একটি পরমাণু আসলে কতটুকু ছোট?

আমরা সবাই জানি মহাবিশ্বের প্রত্যেকটি বস্তুই পরমাণু দ্বারা গঠিত এবং এটি আকারে অনেক ছোট। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে একটা পরমাণু আসলে কতটুকু ছোট?

ব্যাপারটা বোঝার জন্যে প্রথমে একটা “জাম্বুরা” সাইজের বস্তু কল্পনা করুন। একটা জাম্বুরাতে হাজার হাজার বিভিন্ন ধরণের অনু থাকে। অণু গুলো বিভিন্ন রকমের পরমাণু দ্বারা গঠিত। পরমাণু গুলোর মধ্যে অন্যতম একটা পরমাণু হচ্ছে নাইট্রোজেন।


ধরুন, একটি জাম্বুরার প্রতিটি নাইট্রোজেন পরমানুকে যে কোন ভাবে বড় করে Blueberry এর আকারের সমান করা হল। তাহলে এখন ভেবে দেখুন ওই জাম্বুরা সাইজে কত বড়হবে?

আপনি জেনে অবাক হবেন প্রতিটি নাইট্রোজেন পরমানুকে শুধুমাত্র Blueberry এর আকার হিসেবে ধরলে পুরো জাম্বুরার আকার হবে প্রায় পৃথিবীর সমান।

তাহলে এবার ভেবে দেখুন পরমাণু আসলে কত ছোট!!!


ব্যাপারটা আরও মজার লাগবে যখন আপনি চিন্তা করবেন যে পরমানু যদি এতোই ছোট হয় তাহলে পরমানুর নিউক্লিয়াস কত বড়!

আমরা সবাই জানি প্রতিটি পরমাণু প্রধানত তিনটি মৌলিক পদার্থ ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন নিয়ে গঠিত। প্রোটন এবং নিউট্রন একসাথে পরমানুর কেন্দ্রে থাকে যাকে বলা হয় নিউক্লিয়াস এবং নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরে ইলেকট্রন। এখন চলুন হিসেব করে দেখা যাক পরমানুর নিউক্লিয়াস কত বড়।

পরমানুকে একটু আগে আমরা Blueberry এর সমান ধরেছি। আসুন এবার এর ভেতরে নিউক্লিয়াস খুঁজে দেখি। একটি পরমাণু যদি Blueberry এর সমান হয়, তাহলে খালি চোখে আমরা পরমানুর নিউক্লিয়াস দেখতে পাবোনা। নিউক্লিয়াসকে খালি চোখে দেখার জন্যে আমাদের Blueberry টাকে বড় করতে হবে।

কত বড়? একটা ফুটবল?
না।

একটা দোতলা বাড়ি?
না।

এটাকে একটা ফুটবল স্টেডিয়ামের সমান বড় করতে হবে!

হ্যা এবার নিউক্লিয়াসকে খালি চোখে দেখা যাবে, যার আকার হবে একটা মার্বেলের সমান!

তাহলে এবার প্রশ্ন হচ্ছে, একটি পরমানুর নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন যদি স্টেডিয়ামের শেষে ঘুরপাক খায় তাহলে নিউক্লিয়াস এবং ইলেকট্রনের মাঝখানের এই বিশাল স্থানে কি থাকে?

মজার ব্যাপার হচ্ছে যে এই বিশাল পরিমান স্থানপুরোটাই ফাঁকা বা শূন্য, অর্থাৎ এখানে কিছুই নেই, পুরোটাই ফাঁকা। তবে এখানে কিছুইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড আছে।

কি অবাক হচ্ছেন? অবাক হবার মতো কিছুই বলিনি এখনো....


কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে নিউক্লিয়াসের ঘনত্বকেমন?

এবার সবচেয়ে মজার ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করবো। কিন্তু তার আগে কিছু মৌলিক বিষয় সম্পর্কে জেনে নেয়া দরকার। নিউক্লিয়াস মূলত প্রোটনএবং নিউট্রন নিয়ে গঠিত। নিউট্রন এবং প্রোটনের ভার প্রায় সমান। ইলেকট্রনের ভর এতোটাই সামান্য যে ধরে নেয়া যায় পরমানুর প্রায় সম্পূর্ণ ভরই থাকে নিউক্লিয়াসে।


যাইহোক, নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব হচ্ছে 1017KG/M3 অর্থাৎ, প্রতি ঘনমিটারে এর ভর হচ্ছে 400000000000000000 কেজি!!!

এবার হয়তো ভাবছেন যে লেখকের মাথা খারাপ হয়েগেছে নিশ্চয়ই!

না ভাই, আমার মাথা খারাপ হয়নি। এটাই সত্যি।

লেখকঃ উদীয়মান সূর্য।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info