ইতালির সিসিলির রহস্যময় অগ্নিকান্ড ।। Mysterious Fires In Sicily Italy


ইতালির সুন্দর সাজানো গোছানো স্থান সিসিলি। আর এই সুন্দর শহরের অধিবাসীরাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়লো যখন তাদের ঘরের ফ্রিজ থেকে শুরু করে আসবাবপত্র সব কিছুতে হঠাৎ করেই আগুন ধরে যেতে শুরু করে। ভয়াবহ আগুনের বিস্ফোরণের সাথে সাথে আতঙ্ক যেন তার ডালপালা মেলে দিল আগুনের চেয়েও দ্রুত গতিতে। সিসিলির ক্যারোনিয়া হয়ে উঠলো অগ্নিকান্ডের শহর। কোন রকম যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যার আগেই "International Association of Exorcists" এর অনারারি প্রেসিডেন্ট ফাদার গ্যাব্রিয়েল আমোর্থ বলেন, "এরকম ঘটনা আমি আগেও দেখেছি। এটি শয়তান বা অশুভ আত্মার কাজ। আর এগুলো তাদের বাড়িতেই ঘটেছে যারা তাদের বাড়িতে নিজেদের কৃত পাপের মাধ্যমে তাকে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছে।" আর এ বক্তব্য ঠিক তখনোই আসে যখন বিজ্ঞানী ও সরকারি কর্মকর্তারা সেসময় এই রহস্যময় অগ্নিকান্ডের কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারছিলেন না।


১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৪, ক্যারোনিয়া শহরের ৩৯ জন বাসিন্দা টানা তিন দিন তিন রাত ধরে ঘর থেকে বাইরে। কারণ তাদের বাড়িতে ঘটছিল রহস্যময় অগ্নিকান্ড। এরপর তাদেরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। সেসময়ের টিভি ফুটেজে দেখা যায়, অগ্নিকান্ডে ধ্বংসপ্রাপ্ত জিনিস গুলোর মাঝে রয়েছে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, রান্নার জিনিসপত্র, আসবাবপত্র। দলে দলে এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞরা তদন্ত শুরু করলেন। যাতে ছিলেন বিজ্ঞানী, তড়িৎ প্রকৌশলী ও সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞরা।

দ্রুত গতিতে আগুনের শিখা নেভানো হলো। তদন্ত চলাকালে একজন হতবিহবল বিজ্ঞানী জানান কিভাবে তিনি একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রে হঠাৎ করেই আগুন ধরে যেতে দেখেছেন, যেখানে যন্ত্রটির প্লাগের সাথে কোন বিদ্যুৎ উৎসের কোন সংযোগই ছিল না! তদন্ত চলাকালেই ইতালিয় পত্রিকা গুলোতে একটি গোপন রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতালির সিভিল প্রটেকশন ডিপার্টমেন্ট এ রহস্যময় অগ্নিকান্ডের ঘটনার জন্য "এলিয়েন" বা ভিন্ন গ্রহের প্রাণীদের দায়ী করেন। ইতালীয় সরকারের নির্দেশে ডজন ডজন বিশেষজ্ঞ যাদের মাঝে একজন নাসার বিজ্ঞানীও ছিলেন, এ ঘটনার তদন্তে নামে। দুই বছরের এ তদন্ত কাজে ব্যয় হয় প্রায় এক মিলিয়ন পাউন্ড।


বিশেষজ্ঞ দলের দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্যারোনিয়ার রহস্যময় আগুনের মূল কারণ কোন অতি উচ্চ ক্ষমতার তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ, যেটা মানুষের সৃষ্ট নয়। আর এ তরংগের শক্তি প্রায়ই ১২ থেকে ১৫ গিগাওয়াট পর্যন্ত উন্নীত হয়। প্রতিবেদনে এই সম্ভাবনার কথাও বলা হয় যে, খুব সম্ভবত ক্যারোনিরার কাছাকাছি কোথাও ইউ এফ ও বা ভিন্ন গ্রহের যান অবতরণ করেছিল, যে কারণে এই উচ্চ শক্তির তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছিল। ক্যারোনিয়ার ফসলের মাঠে জ্বলন্ত কোন জিনিসের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ছাপটি যে কিসের সেটির কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায় নি। ক্যারোনিয়ার মেয়র পেদ্রো স্পিনাতো বলেন, “আমি জানি না আসলে কি হচ্ছে!”


সিসিলির সিভিল প্রটেকশন ডিপার্টমেন্টের "Francesco Mantegna Venerando" বলেন, "আমরা বলছি না মঙ্গল গ্রহ থেকে কোন অদ্ভুত প্রাণী এসে এ কাজ ঘটাচ্ছে। এটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনও নয়। আমাদের তদন্ত কাজের মাঝামাঝি সময়ে এ প্রতিবেদন ফাঁস হয়ে গিয়েছে। আমরা এখনো কোন উপসংহারে পৌছাইনি। কিন্তু কোন এক অস্বাভাবিক শক্তির কারণে এরকম উচ্চ মাত্রার তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এটি অনেক গুলো সম্ভাবনার একটি মাত্র। এরকমও হতে পারে পৃথিবীরই কেউ বা কোন গোষ্ঠী কোন অজানা অস্ত্রের পরীক্ষাও চালাতে পারে। আমরা সব সম্ভাবনাই মাথায় রাখছি।"

অনেকে ক্যারোনিয়ার মাটির নিচে কোন আগ্নেয়গিরির থাকার সম্ভাবনার কথাও বলছেন। কিন্তু এখনো পুরো বিষয়টি অমীমাংসিত।

সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info