীর প্রধান রাইখ মার্শাল হারমান গোয়েরিং বলেন সোভিয়েতদের এতো বিমান থাকতে পারে না। আর তাকলেও তারা ধ্বংস হবে আমাদের হাতে। এই খবর শুধুমাত্র আমাদের আতংকিত করার জন্য ছড়ানো হয়েছে। সে সময় কেইটল তার মুষ্টি দিয়ে টেবিলে আঘাত করে বলেন যে, “মাই ফুয়েরার, রাইখ মার্শাল একদম সঠিক বলছেন।” যদিও একটু আগেও তিনি গোয়েন্দা তথ্যটি বিশ্বাস করেছিলেন। তার এই চটুকারিতার গল্প জার্মান সেনাবাহিনীতে ভাল ভাবেই প্রচলিত ছিল। আড়ালে তাকে "লেখটেল" (জার্মান শব্দ) মানে পা চাটা কুত্তা নামে ডাকা হতো।

কেইটল সন্দেহাতীত ভাবে হাইনরিখ হিমলারের সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ও জার্মান বাহিনীর দখল কৃত পূর্ব ইউরোপে অত্যাচার নিপরন চালাতে সহায়তা করেছেন।

কেইটল সন্দেহাতীত ভাবে হেনরিক হিমলারকে পূর্ব ইউরোপে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানো ও এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়াতে সহায়তা করেছিলেন। এছাড়া কেইটল যুদ্ধের সময় এমন কিছু নির্দেশ পত্র সাক্ষর করেছিলেন যা যুদ্ধ আইনে গন্য হয় না। তার সাক্ষর করা সবচেয়ে কুখ্যাত আদেশ ছিল কমিসার অর্ডার। এই অর্ডার দ্বারা সোভিয়েত রাজনৈতিকদের সবার সামনে গুলি করে হত্যা করা এবং আরেক টি কুখ্যাত অর্ডার ছিল কুয়াশা (নাইট এন্ড ফগ) ডিক্রি। এই ডিক্রির মাধ্যমে জার্মান অধিকৃত অঞ্চলের প্রতিরোধ যোদ্ধা ও রাজনৈতিক বন্দিদের জার্মান অঞ্চলে গুম করে দেয়া। তার আরেকটি কুখ্যাত আদেশ ছিল নরমেন্ডিতে আটককৃত ফরাসী বিমান বাহিনীর নিমান স্কোয়াড্রেনের পাইলটদের যুদ্ধবন্দি না করে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা।

কেইটল ১৯৪৩ সালে হিটলারের নির্দেশে অপারেশন ক্যাথিড্রলের জন্য জার্মান আর্মি অফিসারদের প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু জার্মান আর্মির ফিল্ড কমান্ডিং অফিসাররা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। কারন স্বল্প সৈন্য ও নতুন ট্যাংকের অভাব এই কারনে এই অপারেশন সফল হবে না বলে তারা মত দেন। কিন্তু হিটলার মনে করতো বিজয় মঞ্চ তৈরি হয়ে আছে।

কেইটল ২০ জুলাই চক্রান্তে ব্যর্থ করে দিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। এই ঘটনার পর কেইটল আর্মি কোর্ট অব অনার গঠন করেন যার দ্বারা যেই সব অফিসার এই চক্রান্তে জড়িত ছিল তাদের বিচার করার জন্য। এই অফিসারদের মাঝে ছিলেন ফিল্ড মার্শাল এরউইন ভন উইটজব্লি, রোল্যান্ড ফ্রেসলে সহ যারা জড়িত ছিলেন।

১৯৪৫ সালের এপ্রিল ও মে মাসে, সোভিয়েত বাহিনী বার্লিনের কাছে চলে আসলে কেইটল জার্মান আর্মিকে নির্দেশ দেন সোভিয়েত বাহিনীর উপর পাল্টা হামলা করে তাদের জার্মান সীমানা থেকে বিতারিত করতে কিন্তু তখন বার্লিনে অবস্থিত জার্মান আর্মিতে এই রকম একটা প্রতি আক্রমনের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সৈন্য ছিল না।

এপ্রিলের ৩০ তারিখে হিটলারের আত্মহত্যার পর কেইটল গ্র্যান্ড এডমিরাল র্কাল ডনৎয এর নেতৃত্বে পরিচালিত স্বল্প স্থায়ী ফ্ল্যান্সবার্গ সরকারের অধিনে থাকেন।

মে ৮, ১৯৪৫, গ্র্যান্ড এডমিরাল র্কাল ডনৎয এর নির্দেশে কেইটল বিনা শর্তে বার্লিনে মিত্র বাহিনীর কাছে আত্ম সমর্পন করেন। যদিও জার্মানরা এক দিন আগেই মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করেছিল। স্ট্যালিনের নির্দেশে দ্বিতীয় আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়।

