পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রাচীন ধর্ম, সমাজ আর হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি সভ্যতার বিরাট একটা অংশ জুড়ে আছে পৃথিবীর সৃষ্টি আর লয়ের রহস্য। কোথা থেকে আসলো সবকিছু, আর কোথায় বা এর শেষ? মানবজাতির ইতিহাসে জন্ম নেয়া প্রতিটি বড় বড় দার্শনিক, ধর্মগুরু আর বিজ্ঞানীকেই মুখোমুখি হতে হয়েছে এই প্রশ্নের। আজকের পদার্থবিজ্ঞানীরা যেভাবে স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি দাড় করাচ্ছেন প্রাচীনযুগেও এই অবস্থাটা মানে এসব ব্যাপারে মানুষের কৌতূহলের মাত্রা একই রকম ছিলো, আর তার নিদর্শন আমরা পাই সেসময় রচিত পুস্তক অথবা শিলালিপিসমূহে।
প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে মায়া আর সুমেরিয়ান সভ্যতা জ্ঞান বিজ্ঞানে বেশ অগ্রসর ছিলো। বিশেষ করে জ্যোতির্বিজ্ঞানে তারা কিভাবে এতোটা অগ্রসর হলো এখনকার ইতিহাসবিদদের কাছেও সে এক বিশাল প্রহেলিকা। এমনকি আমরা এখন যেটাকে সৌরজগত বলি, তার একটা প্রাথমিক চিত্র পাওয়া গেছে সুমেরিয়ান একটা শিলালিপিতে। সেখানে দেখা গেছে বারোটি গ্রহ নিয়ে সূর্যের পরিবার। বড় বড় টেলিস্কোপ নিয়েও সৌরজগত নিয়ে আমাদের বর্তমান মডেল তৈরিতে অনেক সময় নিতে হয়েছে। সামান্য আতসী কাঁচ বা হয়তো অনুন্নত প্রযুক্তির দূরবীন দিয়ে কিভাবে যে তারা টের পেয়েছিলো সৌরজগতের গড়ন সম্পর্কে, কে জানে!
যে শিলালিপির কথা একটু আগে বললাম, সেটা যে শুধু ইতিহাসবিদ না বিজ্ঞানীদের শুধু মুগ্ধ করেছে তা নয়, বরং জন্ম দিয়েছে অনেক রহস্য আর মিথের। তার মধ্যে একটি হলো নিবিরু বা প্ল্যানেট এক্স। এই নিয়ে এখন আমরা যে মিথটা শুনি তা যুগের প্রয়োজনে অনেকটাই পরিবর্তিত হয়েছে। এই রহস্যগুলো ভেদ করতে হলে আগে আমাদের সুমেরীয়দের ধর্ম বিশ্বাস সম্পর্কে কিছু কথা জানতে হবে।
প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে মায়া আর সুমেরিয়ান সভ্যতা জ্ঞান বিজ্ঞানে বেশ অগ্রসর ছিলো। বিশেষ করে জ্যোতির্বিজ্ঞানে তারা কিভাবে এতোটা অগ্রসর হলো এখনকার ইতিহাসবিদদের কাছেও সে এক বিশাল প্রহেলিকা। এমনকি আমরা এখন যেটাকে সৌরজগত বলি, তার একটা প্রাথমিক চিত্র পাওয়া গেছে সুমেরিয়ান একটা শিলালিপিতে। সেখানে দেখা গেছে বারোটি গ্রহ নিয়ে সূর্যের পরিবার। বড় বড় টেলিস্কোপ নিয়েও সৌরজগত নিয়ে আমাদের বর্তমান মডেল তৈরিতে অনেক সময় নিতে হয়েছে। সামান্য আতসী কাঁচ বা হয়তো অনুন্নত প্রযুক্তির দূরবীন দিয়ে কিভাবে যে তারা টের পেয়েছিলো সৌরজগতের গড়ন সম্পর্কে, কে জানে!
