বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এবং ব্যবহারকারীদের পছন্দ, ইচ্ছা ইত্যাদিকে বাস্তবে রূপ দিতে বিভিন্ন ডিভাইস কোম্পানি তৈরী করে নতুন নতুন গ্যাজেট, অপারেটিং সিস্টেম ইত্যাদি। অনেক সময় দেখা যায় ফিচারের কমতি, দাম, অন্য পণ্যের বেশী প্রচলনের কারণে কিছু কিছু প্রোডাক্ট মার্কেটে ফেইল করে। তখন কোম্পানিটি বাধ্য হয়ে তাদের প্রোডাক্ট সরিয়ে ফেলেন বা সাপোর্ট বন্ধ করে দেন। আজকের পোস্টে দেখাই গত একদশকের অন্যতম কয়েকটি প্রোডাক্ট যেগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এইচডি ডিভিডিঃ
এইচডি ডিভিডিঃ


ডিভিডির চেয়ে উন্নত ফরম্যাট কি জিজ্ঞাসা করলে প্রায় সবাইই বলবেন ব্লুরে ডিস্কের কথা। আসলে এর মাঝে এইচডি-ডিভিডি নামে একটি টেকনোলজি এসেছিল যা সফল হয়নি। ডিভিডির চেয়ে ভাল কোয়ালিটি ও উন্নত প্লেব্যাক সুবিধা দিতে এই মিডিয়া তৈরী করা হয় যেটা এক্সবক্স৩৬০ সহ বিশেষ প্লেয়ারে চলত। পরে ব্লুরের অনেক বেশী ক্ষমতা ও কোয়ালিটির স্রোতে হারিয়ে গেল এইচডি-ডিভিডি। ২০০৬ এ শুরু করে ২ বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় এইচডি-ডিভিডি।
মাইস্পেসঃ
মাইস্পেসঃ
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট মানে কি বললে সবাই সবার আগেই নাম নেবেন ফেসবুকের। কিন্তু এটা ২০০৫ বা ২০০৭ সালে হলে আপনি নিশ্চয় বন্ধুকে বলতেন “কি? তোর কি মাইস্পেস একাউন্ট আছে?”। প্রথম সামাজিক যোগাযোগ সাইট হিসেবে মাইস্পেস আত্মপ্রকাশ করে ২০০৩ সালে। তারপর ব্যবহারের দিক দিয়ে গুগলকেও ছাড়িয়ে যায় এটি। কিন্তু পরে ফেসবুকের তুলনামূলক সুযোগ সুবিধার কারণে মাইস্পেস ২০০৮ এর পর থেকে মৃতপ্রায়।
নকিয়া এনগেজঃ
নকিয়া এনগেজঃ
মোবাইল গেমিং এক্সপেরিয়েন্স হিসেবে নকিয়ার এনগেজ ছিল ভাল একটি পদক্ষেপ। কিন্তু হাঁক ডাকের চেয়ে ফিচারের দিক দিয়ে নিন্টেন্ডো আর গেমবয় চেপে ধরলো এনগেজকে। তাছাড়াও গেমসের প্রাপ্যতা, খাড়া স্ক্রিণের কারণেও বাজার ধরতে ও টিকে থাকতে ব্যার্থ হয় এনগেজ। ২০০৩ সালে শুরুর পর শেষের দিকে এমন অবস্থা হয়েছিল যে ১টি গেমবয় অবিক্রীত থাকলে সেখানে ১০০টি এনগেজ অবিক্রীত ছিল।
সনি পিএসপি গোঃ
সনি পিএসপি গোঃ
সনির পিএসপি বা প্লে স্টেশন পোর্টেবল খুবই জনপ্রিয় গেমিং ডিভাইস। ২০০৯ এ সনি পিএসপি’র আরো ছোট আল্ট্রা মোবাইল ডিভাইস আকারে বের করে যার নাম পিএসপি গো। তবে গেমস কালেকশন ক্যাটালগ দেখে অনেকে হতাশ হয়। সেই সাথে গেমসের দাম বেশী হওয়াটাও একটি কারণ।
উইন্ডোজ ভিসতাঃ
উইন্ডোজ ভিসতাঃ
