১০টি মিথ্যা আমাদের শিখানো হয় (১ম পর্ব) ।। 10 Lies We Were Taught (1st Part)

আমরা স্কুল জীবন থেকেই অনেক কিছু শিখি যে গুলিকে আমরা সারা জীবন সত্য বলে মেনে নিয়েই জীবন পার করে দেই। কিন্তু আমাদের যা শিখানো হয় তার সব কি সত্যি? অবশ্যই সত্যি তা না হলে তা আমাদের পাঠ্য পুস্তকে কি ভাবে ঠাই পেল? তাই না? কিন্তু এখন আপনাদের যা জানাবো তা জানলে হয়ত আপনার সব জানাই মনে হবে মিথ্যে হয়ে গেছে। আর এখন আমি যা বলব তা যদি আপনার বিশ্বাস না হয় তাহলে একটু কষ্টো করে খোঁজ করুন পেয়ে যাবেন আসল সত্য। যা হোক তাহলে চলুন এবার শুরু করা যাক।


০১) মহাশূন্যে কোন অভিকর্ষন বল নেইঃ
যারা যারা বিজ্ঞান বিভাগে পড়েছেন তারা এর সাথে ভাল ভাবেই পরিচিত। আমরা সকলেই স্কুল হতেই শিখেছি যে মহাশূন্যে (Space) কোন অভিকর্ষন বল (Gravity) কাজ করে না। কিন্তু কথাটা কিন্তু একদম ভূল। পৃথিবীর এই অভিকর্ষ বলের কারনেই আমাদের একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ মামা তার নিজ কক্ষপথে ঘুরে বেড়ায়। তা না হলে এত দিন সে পৃথিবী থেকে বহু দূরে অবস্থান নিত। 'কোন বস্তু যখন মুক্ত ভাবে পরতে থাকে তখন তাকে ওজন শুন্য মনে হয়', যারা এই কথাটুকুর মানে বুঝতে পারেন নাই তারা একটু কষ্টো করে Big Bang Theory বইটা পড়ে নিবেন। তাহলেই স্পষ্ট ভাবে বুঝে যাবেন।


০২) হীরা তৈরি হয় কয়লা হতেঃ
আমরা সকলেই কম বেশি এটা শিখেছি যে প্রচন্ড চাপ আর তাপের কারনে কয়লা এক সময় পরিনত হয় হীরাতে। কিন্তু কথাটা কিন্তু একদম ভূল। পৃথিবী তৈরি হবার সময় সে যকল কার্বন এর মধ্যে আটকা পরেছিল মূলত সেগুলি হতেই তৈরি হয় হীরা। বেশীর ভাগ হীরার বয়স আমাদের পৃথিবী ঠান্ডাকালীন বয়সের তুলনায় অনেক বেশি। তাহলে এবার চিন্তা করুন কবে আর কখন তৈরি হয়েছিল এই ডায়মন্ড খন্ড গুলি।


০৩) বৈদ্যুতিক বাতির আবিস্কারকঃ
আমাদের সবাইকে শিখানো হয় যে 'Thomas Edison' বৈদ্যুতিক বাতির আবিস্কারক। কিন্তু কথাটা কিন্তু একদম ভূল। মূলত এডিসন 'Henry Goebel' এর তৈরি করা বাতি কিনে নেন হেনরির বিধবার কাছ থেকে। মূলত প্রথম বাল্ব আবিস্কার করেন জার্মানির এই 'হেনরি গোইবেল'। কিন্তু তার স্থায়িত্ব বেশি সময় ছিল না, কিন্তু বাল্ব তৈরির মূল সূত্র তিনিই আবিস্কার করেন। তার তৈরি বাল্বের আধুনিকায়নের প্রচেষ্টায় তৎকালীন সময়ে সর্বমোট ২২ জন বিজ্ঞানী কাজ করছিলেন, তার মধ্যে এক জন ছিল বিশ্ব বিখ্যাত আবিস্কারক 'Nikola Tesla'।


০৪) নিজের কান নিজেই কেটে ফেলেনঃ
বিশ্ব বিখ্যাত ডাচ আর্টিষ্ট 'Vincent van Gogh'। বিশ্বখ্যাত এই আর্টিষ্ট নিয়ে আমাদের শেখানো হয়, জীবনের শেষ দিকে সে তার মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে এবং যার ফলে সে নিজের কান নিজেই কেটে ফেলে। কথাটা কিন্তু একদম ভূল। কান কেটে ছিল ঠিকই কিন্তু তার বন্ধু আর্টিষ্ট 'Paul Gauguin' এর সাথে তরবারি খেলায় দূর্ঘটনাক্রমে কান কেটে যায়। তবে এই সত্য Vincent van Gogh এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কেউ জানতে পারেন নাই। কোন এক অজ্ঞাত কারনে দু'জনেই এই বিষয়ে চুপ ছিল।


০৫) প্রতিরক্ষায়র কাজেই রঙ বদলায়ঃ
আমাদের পাঠ্যপুস্তক সহ বিভিন্ন ম্যাগাজিন বা পত্রিকায় যেখানেই 'ক্যামেলিয়ান' (এক জাতীয় গিরগিট) নিয়ে কিছু লেখা হয় সেখানেই উঠে আসে এদের রঙ পরিবর্তন করার ক্ষমতার কথা। আসলেই অদ্ভুত এদের গায়ের রঙ পরিবর্তন করার ক্ষমতা। কিন্তু কেন এরা গায়ের রঙ এরকম পরিবর্তন করে? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রায় সব জায়গাতেই উল্লেখ থাকে যে শিকারীর হাত থেকে নিজেদের লুকাতে এরা পারিপার্শিক রঙের সাথে নিজেদের মিলিয়ে ফেলে যাতে এদের সহজে সনাক্ত করা না যায়। কিন্তু রঙ পরিবর্তন করার এই কারন কিন্তু একদম ভূল। এরা মূলত গায়ের রঙ পরিবর্তন করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে অথবা বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষনের জন্য করে, আবার শীতল রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী বিধায় সূর্যের তাপ সহজে গ্রহন করার জন্য এরা নিজেদের গায়ের রঙের পরিবর্তন ঘটায়।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

৯টি মন্তব্য:

  1. অসাধারণ লেখছেন ভাই। অনেক ধন্যবাদ :)

    উত্তরমুছুন
  2. অভিকর্ষের কথাটা সত্যি নয়। মহাকাশের গ্রহ, উপগ্রহ অ তারাদের মাঝে যে আকর্ষণ বল কাজ করে তা অভিকর্ষ নয়, মহাকর্ষ। চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে কারন অন্যান্য গ্রহের/গ্রহানুর তুলনায় চাঁদ ও পৃথিবীর ভর এবং দূরত্বের সুষমতা।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. বাহ অসাধারন বলেছেন, এবার তাহলে একটু চিন্তা করে দেখুন...

      যখন পৃথিবী কোন বস্তুকে কোন বল দ্বারা আকর্ষন করে তখন তাকে বলে অভিকর্ষ আর যখন দু'টি বস্তু পরস্পরকে আকর্ষন করে তখন তাকে বলে মহাকর্ষ। কিন্তু পৃথিবীর এই অভির্ষ বলই মহাকর্ষ বল। যখন পৃথিবির ন্যায় কোন গ্রহ বা উপগ্রহ এর মধ্যকার আকর্ষন বলকে বলা হয় তখন আমরা পৃথিবীর এই অভিকর্ষকেই মহাকর্ষ নামে আক্ষ্যায়িত করি, পারত পক্ষে পৃথিবীর ক্ষেত্রে এই অভিকর্ষ = মহাকর্ষ।

      আর পৃথিবী যে ভাবে চাঁদকে আকর্ষন করে চাঁদও একই ভাবে পৃথিবীকে আকর্ষন করে, এর ফলাফল হচ্ছে আমাদের জোয়ার-ভাটা। আশা করি বুঝতে পারছেন।

      আর চাঁদ কেন পৃথিবীকে ঘুরা শুরু করে তা ব্যাখ্যা করতে গেলে অনেক কিছু বলা লাগবে তা না করে একটু উদাহরন দিয়ে বুঝাবার চেষ্টা করে দেখি, ধরুন একটা ভারি বস্তুকে দড়ি দিয়ে বেঁধে আপনি যদি ঘুরাতে থাকেন তাহলে তা কেন্দ্র থেকে দূরে সরে যাবে, ঠিক একই ভাবে চাঁদও কেন্দ্র অর্থাৎ পৃথিবী থেকে দূরে সরে যেতে চায় বা যাচ্ছে, কিন্তু পৃথিবী এবং চাঁদের পরস্পর আকর্ষনের ফলেই তা অতটা হয় না।

      আশা করি আপনার উত্তরের প্রতি উত্তর যথার্থ দিয়েছি, না বুঝলে অবশ্যই জানাবেন। :)

      মুছুন
  3. উত্তরগুলি
    1. কেন রেফারেন্স 'আমি জানতে চাই' নিজেই...
      কি বিশ্বাস হচ্ছে না...???!!
      একটু ঘেঁটে দেখুন... ইন্টারনেট লাইনতো আছেই... তাই না???

      মুছুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info