যে শিলালিপির কথা একটু আগে বললাম, সেটা যে শুধু ইতিহাসবিদ না বিজ্ঞানীদের শুধু মুগ্ধ করেছে তা নয়, বরং জন্ম দিয়েছে অনেক রহস্য আর মিথের। তার মধ্যে একটি হলো নিবিরু বা প্ল্যানেট এক্স। এই নিয়ে এখন আমরা যে মিথটা শুনি তা যুগের প্রয়োজনে অনেকটাই পরিবর্তিত হয়েছে। এই রহস্যগুলো ভেদ করতে হলে আগে আমাদের সুমেরীয়দের ধর্ম বিশ্বাস সম্পর্কে কিছু কথা জানতে হবে।
সুমেরীয়দের এসব শিলালিপি জন্ম দিয়েছে নানা রহস্যের। |
বর্তমান ইরাকের দজলা ফোরাত নদীর তীরে গড়ে উঠা সুমের সভ্যতার মানুষদের বিশ্বাস ছিলো এই বিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে তিয়ামাত আর মারদুক নামের দুইজন ঈশ্বরের দ্বন্দ্বযুদ্ধ থেকে। যুদ্ধে তিয়ামাত পরাজিত হন, এবং মারদুক তাকে খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত করে এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করেন। এছাড়া সুমেররা উপাসনা করতো আনুনাকি নামের এক দেবতার, যে নাকি তাদের মাঝেই আবির্ভূত হয়েছিলো, মানবজাতিকে দিক নির্দেশনা দিতে। এখনকার সময়ে অনেকেই ধারণা করেন সুমেরীয়দের জ্ঞান বিজ্ঞানে অগ্রসর হওয়ার পেছনে এই আনুনাকির অবদান আছে, কারণ সেই যুগে মানুষের পক্ষে কখনোই বহির্জগত নিয়ে এতসব জানা সম্ভব ছিলো না।
এছাড়া মূল যে কারণে সব বিতর্কের উৎপত্তি, সেটা হলো সুমেরীয়দের সৌরজগতের মডেল। যেখানে সমস্ত গ্রহকে সুসজ্জিত করে দেখানো হয়েছে, বিশেষ করে পৃথিবী, বৃহস্পতি আর শনির অবস্থান একেবারে জায়গা মতো রাখা আছে। কিন্তু মূল খটকা এর পরের অংশে, তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী সৌরজগত নয়টি নয়, বরং বারোটি গ্রহ নিয়ে তৈরি। চাঁদ আর অন্যান্য সব কিছুই আমাদের পরিচিত হলেও বারো তম গ্রহটি ধারণ করে আছে সমস্ত রহস্যকে, সুমেরদের ভাষায় এই গ্রহটিকে বলা হতো নিবিরু।
এছাড়া মূল যে কারণে সব বিতর্কের উৎপত্তি, সেটা হলো সুমেরীয়দের সৌরজগতের মডেল। যেখানে সমস্ত গ্রহকে সুসজ্জিত করে দেখানো হয়েছে, বিশেষ করে পৃথিবী, বৃহস্পতি আর শনির অবস্থান একেবারে জায়গা মতো রাখা আছে। কিন্তু মূল খটকা এর পরের অংশে, তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী সৌরজগত নয়টি নয়, বরং বারোটি গ্রহ নিয়ে তৈরি। চাঁদ আর অন্যান্য সব কিছুই আমাদের পরিচিত হলেও বারো তম গ্রহটি ধারণ করে আছে সমস্ত রহস্যকে, সুমেরদের ভাষায় এই গ্রহটিকে বলা হতো নিবিরু।
সুমেরীয় ধারণা মতে ৩৫০০ বছর পর পর পৃথিবীতে ফিরে ফিরে আসে নিবিরু নামের এই গ্রহটি। |
এই নিবিরুকে বর্তমানে ডাকা হচ্ছে প্ল্যানেট এক্স নামে। এই কাল্পনিক গ্রহ সম্পর্কে প্রাচীন ধারণা হচ্ছে, এটি বিশাল আকারের একটি গ্রহ যা লম্বা একটি কক্ষপথে সূর্যকে পরিভ্রমণ করে। তাদের ধারণা অনুযায়ী ৩৫০০ বছর পর পর নিবিরু পৃথিবীর কক্ষপথের ভেতর চলে আসে। সুমেরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, নিবিরুর আগমন পৃথিবী ধ্বংসের অন্যতম কারণ হবে। কারণ এটি পৃথিবীর যতই কাছে আসতে থাকবে, ততই পৃথিবীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। বড় বড় ভূমিকম্প, সুনামি, সাইক্লোনে লণ্ডভণ্ড হয়ে যেতে থাকবে জনবসতি। অগ্ন্যুৎপাত শুরু হবে সমস্ত আগ্নেয়গিরিতে। নিবিরুর প্রবল আকর্ষণে পৃথিবী ঘুরে যাবে, উত্তর মেরু ঘুরে হয়ে দক্ষিণ মেরুর অবস্থানে চলে আসবে। আর খুব বেশি কাছে আসলে সেটা হবে মানবজাতির ইতিহাসের শেষ দিন, পৃথিবী সবেগে নিক্ষিপ্ত হবে সূর্যের মাঝে। বলা হয় এই নিবিরুর কথা জানতো অন্য সভ্যতাগুলো, মায়া সভ্যতার হিসাব অনুযায়ী নিবিরুর আবার পৃথিবীর কাছাকাছি আসার কথা নাকি ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। তারা ধারণা করেছে ২০১২ এর সংঘর্ষেই ধ্বংস হয়ে যাবে সমগ্র বিশ্ব, তাই এর পর সেখানে আর কোনও সাল গণনা করা হয়নি, ২০১২ সাল পর্যন্ত এসেই শেষ করে দেয়া হয়েছে দিন গণনা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কি আসলেই সম্ভব? বর্তমান বিজ্ঞান কি বলে এই সম্পর্কে? এসবের উত্তর জানতে হলে আমাদের চোখ রাখতে নিবিরু থেকে প্ল্যানেট এক্সের নতুন ইতিহাসে। মিথ আর কল্পকাহিনীর বাইরে আমাদের পরিচিত বিজ্ঞানের ইতিহাস, মানে মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন যুগ আসলে শুরু হয়েছে আঠারো শো সালের পর থেকে। এখন যে সব প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয় বা যেভাবে হিসাব নিকাশ করা হয় সবকিছু এই সময়ের ভেতরেই গড়ে উঠেছে। সত্তরের দশকের পর যখন সৌরজগতের পূর্নাংগ একটা মডেল আমাদের হাতে আসলো, তখন সমস্ত গ্রহ উপগ্রহের কক্ষপথ বিন্যাসের হিসাব করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখলেন কোথায় যেন হিসাব মিলছে না। তখন থেকেই, বিশেষ করে নেপচুনের কক্ষপথ পর্যালোচনা করে অনেকেই এই ধারণা পোষণ করতে শুরু করেন যে, সৌরজগতে আরও কিছু বড় গ্রহ আছে, যাদের কারণে প্রভাবিত হচ্ছে অন্য গ্রহগুলোর কক্ষপথ। এই থেকেই শুরু হয়েছিলো বারো তম গ্রহ, অর্থাৎ প্ল্যানেট এক্স নিয়ে জল্পনা কল্পনা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কি আসলেই সম্ভব? বর্তমান বিজ্ঞান কি বলে এই সম্পর্কে? এসবের উত্তর জানতে হলে আমাদের চোখ রাখতে নিবিরু থেকে প্ল্যানেট এক্সের নতুন ইতিহাসে। মিথ আর কল্পকাহিনীর বাইরে আমাদের পরিচিত বিজ্ঞানের ইতিহাস, মানে মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন যুগ আসলে শুরু হয়েছে আঠারো শো সালের পর থেকে। এখন যে সব প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয় বা যেভাবে হিসাব নিকাশ করা হয় সবকিছু এই সময়ের ভেতরেই গড়ে উঠেছে। সত্তরের দশকের পর যখন সৌরজগতের পূর্নাংগ একটা মডেল আমাদের হাতে আসলো, তখন সমস্ত গ্রহ উপগ্রহের কক্ষপথ বিন্যাসের হিসাব করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখলেন কোথায় যেন হিসাব মিলছে না। তখন থেকেই, বিশেষ করে নেপচুনের কক্ষপথ পর্যালোচনা করে অনেকেই এই ধারণা পোষণ করতে শুরু করেন যে, সৌরজগতে আরও কিছু বড় গ্রহ আছে, যাদের কারণে প্রভাবিত হচ্ছে অন্য গ্রহগুলোর কক্ষপথ। এই থেকেই শুরু হয়েছিলো বারো তম গ্রহ, অর্থাৎ প্ল্যানেট এক্স নিয়ে জল্পনা কল্পনা।
জেসারিয়া সিটচিনের মাধ্যমে আবার হালে পানি পায় নিবিরু। |
প্ল্যানেট এক্সকে রীতিমতো আলোচনার বস্তুতে পরিণত করার পেছনে যার অবদান স্মরণ করতে হয়, তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানী পার্সিভাল লয়েল, মঙ্গল গ্রহে ক্যানেল থিওরি নিয়ে গবেষণার জন্য যিনি বেশি বিখ্যাত। এছাড়া ১৯৭৬ সালে জেসারিয়া সিচিন তার বেস্টসেলার বইতে সুমেরীয়দের ইতিহাসকে এক নতুন আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করেন। তার মতে দুইজন ঈশ্বর না, আসলে দুইটি গ্রহের সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছিলো পৃথিবী আর তার মধ্যে একটি গ্রহ হচ্ছে নিবিরু যাকে মারদুক বলা হয়েছে, ৩৫০০ বছর পর পর এটা পৃথিবীতে ফিরে ফিরে আসে। সিচিনের এই ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিজ্ঞানকে জড়িয়ে আবার শুরু হয় নিবিরু বিতর্ক।
এর ভিতর আরও একটি ঘটনা ঘটে যার সূত্র ধরে প্রথমবারের মতো প্ল্যানেট এক্সের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় মিডিয়াতে, ১৯৮৩ সালে নাসার দুইজন বিজ্ঞানী নিউজেবার এবং হক দাবী করেন তারা সূর্য থেকে দুই বিলিয়ন বছর দূরে বৃহস্পতি সদৃশ একটি বস্তুর অস্তিত্ব দেখতে পেয়েছেন, এই নিয়ে সেসময় পত্রপত্রিকাতে অনেক লেখালিখি হয়েছে। কিন্তু যে কথাটা লেখা হয়নি সেটা হলো, এই দুই বিজ্ঞানী কোথাও বলেননি তারা নতুন গ্রহ দেখেছেন। তারা ইনফ্রারেড স্পেকট্রামে কিছু অসংগতি দেখেছিলেন, যেটা পরে জানা গেছে আসলে দূরের একটি গ্যালাক্সি ছিলো। কিন্তু তখন পত্রিকাগুলো নতুন গ্রহের আবিষ্কার হিসেবেই এটাকে তুলে ধরাকে লাভজনক মনে করেছিলো। এই ঘটনাকে প্রমাণ হিসেবে ধরে নিয়ে কিছু মানুষ নিবিরুর অস্তিত্বকে শক্তভাবে দাবী করতে শুরু করে। তারা বলতে শুরু করে এই প্ল্যানেট এক্স আসলে সুমেরীয়দের বর্ণিত গ্রহ নিবিরু।
কিন্তু মূল ধারার বিজ্ঞান এই থিওরিকে কখনোই সমর্থন করেনি। কারণ ফিজিক্সের মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা দেয়া একেবারেই অসম্ভব। তর্কের খাতিরে যদি মেনে নেয়া হয় যে নিবিরু নামে একটা গ্রহ ছিলো, সেটার সাথে সংঘর্ষ হয়ে পৃথিবীর উৎপত্তি, সেক্ষেত্রে দুইটি ঘটনা ঘটতে পারে, সংঘর্ষের পর হয় এটাকে সৌরজগতের অংশ হয়ে যেতে হবে, আর নাহলে তা মহাকাশে হারিয়ে যাবে। এত লম্বা কক্ষপথে কোনও বস্তুর উদ্ভট পরিভ্রমণ হালের ফিজিক্স