এযাবতকালের সবচেয়ে নতুন কিন্তু সবচেয়ে বাজে অপারেটিং সিস্টেম বলা হয় উইন্ডোজ ভিসতাকে। উইন্ডোজ এক্সপির পর এই রিলিজ নিয়ে অনেক আশা ছিল ব্যাবহারকারীদের। কিন্তু দুর্বল সিকিউরিটি, অ্যাপলিকেশন ও ডিভাইস ঠিকমত কাজ না করা, রিসোর্স হাংরি ইত্যাদি কারণে প্রচুর সমালোচনার মুখোমুখী হয় ভিসতা। তবে ভিসতার পরের রিলিজ উইন্ডোজ ৭ বেশ স্ট্যাবল ও দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া ওএস। তাই ভিসতা উইন্ডোজ ৭ এর স্ক্র্যাচ ছিল কিনা তা বলা মুশকিল।
সেগা ড্রিমকাস্টঃ
সেগা ড্রিমকাস্টঃ
পিসির চেয়ে ভাল গেমিং এক্সপেরিয়েন্স পেতে সবাই নিশ্চয়ই প্লেস্টেশন বা এক্সবক্সের কথা বলবেন। সেগা ড্রিমকাস্ট এই দুই প্রতিদ্বন্দীর কারণেই বাজার থেকে হারিয়ে যায়। ১৯৯৮ সালে মার্কেটে আসার পর জনপ্রিয়তা পেলেও গেমস লোড করতে কার্ডের ব্যবহার এবং প্রতিদ্বন্দী পিএস২ ও এক্সবক্সের ডিভিডি ফিচারের কারণে পরে মুখ থুবড়ে পড়ে। ২ বছর পর কোম্পানি এর উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
পাম ফোলিওঃ
পাম ফোলিওঃ
পামটপের কথা জানেন তো? হাতের তালুর সমান বা একটু বড় মিনি কম্পিউটার। মোবাইলফোন ও নোটবুকের মাঝামাঝি জিনিস এইটা। পাম এমন একটি ছোট্ট ডিভাইস তৈরী করে যেটা অনেকটা আসুস ইইই পিসির মতই। আসুস ইইই পিসি কিন্তু সফল একটি প্রোডাক্ট ছিল। মূলত আসুসের কারণেই এটা সাফল্যের মুখ দেখেনি। কমাসের মাঝেই বন্ধ করে দেওয়া হয় এর উৎপাদন।
ডিআরএমঃ
ডিআরএমঃ
ডিআরএম মানে ডিজিটাল রাইট ম্যানেজমেন্ট। ব্যবহারকারীরা যেসব কনটেন্ট ডিজিটাল মিডিয়া হিসেবে কেনে অর্থাৎ অডিও অ্যালবাম, গেমস ইত্যাদিকে কপি প্রোটেক্টেড ও মিডিয়া শেয়ারিং রেস্ট্রিক্ট করতে ডিআরএম প্রযুক্তি আসে ২০০৮ সালে। কিন্তু এতে কোনই উপকার হয়নি। শেয়ারিং ও পাইরেসি তো বন্ধই হলনা, বরং ইলেক্টনিক আর্টস বাধ্য হয় সিকিউর রম বাদে মিডিয়া বিক্রি করতে।
গুগল ওয়েভ ও গুগল বাজঃ
গুগল ওয়েভ ও গুগল বাজঃ
গুগল প্লাসের আগে যে গুগল ওয়েভ আর গুগল বাজ নামের সার্ভিস ছিল সেটা সবারই জানা। ফেসবুকের সাথে প্রতিদ্বন্দীতা করতে ওয়েব জায়ান্ট গুগল বাজ সার্ভিস চালু করে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের জন্য ফিচারের কমতি থাকা ও আরো অনেক কারণে সফল হয়নি এটা। গুগল পরে বাধ্য হয় সার্ভিস গুটিয়ে নিতে।
উইন্ডোজ মিলেনিয়াম এডিশনঃ
উইন্ডোজ মিলেনিয়াম এডিশনঃ
উইন্ডোজ এনটিতে চলে যাওয়ার আগে মাইক্রোসফট শতাব্দীর শেষ উইন্ডোজ রিলিজ করে যেটার নাম উইন্ডোজ এমই। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে রিলিজ পায় এটি। তবে ফিচার, স্ট্যাবলিটি, সিকিউরিটি সবদিক দিয়েই উইন্ডোজ ৯৮ এর কাছে হেরে যায় উইন্ডোজ এমই। পরের ঘটনা তো সবারই জানা।
লেখকঃ মিনহাজুল হক শাওন।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
লেখকঃ মিনহাজুল হক শাওন।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন