যেসকল প্রানী দীর্ঘদিন বাঁচে

এই পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকা কিছু কিছু প্রানীর জীবন কাল শুনলে হয়ত আমরা অনেকটা ভিমড়ি খাব। আমাদের গড় আয়ু যেখানে মাত্র ৬০ বছর, সেখানে অন্যান্য প্রানীরা কিনা শত শত বছর বেঁচে থাকে!! কি আর করবেন?? আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন আমাদের এই ভাবে। যা হোক আজ আপনাদের জানাবো পৃথিবীর বুকে যে সকল প্রানী অনেক দিন বেঁচে থাকে তাদের কথা।

তবে যারা যারা মানুষের গড় আয়ু মাত্র ৬০ বছর শুনে মন খারাপ করে আছেন, তাদের মন একটু ভাল করে দেই। আচ্ছা আপনাদের "পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি" লেখাটির কথা মনে আছে? যেখানে "চিং ইউন" এর কথা বলা হয়েছিল। যিনি কিনা ২৬৫ বছর বেঁচে ছিলেন বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। যদিও সেটি সম্পূর্ন ভাবে প্রমানিত না। কিন্তু একজন আছেন যাকে নির্ভেজাল ভাবে সর্বাধিক দীর্ঘ আয়ুর মানুষ বলা যায়।


আর তিনি হলেন ফ্রান্সের নাগরিক "জেনি ক্যালমেন্ট"। বর্তমান সময়ে প্রমান হয়েছে যে তিনি ১২২ বছর ১৬৪ দিন পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। তার জন্ম হয় ২১ফেব্রুয়ারি ১৮৭৫ সালে আর মারা যান ৪র্থ আগষ্ট ১৯৯৭ সালে। আর তিনি ১ম আর ২য় বিশ্ব যুদ্ধ দু'টির সময়েই জীবিত ছিলেন, এছাড়াও তিনি দেখেন চাঁদে মানুষের প্রথম অবতরন আর ইন্টারনেটের জন্ম। না জানি আরো কত কিছুর সাক্ষি ছিলেন তিনি।

যা হোক মানুষ যে আসলেই অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে শুনে নিশ্চই মন একটু হলেও ভাল হয়েছে। তাহলে আসুন এবার মূল গল্পে ফিরে যাওয়া যাক। এখন আপনাদের ১০টি প্রানীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিব যাদের জীবন কাল সত্যিকার অর্থে অবাক করার মত।

০১) Ocean Quohog:


Ocean Quohog নামক এই সামুদ্রিক প্রানীর আবাস স্থান হিসেবে পরিচিত উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর। এই শামুক প্রজাতির প্রানীকে আবার বানিজ্যিক ভাবেও চাষ করা হয় কেননা অনেকে কাছে এটি একটি সুস্বাদু খাবার। এই Ocean Quohog আবার ভিন্ন ভিন্ন নাম আছে স্থান ভেদে। যেমনঃ Icelandic cyprine, mahogany clam, mahogany quahog, black quahog, and black clam ইত্যাদি। Ocean Quohog এর বসবাস সমুদ্রের পানির ২৫ ফুট থেকে ১৩০০ ফুট জল গভীরে।

আর এই Ocean Quohog এর জীবন কাল নিয়ে কিছুটা ভিন্ন মত আছে, Paul G. Butler et al এর মতে এরা বাঁচে ৫০৭ বছর আর Schone et al এর মতে এরা বাঁচে ৩৭৫ বছর। সে যেটাই হোক নিহাতই কম না।

০২) Bowhead Whales:


Bowhead Whales এই তিমি মাছকে বলা হয় পৃথিবীর সব থেকে দীর্ঘ জীবি স্তন্নপায়ী প্রানি। আর এরা লম্বায় ৬৬ ফুট আর পুর্ন বয়স্ক Bowhead Whales এর ওজন হয় ৭৫ টন থেকে ১০০ টনের মধ্যে। সভাবের দিক থেকে এরা আবার একটু ভিন্ন অন্যান্ন তিমি মাছদের তুলনায়। অন্যান্ন তিমি মাছ যেখানে বাচ্চার জন্ম দেওয়ার জন্য গভীর স্থান বেছেন নেয় সেখানে এরা পানির উপরি ভাগেই সন্তান জন্ম দেয়। আরেকটা কথা এই তিমি মাছ যেহেতু গভীর সমুদ্র পছন্দো করে না তাই এরা বেশির ভাগ সময়ে পানির উপরি ভাগেই থাকে, আর এই কারনে এরা খুব সহজেই তিমি শিকারিদের হাতে নিহত হয়। আর বর্তমানে এদের সংখ্যা এতটাই কমে গেছে যে বিলুপ্ত প্রায় প্রানীতে পরিনত হয়েছে।

এই Bowhead Whales মাছ বেঁচে থাকে গড়ে ২১১ বছর। তিমি মাছের বয়স আবার নির্ধারন করার জন্য ছোট একটা পরীক্ষা আছে। এদেরর চোখের ভিতরকার aspartic acid এর মাধ্যমে নির্ধারন করা হয় যা ১৬% সঠিক হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই বলা যায় ২১১ বছর বয়সি একটি Bowhead Whales এর আসল বয়স ১৭৭-২৪৫ বছরের মধ্যে। আর তাই এই Bowhead Whales কে বলা হয় সব থেকে দীর্ঘ জীবি স্তন্নপায়ি প্রানি।

০৩) স্বাদু পানির ঝিনুকঃ


স্বাদু পানির এই ঝিনুকের বৈজ্ঞানিক নাম Margaritifera margaritifera, একটি বিলুপ্ত প্রায় ঝিনুক প্রজাতি। এই প্রজাতির ঝিনুক খুব ভাল মানের মুক্তা তৈরি করার জন্য বিখ্যাত। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে এই প্রজাতির শামুক মানুষ প্রতিনিয়ত নিধন করেছে মুক্তা পাওয়ার আশায়। কিন্তু সেই হারে এদের বং বৃদ্ধি ঘটে নাই। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ান সামদ্রিক প্রানিবিদ Valeriy Ziuganov আবিস্কার করেন যে এই মুক্তা তৈরিকারি শামুকের জীবনকাল অনেক দীর্ঘ হয় আর তা ২১০-২৫০ বছরের মধ্যে।

০৪) লাক কাঁটাওয়ালা সামদ্রিক সজারুঃ


লাল কাঁটাওয়ালা এই সামদ্রিক সজারুর বৈজ্ঞানিক নাম Strongylocentrotus franciscanus। যদিও এরা বেশীর ভাগ লাল রঙের হয়ে থাকে তারপরেও গোলাপি অথবা কমলা বা কালো রঙেরও হয়ে থাকে এরা। এই প্রানী গুলির খোঁজ মিলে প্যাসিফিক সমুদ্রে, আলাস্কা থেকে ক্যালিফোনিয়া সীমান্তের মধ্যে। এরা অনেকটা অগভীর অঞ্চলে বসবাস করে। সাধারনত ৩০০ ফুট গভীরতায়। আর এদের সাধারনত দেখা মেলে পাথরে সৈকতের কাছাকাছি যেখানে প্রচুর প্ররিমানে সামুদ্রিক ঢেয় থাকে।

এই সামুদ্রিক সজারু গুলির সারা গা কাঁটা দ্বারা আবৃত থাকে যা ৮ সেমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। আর এই কাঁটা গুলি গজায় এই প্রানিকে আবৃত করে রাখা শক্তো খোলসের উপর। এই খলসের নাম দেওয়া হয়েছে "টেষ্ট"। একটু বয়স্ক এই সামুদ্রিক সজারু গুলির ব্যাস ১৯ সেমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

Department of Zoology at Oregon State University এর Thomas A. Ebert এর গবেষনা অনুযায়ি ব্রিটিশ, ক্যানাডা ও কলম্বিয়া অঞ্চলের এই লাল কাঁটাওয়ালা সামুদ্রিক সজারু ২০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

০৫) "এডওয়াটা" দৈত্য আকৃতির কচ্ছপঃ


এডওয়াটা যার মানে হল "এক এবং একমাত্র"। উপরে যে কচ্ছপটির ছবি দেখছেন এটি পুরুষ প্রজাতির এডওয়াটা জাতের কচ্ছপ আর এটির জন্ম হয়েছিল ১৭৫০ সালে আর মৃত্যুবরন করে ২৩ই মার্চ ২০০৬ সালে, আর এর ওজন ছিল ২৫০ কেজি। এটির বাসস্থান ছিল ইন্ডিয়ার কলকাতার আলীপুরের প্রানীবিদ্যা বিষয়ক গবেষনা কেন্দ্রে। বলা হয় এটি কচ্ছপের মধ্যে সব থেকে দীর্ঘ জীবি।

BBC এর রিপোর্ট অনুযায়ি এই কচ্ছপ ইষ্ট ইন্ডিয়া কম্পানির ব্রিটিশ জেনারেল Robert Clive এর পোষা কচ্ছপ ছিল। তার কাছ থেকেই ১৩০ বছর আগে এই কচ্ছপটিকে আলীপুরে আনা হয়।

০৬) কোই মাছঃ


কোই নাম শুনে নিশ্চই আমাদের দেশের কৈ এর কথা মনে পরে গেছে। না সেরকম কিছু না, এই কোই নাম দিয়েছে জাপানিরা। এই কোই মাছ সাধারনত বাড়ির বাইরে ছোট খাট জলাশয়ে পোষা হয় বাড়ির সৈন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। কেননা এদের দেহে থাকে না রঙের রঙ,যার মধ্যে মূলত সাদা, কালো, লাল, হলুদ, নীল আর ক্রিম রঙের হয়।

এই মাছ গুলির বয়স নির্ধারন করা হয় ঠিক একই ভাবে যে ভাবে একটা গাছের বয়স নির্ধারন করা হয়। একটা গাছের গুড়ির দাগ গুনে যেমন এর বয়স বোঝা যায় তেমনি এই মাছে গায়ের দাগ গুনে এর বয়স নির্ধারন করা যায়। প্রতি এক বছর অন্তর অন্তর এর গায়ে একটা করে রিঙয়ের মত দাগ ওটে। আর এই দাগ গুনেই এর বয়স বোঝা যায়।

আর এই পদ্ধতি অবলম্বন করে এই প্রজাতির মধ্যে "হ্যানাকো" মাছের বয়স বের করা হয়। এই "হ্যানাকো" শব্দের মানে হল ফুলের সাথি। আর দাগ গুনে সব থেকে বয়স্ক কোই মাছ খুঁজে বের করা হয় যা ৭ই জুলাই ১৯৭৭ সালে মারা যায়। আর মারা যাওয়ার আগে তার বয়স হয়েছিল ২২৬ বছর।

০৭) The Geoduck:


The Geoduck বিশাল আকৃতির শামুক প্রজাতি যার আরেক নাম Panopea generosa, এটা লবনাক্ত পানির শামুক প্রজাতির আর Hiatellidae প্রজাতির অন্তরভূক্ত। এদের প্রচলিত নাম Geoduck নেওয়া হয়েছে আমেরিকার আঞ্চলিক নাম থেকে যার অর্থ "dig deep" কিন্তু উচ্চারন ভেদে একে অনেকে "gooey duck" নামেও ডেকে থাকে। এই প্রজাতির শামুকের খোঁজ মেলে আমেরিকার পশ্চিমের সমূদ্র অঞ্চলে। মূলর ওশিংটন এবং ব্রিটিশ কলম্বিয়া অঞ্চলে এদের দেখতে পাওয়া যায় মূলত। এদের দেহ লম্বায় ১ মিটার পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় ৩ ফুটের মত হয়। এই Geoduck যেমন শামুক প্রজাতি গুলির মধ্যে সব থেকে বড় হয় তেমনি প্রানী জগতের মধ্যে সব থেকে দীর্ঘ জীবি প্রানিদের মধ্যে একটি।

১৯৭০ সালের আগে এদের কেউ শিকার করত না, কিন্তু এশিয়া অঞ্চলে এই শামুকের খাবার হিসেবে চাহিদা থাকায় এখন এর শিকার শুরু হয়েছে, তবে একই ভাবে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে এদের চাষাবাদও শুরু হয়েছে। তারপরেও এই শামুকের চাহিদার তুলনায় চাষ অনেক কম হয়। এশিয়ার বাজারে এই শামুকের অনেক মূল্য থাকায় এই অবস্থা হয়েছে বলে অনেকের ধারন।

বিজ্ঞানি J.M. (Lobo) Orensanz et al এর মতে এই শামুক ১৬৮ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

০৮)Sturgeon Fish:


মাছের গায়ে কাঁটা থাকে এটা স্বাভাবিক, কিন্তু এমন অনেক মাছ আছে যাদের শরীরে কাঁটার বদলে থাকে আমাদের মত হাড়। তবে সে হার আমাদের মত এত শক্ত না অনেকটা আমাদের নাকের হাড়ের মত। যা হোক, Sturgeon Fish হচ্ছে এরকম হাড়ওয়ালা মাছদের মধ্যে সব থেকে পুরাতন প্রজাতি বলে ধারনা করা হয়। এই মাছের বসবাস ইউরেসিয়া এবং উত্তর আমেরিকার জলাশয়ে। এই মাছ Acipenseridae প্রজাতির অন্তরগত। এই মাছ লম্বায় ৭-১২ ফিট হয় তবে ১৮ ফুট লম্বা পর্যন্ত লম্বা Sturgeon Fish পাওয়া যায়। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে, Wisconsin state Department of Natural Resources একটি ১২৫ বছর বয়স্ক Sturgeon Fish খুঁজে পায়, যা লম্বায় ৭ ফিট ৩ ইঞ্চি ছিল এবং ওজন ছিল ২৪০ পাউন্ড। Sturgeon Fish এর মধ্যে এটি ছিল খোঁজ পাওয়া সব থেকে বয়স্ক Sturgeon Fish।

০৯) Orange Roughy:


Orange Roughy নামের এই মাছ Trachichthyidae প্রজাতির অন্তরগত। এই মাছ গভীর সমুদ্রে পাওয়া যায়। প্রায় ৫৯০ থেকে ৫৯০০ ফুট গভীর পানিতে। পশ্চিম প্যাসিফিক সমুদ্র, পূর্ন এটলান্টিক সমুদ্র, ইন্দো-প্যাসিফিক সমুদ্র এবং চিলির পুর্ব প্যাসিফিক সমুদ্রে এদের পাওয়া যায়। এই মাছ গুলির রঙ সাধারনত উজ্জ্বল ইট রঙয়ের হয়ে থাকে আর মারা গেলে এর রঙ অনেকটা কমলা অথবা হলুদ রঙয়ের হয়ে যায়।

G.E. Fenton et al এর মতে এই মাছ ১৪৯ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে, আর তিনি এটি নির্ধারন করেছেন এই মাছের কানের ফুটার মধ্যে পাওয়া আইসোটপ, রেডিওমেট্রিক ডেটিং এর মধ্যমে।

১০) Lamellibrachia luymesi:


Lamellibrachia luymesi হল কৃমি প্রজাতির প্রানী। বৈজ্ঞানিক ভাবে এরা Siboglinidae গোত্রের। এরা সমুদ্রের অন্ধোকার শীতল পানিতে বসবাস করে যেখানে হাইড্রোকার্বন (খনিজ তেল) সমুদ্রের তল থেকে সব সমইয় বের হতে থাকে। এই Lamellibrachia luymesi সব থেকে বেশী পাওয়া যায় মেক্সিকোর উত্তরের উপ-সাগর অঞ্চলে, আর তা ৫০০ থেকে ৮০০ মিটার গভিরতায়। এই টিউব আকৃতি Lamellibrachia luymesi লম্বায় ১০ ফিট পর্যন্ত হতে পার। এরা অনেক ধীরে ধীরে বড় হয়। Sharmishtha Dattagupta et al এর গবেষনা মতে এই Lamellibrachia luymesi এর জীবন কাল ১৭০ বছর পর্যন্ত।

জেনে গেলেনতো বিশ্বের সব থেকে দীর্ঘজীবি ১০ প্রানির নাম। কি ভাবছেন মানুষ আসলেই কত কম দিন এই ধরনীর বুকে থাকে। জানেন এখন আমার হুমায়ন আহমেদ সারের একটা কথা খুব বেশি মনে পরছে, "মানুষ অনেক কম দিন পৃথিবীতে বাঁচে, যেখানে একটা কচ্ছপ বেঁচে থাকে ২০০ বছর পর্যন্ত"।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info