দিয়ে ব্যাখ্যা করা দুরহ ব্যাপার। একই কথা চলে সৌরজগতের গ্রহগুলোর কক্ষপথ সম্পর্কেও, কক্ষপথ জনিত এই সমস্যা সমাধানের জন্য কোনও কাল্পনিক গ্রহকে টেনে আনতে হয়নি, গাণিতিক ভাবেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে, সেই নব্বই এর দশকে। আর মারদূক নামে যে ঈশ্বরের কথা বলা হয়েছে, তার প্রতীক ছিলো বৃহস্পতি। আর নিবিরুর শাব্দিক অর্থ ‘ডিঙ্গি নৌকা’ যা বলতে একাধিক স্থানে বৃহস্পতি গ্রহকে নির্দেশ করা হয়েছে, ধারণা করছি এই দুইটি মিল থেকেই উৎপত্তি হয়েছে মুখরোচক নিবিরু বা প্ল্যানেট এক্স তত্ত্বের।
এই প্ল্যানেট এক্স নিয়ে এত দীর্ঘ লেখার কারণ হলো,আমাদের কাছে একজনের পাঠানো লেখা যা "২০১২ এবং ইসলাম তথা ১৪৩৩ আরো কিছু অজানা তথ্য" নামে পহেলা বৌশাখে প্রকাশ করা হয়ে ছিল, যেখানে নিবিরু আসার উপলক্ষের সাথে আমাদের অতি পরিচিত ইমাম মেহেদি দাজ্জাল তত্ত্বকে এক করে খিচুড়ি পাকানো হয়েছে। তার সাথে ২০১২ মুভির প্লট কিছুটা আর কোরআনের কিছু আয়াত এমনভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে যে, যে কোনও মানুষ সরল বিশ্বাসে পড়লেই বিভ্রান্ত হতে বাধ্য। তাই সবার উদ্দেশ্যে বলবো, মায়া ক্যালেন্ডার ২০১২ সালে শেষ করা হয়েছে তার মানে এই না যে ২০১২ সালে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। আর কথিত প্ল্যানেট এক্স এর সাথে পৃথিবীর সংঘর্ষ হওয়ার কথা ছিলো ২০০৩ সালের মে মাসে, আমার মনে আছে সেই সময় ঠিক এরকম একটা অহেতুক ভীতি তৈরি করা হয়েছিলো মানুষের মনে, কিন্তু শেষমেশ কিছুই হয়নি, উলটো যারা এটা দাবী করেছিলো তারা হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে।
আর হাদিস সমূহে কিয়ামতের আলামত হিসেবে যেসব লক্ষণগুলোর কথা বলা হয়েছে তা যে কোনও সমাজেই অল্প বিস্তর বিদ্যমান, আজ যেমন আমরা বলছি কিয়ামতের সময় এসে গেছে, একশো বছর আগেও মানুষের ধারণা এরকম ছিলো। আসলে কবে কিয়ামত হবে সেটা আল্লাহ ভালো জানেন। তাই আমার কাছে মনে হয় এইসব অপ বিজ্ঞান, আর কল্পকাহিনীর সাথে ধর্মকে মিশিয়ে মানুষকে সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত গেলেও এগুলো শেষ পর্যন্ত ধর্ম আর বিজ্ঞান দুইটা বিষয়কে সাধারণ মানুষের কাছে হালকা করে ফেলছে। আশা করছি দেশের বিজ্ঞান লেখক আর ধর্ম বিশারদরা লেখনীর মাধ্যমে এসব ব্যাপারে মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে সচেষ্ট হবেন।
লেখকঃ উমর।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
কিন্তু মূল ধারার বিজ্ঞান এই থিওরিকে কখনোই সমর্থন করেনি। কারণ ফিজিক্সের মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা দেয়া একেবারেই অসম্ভব। তর্কের খাতিরে যদি মেনে নেয়া হয় যে নিবিরু নামে একটা গ্রহ ছিলো, সেটার সাথে সংঘর্ষ হয়ে পৃথিবীর উৎপত্তি, সেক্ষেত্রে দুইটি ঘটনা ঘটতে পারে, সংঘর্ষের পর হয় এটাকে সৌরজগতের অংশ হয়ে যেতে হবে, আর নাহলে তা মহাকাশে হারিয়ে যাবে। এত লম্বা কক্ষপথে কোনও বস্তুর উদ্ভট পরিভ্রমণ হালের ফিজিক্স দিয়ে ব্যাখ্যা করা দুরহ ব্যাপার। একই কথা চলে সৌরজগতের গ্রহগুলোর কক্ষপথ সম্পর্কেও, কক্ষপথ জনিত এই সমস্যা সমাধানের জন্য কোনও কাল্পনিক গ্রহকে টেনে আনতে হয়নি, গাণিতিক ভাবেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে, সেই নব্বই এর দশকে। আর মারদূক নামে যে ঈশ্বরের কথা বলা হয়েছে, তার প্রতীক ছিলো বৃহস্পতি। আর নিবিরুর শাব্দিক অর্থ ‘ডিঙ্গি নৌকা’ যা বলতে একাধিক স্থানে বৃহস্পতি গ্রহকে নির্দেশ করা হয়েছে, ধারণা করছি এই দুইটি মিল থেকেই উৎপত্তি হয়েছে মুখরোচক নিবিরু বা প্ল্যানেট এক্স তত্ত্বের।
এই প্ল্যানেট এক্স নিয়ে এত দীর্ঘ লেখার কারণ হলো,আমাদের কাছে একজনের পাঠানো লেখা যা "২০১২ এবং ইসলাম তথা ১৪৩৩ আরো কিছু অজানা তথ্য" নামে পহেলা বৌশাখে প্রকাশ করা হয়ে ছিল, যেখানে নিবিরু আসার উপলক্ষের সাথে আমাদের অতি পরিচিত ইমাম মেহেদি দাজ্জাল তত্ত্বকে এক করে খিচুড়ি পাকানো হয়েছে। তার সাথে ২০১২ মুভির প্লট কিছুটা আর কোরআনের কিছু আয়াত এমনভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে যে, যে কোনও মানুষ সরল বিশ্বাসে পড়লেই বিভ্রান্ত হতে বাধ্য। তাই সবার উদ্দেশ্যে বলবো, মায়া ক্যালেন্ডার ২০১২ সালে শেষ করা হয়েছে তার মানে এই না যে ২০১২ সালে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। আর কথিত প্ল্যানেট এক্স এর সাথে পৃথিবীর সংঘর্ষ হওয়ার কথা ছিলো ২০০৩ সালের মে মাসে, আমার মনে আছে সেই সময় ঠিক এরকম একটা অহেতুক ভীতি তৈরি করা হয়েছিলো মানুষের মনে, কিন্তু শেষমেশ কিছুই হয়নি, উলটো যারা এটা দাবী করেছিলো তারা হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে।
আর হাদিস সমূহে কিয়ামতের আলামত হিসেবে যেসব লক্ষণগুলোর কথা বলা হয়েছে তা যে কোনও সমাজেই অল্প বিস্তর বিদ্যমান, আজ যেমন আমরা বলছি কিয়ামতের সময় এসে গেছে, একশো বছর আগেও মানুষের ধারণা এরকম ছিলো। আসলে কবে কিয়ামত হবে সেটা আল্লাহ ভালো জানেন। তাই আমার কাছে মনে হয় এইসব অপ বিজ্ঞান, আর কল্পকাহিনীর সাথে ধর্মকে মিশিয়ে মানুষকে সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত গেলেও এগুলো শেষ পর্যন্ত ধর্ম আর বিজ্ঞান দুইটা বিষয়কে সাধারণ মানুষের কাছে হালকা করে ফেলছে। আশা করছি দেশের বিজ্ঞান লেখক আর ধর্ম বিশারদরা লেখনীর মাধ্যমে এসব ব্যাপারে মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে সচেষ্ট হবেন।
লেখকঃ উমর।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
valo lagchy onek.
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুনOnnek valo
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুন