সূর্যের পিরামিড


মিশরের পিরামিড সম্পর্কে তো অনেকে অনেক কিছু জানেন। কিন্তু আপনি কি জানেন পিরামিড শুধু মাত্র মিশরে না, মিশর সহ আরো অনেক শহরে আছে। যা হোক আজ আপনাদের অন্যান্য সব পিরামিড না, আজ আপনাদের জানাব ম্যাক্সিকোর পিরামিডের গল্প।

যা হোক চলুন তাহলে এবার মূল লেখায় যাওয়া যাক। আজ আপনাদের জানাবো ম্যাক্সিকোর "সূর্যের পিরামিড" (Pyramid Of The Sun) এর কথা। পৃথিবীর পশ্চিম গোলার্ধে গড়ে ওঠা সর্ব প্রথম এবং সব থেকে বড় শহর ছিল এটি। যদিও এই শহর অনেক বড় ছিল কিন্তু এই শহর কবে এবং কে স্থাপন করেছিল তা এখন পর্যন্ত অজানা। তবে ধারনা করা হয় এই শহর গড়ে ওঠে "এজটেক" জাতীগোষ্টি আসারো হাজার বছর পূর্বে। এই এজটেক জাতীগোষ্টির ভাষার নাম ছিল "নাহহুয়াতল"। এই এজটেক জাতীগোষ্টী নির্দিষ্ট ভবে কবে এসেছিল এই অঞ্চলে তার নির্দিষ্ট প্রমান না পাওয়া গেলেও ধারনা করা হয় "টিয়েডিওয়াকেন" জাতীর পরে এই এজটেক জাতী গোষ্টির উদয় ঘটে। মানে বুঝতেই পারছেন বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন এই অঞ্চলের ইতিহাস। আর টিয়ডয়াকেন জাতীগোষ্টি সম্ভাবত ১০০ বি.সি বিলুপ্ত হয়। যা হোক এই এজটেক জাতী গোষ্টি যে শহর গড়ে তোলে তা মেক্সিকো শহর থেকে ৫০ কিমি দূরে ৮ স্কয়ার মাইল জুড়ে অবস্থিত। আর এই শহতের জনসংখ্যা লক্ষের উপরে ছিল। এই তথ্য গুলি প্রথম তুলে ধরে Arizona State University and a National Geographic Society এর প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।


কে বানিয়েছি?
এই পিরামিডের মোটামটি বাইরের সম্পূর্ন ম্যাপ বর্তমান সময়ে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ভিতর দিকের মাত্র ৫% এখন পর্যন্ত আবিস্কার করা হয়েছে। আর বাদবাকি এখন পর্যন্ত সকলের আড়ালে রয়ে গেছে। অনেক বিজ্ঞদের মতে এই পিরামিড তৈরি করেছিল "টোলটেক" জাতী গোষ্টি। কিন্তু আবার অনেক বিজ্ঞদের মতে এই টোলটেক জাতী গোষ্টি আবার টিয়েডিওয়াকেন জাতী গোষ্টির অনেক পরে এসেছে তাই তাদের পক্ষে এটি আবিস্কার করা সম্ভব না। মানে বুঝতেই পারছেন কেনম রহস্যে ঘেরা এই পিরামিড। এখন পর্যন্ত কেউ সঠিক ভাবে বলতেই পারে নাই কে তৈরি করেছিল এই বিশাল পিরামিড।


বর্তমান সময়ে পৃথিবীর বুকে এমন একটি রহস্যে ঘেরা যায়গা থাকবে আর মানুষ সেটা জানার চেষ্টা করবে না এমন কি হতে পারে? না মোটেও না। এই কারনে "প্রফেসর সাবুরো সুজিয়ামা" যিনি জাপান ইউনিভার্সিটি থেকে এসেছেন আর "রুবেন কাবরেরা" যিনি ম্যাক্সিকান প্রত্নতত্ত্ববিদ এই দুজনে মিলে এই পিরেমিডে সর্বশেষ খোঁজাখুজি করেন আর আবিস্কার করেন অনেক নতুন নতুন তথ্য।

এই পিরামিডের ১ম তলার নিচে কাঁদা মাটি আর পাথরের স্তরের নিচে কিছু রুম পাওয়া যাওয়া যায়। আর এই রুম গুলির দেওয়াল লিখন আর ডিজাইন দেখে মনে হয় যেন তা টিয়েডিওয়াকেন জাতী গোষ্টির বানানো। কেননা এখানে দেবতাদের উদ্দেশ্যে পশু ও নর বলি দেবার জায়গা রয়েছে। যা টিয়েডিওয়াকেন জাতীদের একটি ধর্মীয় দিক। মানে এক কথায় বললে বলতে হয় এখানে টিয়েডিওয়াকেনদের একটা মন্দির পাওয়া গেছে। আর এই মন্দিরে আরেকটু খোজাখুজি করার পর কি পাওয়া গেছে জানেন? স্তুপ করে রাখা মানুষের মাথার খুলি। এই সব মানুষকে বলি দেওয়া হয়েছিল দেবতাদের উদ্দেশ্যে।

কি মনে হচ্ছে টিয়েডিওয়াকেন জাতী গোষ্টি বানিয়েছিল এই পিরামিড। না এখনো তা নিঃসন্দেহে বলা সম্ভব না কেননা ঐ যে বললাম মাত্র ৫% আবিস্কার হয়েছে।

কে বানিয়েছিল আর কেন বানিয়েছিল তা অনিশ্চিত থাকলেও এটি যা মানুষের তৈরি এক অসম্ভব সুন্দর স্থাপনা তা বলার নিষচই অপেক্ষা রাখে না। যা হোক অনেক কঠিন কঠিন জাতী গোষ্টির নাম দিয়ে এই পিরামিডের কিছু তথ্য জানাতো হয়ে গেল তাহলে আসুন এবার তাহলে দেখে নেওয়া যাক এই পিরামিডের সুন্দর সুন্দর কিছু ছবি।


গুগল ম্যাপে সূর্যের পিরামিড,



লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info