নাৎসি যোগাযোগঃ
একজন সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসাবে উইলহেম কেইটলের উচিত ছিল কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান না করা। কিন্তু সামরিক আইন ভঙ্গ করে কেইটল নাৎসি পার্টিতে যোগদান করেন। ১৯৪১ সালে ভলর্মাখ যখন রাশিয়ায় ব্যাপক সফলতা পায় তখন নাৎসি নেতা ও তৎকালিন জার্মান ফুয়েরর হিটলার তাকে গোল্ডেন (সম্মানজনক) ব্যাজে ভূষিত করেন। এই ঘটনা ছিল সামরিক সফলতাকে রাজনৈতিক সফলতায় পরিনত করা। ১৯৪৪ সালে জার্মান আইন সংশোধন করার মাধ্যমে সামরিক অফিসারদের নাৎসি পার্টির সদস্য হতে উৎসাহ দেয়া হয়। কেইটল নুরেমবার্গ ট্রায়ালে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন গোল্ডেন ব্যাজ তিনি শুধু আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার্থেই গ্রহন করেছিলেন। তিনি নাৎসি পার্টির পূর্নাঙ্গ সদস্য ছিলেন না। কেইটল ছিলেন নাৎসি পার্টির ইতিহাসে দুই জন মানুষের একজন যারা নাৎসি পার্টির সম্মানিত সদস্যের পদ পেয়েছিল।

কেইটল তার মৃত্যু দন্ড কার্যকর হবার পূর্বে প্রকাশ করেন তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ "ইন দ্য সারভিস অব রাইখ, মেমরি অব ফিল্ড মার্শাল উইলহেম কেইটল"। জার্মান ভাষায় প্রকাশিত এই আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ সংকলনে সহযোগিতা করেন ওয়াল্টার গোৎসে এবং ১৯৬৫ সালে জার্মান থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ডেভিড আরভিং।

বিচার এবং মৃত্যুদন্ডঃ
জার্মান বাহিনীর চারদিন পর উইলহেম কেইটলকে ফ্লুমেন্সবার্গ সরকারের অধিনে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। তিনি অতি দ্রুতই ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ট্রাইবুনালে (আইএমটি) বিচারের সম্মুখিন হন। তির বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ দায়ের করা হয় তা হলো,
  • আঞ্চলিক শান্তি ভঙ্গ।
  • অন্য রাস্ট্রের অভ্যন্তরে সামরিক হস্তক্ষেপ ও দখল।
  • যুদ্ধপরাধ।
  • মানবতা বিরোধী অপরাধ।
উইলহেম কেইটল হিটলারের বহু অবৈধ আদেশ পালন করার অভিযোগে অভিযুক্ত হন (যেমনঃ নাইট এন্ড ফগ ডিক্রি যার দ্বারা সবাইকে বাতিল করার আদেশ দেন) কিন্তু কেইটল যুক্তি দেন যে, তিনি সব সময় তার উপর মহলের আদেশ পালন করেছেন সামরিক আইন মতে। কিন্তু আইএমটি তার সব যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে চারটি অপরাধেই দোষি সাব্যন্ত করে। কারন তিনি বিভিন্ন অর্ডারে সাক্ষর করেন যা ছিল সামরিক আইনে অবৈধ এবং তা ছিল পুরোপুরি অবৈধ নির্দেশ। ফলে তাকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে এমআইটি। উইলহেম কেইটল ফাঁসির পরিবর্তে ফায়ারিং স্কোয়াডে তার মৃত্যু দন্ড কার্যকর করতে এমআইটি কে অনুরোধ করেন। কিন্তু এমআইটি তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। এবং পরে ফাঁসির মাধ্যমে ১৯শে অক্টোবর ১৯৪৬, নুরেমবার্গে তার মৃত্যু দন্ড কার্যকর করা হয়।

সামরিক জীবনঃ
পদন্বতির তারিখঃ
  • জেন্টালম্যান ক্যাডেটঃ ১৪ অক্টোবর ১৯০১
  • সেকেন্ড লেফটেন্যান্টঃ ১৮ আগষ্ট ১৯০২
  • লেফটেন্যান্টঃ ১৮ আগষ্ট ১৯১০
  • ক্যাপ্টেনঃ ৮ আগষ্ট ১৯১৪
  • মেজরঃ ১ জুন ১৯২৩
  • লেফটেন্যান্ট কর্নেলঃ ১ ফেব্রুয়ারী ১৯২৯
  • কর্নেলঃ ১ অক্টোবর ১৯৩১
  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেলঃ ১ এপ্রিল ১৯৩৪
  • মেজর জেনারেলঃ ১ জানুয়ারী ১৯৩৬
  • লেফটেন্যান্ট জেনারেলঃ ১ আগষ্ট ১৯৩৭
  • জেনারেলঃ ১ নভেম্বর ১৯৩৮
  • ফিল্ড মার্শালঃ ১৯ জুলাই ১৯৪০
পদক ও সামরিক পুরস্কারঃ
  • নাইট ক্রস
  • উইনড ব্যাজ
  • প্রুসিয়ান আয়রন ক্রস, প্রথম শ্রেনী(১৯১৪) সাথে ১৯৩৯ বার
  • প্রুসিয়ান আয়রন ক্রস, দ্বিতীয় শ্রেনী(১৯১৪) সাথে ১৯৩৯ বার
  • প্রুসিয়ান রয়াল হেনজলার হাউস অর্ডার
  • নাইট ক্রস উইথ সোর্ড
  • ব্রনসউইক ওয়ার মেরিট ক্রস, ১ম শ্রেনী
  • ব্রনসউইক ওয়ার মেরিট ক্রস, ২য় শ্রেনী; সাথে নির্ভরযোগ্যতার সম্মান
  • সেক্সো আরনেস্ট ডুকাল হাউস অর্ডার
  • নাইট ২য় শ্রেনী উইথ সোর্ড
  • হেস জেনারেল অর্ডার ডেকোরেশন “সাহসীকতার জন্য”
  • ওল্ডেনবার্গ ফ্রেডরিক অগাষ্ট ক্রস, ১ম শ্রেণী
  • ওল্ডেনবার্গ ফ্রেডরিক অগাষ্ট ক্রস. ২য় শ্রেণী সাথে বিশেষ সম্মাননা
  • হামবুর্গ হেনসটাইন ক্রস
  • ব্রেমেইন হেনসটাইন ক্রস
  • ক্রস অব অনার (যুদ্ধে ১৯১৪-১৯১৮)
  • ব্রনসউইক ডুকাল অর্ডার হেনরি দ্য লায়ন, ৪র্থ শ্রেনী
  • আর্মাড ফোর্স লং সার্ভিস এওয়ার্ড, ১ম শ্রেনী (২৫ বছরের সার্ভিস ক্রস)
  • আর্মাড ফোর্স লং সার্ভিস এওয়ার্ড, ৩য় শ্রেনী (১২ বছরের সার্ভিস মেডেল)
  • অস্ট্রিয়ান মিলিটারি মেরিট ক্রস, ৩য় শ্রেনী ক্লাস অব নওয়ার ডেকোরেশন
  • কমমেরেটিভ মেডেল ১৩ মার্চ ১৯৩৮
  • কমমেরেটিভ মেডেল ১ অক্টোবর ১৯৩৮ উইথ কেসল প্রাগ বার
  • কমপারেটিভ মেডেল অব দ্য রির্টান অব দ্য মেমল ডিস্ট্রিক্ট
তার রক্ত ঋণঃ
উইলহেম কেইটল তার মৃত্যুর ৬ সপ্তাহ আগে তার আত্মজীবনী লিখেন। এই আত্ম জীবনী মাত্র কয়েক এডিশন প্রকাশিত হয়েছে।

যখন কেইটলের পরিবার জার্মানী থেকে আমেরিকাও অস্ট্রোলিয়াতে প্রবাসী হয় তখন তারা তাদের নামের পদবী পরিবর্তন করে ফেলে। কেইটল থেকে কেহেটল, কেটল, কেইডাল এবং ফেইটল এভাবে তারা পদবী পরিবর্তন করে ফেলে। কেও তার সাথে পারিবারিক সম্পর্ক বইতে চায় নি।

ফিল্ড মার্শাল উইলহেম কেইটল
পুরো নামঃ উইলহেম বল্ডউইন গুস্তাভ কেইটল
জন্মঃ ২২ সেপ্টেম্বর ১৮৮২, হেলসচেরডো, বার্নউইক, জার্মান সাম্রাজ্য
মৃত্যুঃ ১৯ অক্টোবর ১৯৪৬, নুরেমবার্গ, মিত্র বাহিনী অধিক্রিত জার্মানী
সামরিক জীবনঃ জার্মান সাম্রাজ্য (১৯১৯), ভাইমার প্রজাতন্ত্র (১৯৩৩), নাৎসি জার্মানী (১৯৪৫)
বিভাগঃ ভালমার্খ (জার্মান সেনাবাহিনী)
সামরিক জীবনকালঃ ১৯০১ থেকে ১৯৪৫
পদবীঃ জেনারেল ফিল্ড মার্শাল
দায়িত্বঃ সুপ্রিম কমান্ড কাউন্সিল, অপারেশনস
যুদ্ধে অংশ নিয়েছেনঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
পদকঃ নাইট ক্রস অব দ্য আয়রন ক্রস উইথ ওউনডেড ব্যাজ (২০ জুলাই ১৯৪৪)
গোল্ডেন পার্টি ব্যাজ

লেখকঃ আছিফুর রহমান
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info