পূর্বের পর্বঃ মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার ২৫টি বীভৎস পন্থা (২য় পর্ব)।
মৃত্যু দন্ড, অপরাধির জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি। যদিও পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, যেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যু দন্ড দেওয়া হয় না, কিন্তু বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে মৃত্যু দন্ড দেবার বিধান রয়েছে। এই শাস্তির বিধান পৃথিবীতে যত গুলি আইনি শাস্তি রয়েছে, তার মধ্যে সব থেকে পুরাতন। তাই সময়ের সাথে এই মৃত্যু দন্ড কার্যকর করার পদ্ধতি একেক সময়ে একেক পন্থায় হয়েছে। আজ আমি আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব এমন বীভৎস কিছু পন্থার সাথে যা সম্পর্কে জানলে আপনারও ভয় লাগবে, শুধু একবার চিন্তা করুন আসামির জায়গায় আপনি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক মৃত্যু দন্ড কার্যকর করার ২৫টি বীভৎস পন্থা সম্পর্কে,
চামড়া ছড়ানোঃ
চামড়া ছাড়ানো (Flaying Skin) এক বীভৎস মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে জীবিত মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামিকে টেবিলের সাথে বেঁধে জীবন্ত অবস্থায় তার চামড়া ছেলা হয়। আর ছেলা চামড়া জনসম্মুখ্যে টানিয়ে রাখা হয়, যাতে সবাই দেখতে পারে এবং শাষককে ভয় পায়। ভয় তৈরি করার বেশ ভাল পন্থাই বলা যায়!! কি বলেন?
রক্তের ঈগলঃ
রক্তের ঈগল (Blood Eagle) পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার প্রথা চালু ছিল ফিনল্যান্ডে। এই পদ্ধতিতে মৃত্যু সাজা প্রাপ্ত ব্যাক্তিকে দাড় করিয়ে টান টান করে বেঁধে তার মেরুদন্ড বরাবর কেটে তার বুকের পাজরের হাড় বের করে ভেঙ্গে ঈগলের পাখার মত মেলে রাখা হয়, এরপরে পিছন থেকে ফুসফুস বের করে রাখা হয়। এখানেই শেষ না, এর পরে বাইরে ঝুলে থাকা ফুসফুস এবং ক্ষত জায়গায় লবন মেখে দেওয়া হত। এই পদ্ধতিতে রক্তক্ষরন কম হবার কারনে ব্যাক্তি অনেক সময় ধরে বেঁচে থাকত, আর তার মৃত্যুর তীব্রতাও বৃদ্ধি পেত।
জাফরিঃ
জাফরি (The Gridiron) পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত ব্যাক্তিকে উত্তপ্ত কয়লার বিছানার উপর জোড় করে চেপে রাখা হত। অনেকটাই কাবাব বানাবার মত। তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত এই ভাবে তাকে মেরে এই জ্বলন্ত কয়লার বিছানায় চেপে রাখা হত। এই পদ্ধতিতে আসামির মৃত্যু অনেক দেরিরে হত, আর তার শরীরের চামড়া পুড়ে সম্পূর্নটাই কাল হয়ে যেত।
নিষ্পেষণঃ
নিষ্পেষণ (Crushing) পদ্ধতি অনেকটাই হাতি দ্বারা কার্যকর করা মৃত্যু দন্ডের মত। তবে কিছুটা ভিন্ন। এই পদ্ধতি মূলত মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামির ক্ষেত্রে ব্যাবহার হত না, তবে যে সকল আসামির উপর ব্যাবহার করা হত তারা সকলেই মৃত্যুররন করত। কি ধাঁধার মধ্যে পরে গেলেন। আচ্ছা এবার একটু ভেঙ্গে বলি, এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল আমেরিকায় আর সেখান থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এটির বিস্তার ঘটে। তৎকালীন সময়ে কোন সাধারন ব্যাক্তি বা দাস যদি কোন সম্ভান্ত পরিবারের বিশেষ ব্যাক্তিদের দ্বারা দোষি হিসেবে আক্ষা পেত, তাহলে তাদের দিয়ে দোষ স্বীকার করানোর কাজেই ব্যাবহার করা হত এই পদ্ধতি। এক্ষেত্রে আসামিকে মাটিতে শুইয়ে তার উপর ভারি বস্তু রাখা হত, আর প্রতিবার তাকে তার দোষ স্বীকার করার কথা বলা হত। স্বীকার না করা পর্যন্ত ওজন বাড়িয়ে যাওয়া হত, যতক্ষন পর্যন্ত না সে মারা যায়। তবে দোষ স্বীকার করলেও যে মুক্তি পেত তা নয়, সেই দোষের জন্য এবং সবাইকে মিথ্যা বলার দ্বায়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হত। মানে কোন ভাবেই নিস্তার নাই।
ক্যাথেরিনের চাকাঃ
ক্যাথেরিনের চাকা (Catherin Wheel) নামটি কেন এসেছে তা জানা নেই, তবে কোন নারীর নামের সাথে যে সম্পর্কিত তা না শুনেই বোঝা যায়। হতবা ক্যাথিরিন নামে কেউ এই মৃত্যদন্ড কার্যকর পদ্ধতি আবিস্কার করেছিল। এই ক্যাথেরিনের চাকার আরেকটি নাম আছে, তা হল "Breaking Wheel"। এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা মানে সত্যিকার অর্থে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করা। এই পদ্ধতিতে আসামিকে একটি চাকার সাথে শক্ত করে বাঁধা হয়, এর পরে চাকাটি জোড়ে জোড়ে ঘুরতে থাকে, এ সময় জল্লাদ চাবুক বা লাটিদিয়ে ঘুরতে থাকা আসামির গায়ে সর্বোচ্চ জোড় দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আঘাত করতে করতে জল্লাদের মন ভরলে সে তখন মোটা লোহা দিয়ে আসামির হাতে আর পায়ে পেরেক পুতে দেয়, তারপর আবার আঘার হানা শুরু করে জল্লাদ। যত সময় মন চায় চালিয়ে যায়। মন তৃপ্ত হলে তখন পেরেক পোতা অবস্থায় আসামিকে শহরের মাঝে টাঙ্গিয়ে রাখা হয়, যাতে সবাই দেখতে পারে। অনেকটা ক্সুসের মত শুধু পার্থক এখানে ক্রুস না দিয়ে ক্রস (X) আকৃতির খুটির সাথে প্রেক দিয়ে হাত পা লাগানো থাকে।
লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন