কিছু রাস্তা ও তার নাম


বি আর ১১৬, ব্রাজিলঃ
ব্রাজিলের ২য় বৃহত্তম মহাসড়ক। পোর্তে এলিগ্রে থেকে শুরু হয়ে কুরাটিবা এবং সাওপাওলোকে অতিক্রম করে সোজা গিয়েছে রিও ডি জেনিরিয়োতে। এই মহাসড়কের আঞ্চলিক নাম 'রোডেবিয়া ডি মোর্তে' যার অর্থ 'হাইওয়ে অফ ডেথ'। নামটা যথার্থ!!


প্যাটিওপাওলো পারদিকাকি রোড, গ্রীসঃ
অটোমান সম্রাটরা গ্রীসকে ৪০০ বছর শাসন করেছিল কিন্তু তারা কখনো একটি পাহাড়ী জাতিকে পরাজিত করতে পারেনি। মধ্য গ্রীসে কয়েকটি গ্রাম নিয়ে এই অঞ্চলের নাম হল আগ্রাফা। এই পাহাড়টির নামও আগ্রাফা। অটোমান সম্রাটদের সৈন্য ছিল, পর্যাপ্ত অস্ত্রও ছিল শুধু আগ্রাফায় যাওয়ার রাস্তা ছিলনা। গ্রীষ্ম মৌসুমেও এ রাস্তার প্রতিটি পদে মরন লুকিয়ে আছে।


লুক্সোর আল হারগাদা রোড, মিশরঃ
এ রাস্তাটি প্রাচীন শহর লুক্সরকে দক্ষিণ মিশর এবং হারগাদার সাথে সংযুক্ত করেছে। হারগাদা বিখ্যাত হল য়েকটি স্কুবা ডাইভিং রিসোর্ট এর কারনে। এটা একটা ডেথ ট্র্যাপ। বেশীরভাগ চালকরা সূর্য ডুবার পরে তাদের গাড়ির হেডলাইট অন করে না। কারন হেডলাইট অন করলে লুটেরারা যদি আপনাকে খুঁজে পায়। ১৯৯৭ সালে সন্ত্রাসীরা ৬২ জন জার্মান টুরিস্টকে গুলি করে মেরে ফেলে।


প্যান আমেরিকান হাইওয়ে, কোস্টারিকাঃ
৩০,০০০ মাইল লম্বা এই মহাসড়ক উত্তর আমেরিকা থেকে দক্ষিণ আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এই মহাসড়কের একটি অংশ গিয়েছে কোস্টারিকার মধ্য দিয়ে যে অংশের বেশ কিছু মাইল জুড়ে রয়েছে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। ভূমিধস, বন্যা, সংকীর্ন মোড় এসবের কারনে সংগঠিত হচ্ছে এই দুর্ঘটনা। যার কারনে স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছে 'হিল অফ ডেথ'।


গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোড, ইন্ডিয়া থেকে আফগানিস্তানঃ
১৬ শতকে এই রাস্তাটি তৈরী করা হয়েছিল ভারত, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের বড় বড় শহর গুলিকে যুক্ত করার জন্য। গত চারশো বছরে এই রাস্তার আশেপাশের অনেক কিছু পরিবর্তন হলেও রাস্তাটি পরিবর্তন হয়নি। যার কারনে দুর্ঘটনা এখন নিয়মিত ব্যাপার।


কোস্টাল রোড, ক্রোয়েশিয়াঃ
সাগরের তীরবর্তী এই সরু, ঘন ঘন মোড় সহ এই রাস্তাটি তৈরী করা হয় সাবেক ইউগোস্লেভিয়া যুদ্ধের সময়। বর্তমানে সাগর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে টুরিস্টদের যাওয়ার প্রধান রাস্তা এটি।


কোটোপ্যাক্সি ভলক্যান রোড, ইকুয়েডরঃ
ইকুয়েডর এর রাজধানী শহর কুইটো থেকে ২৫ মাইল দীর্ঘ এ রাস্তা প্যান আমেরিকান হাইওয়েকে কোটোপ্যাক্সি ভলক্যান ন্যাশনাল পার্কের সাথে যুক্ত করেছে। এ রাস্তার শেষ হয়েছে কোটোপ্যাক্সি ভলক্যানে। ১৯,৪৬০ ফিট উচু এ আগ্নেয়গিরি বর্তমানে ইকুয়েডর এর সর্বোচ্চ জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। বর্ষা মৌসুমে প্রায়ই এ রাস্তা থেকে গাড়ি গুলো পিছলা খেয়ে পাশের জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া অসংখ্য গর্তযুক্ত এ রাস্তা নতুন চালকদের প্রতিনিয়ত পরীক্ষা নেয়।


দি নর্থ ইয়ান্গাস রোড, বলিভিয়াঃ
১৯৩০ সালে যুদ্ধের সময় প্যারাগুয়ের বন্দিরা এ রাস্তাটি তৈরী করে। নাম নর্থ ইয়ান্গাস রোড হলেও স্থানীয়রা বলেন 'রোড টু ডেথ'। সাপের মত আঁকাবাঁকা এ রাস্তাটির অবস্থান উত্তর বলিভিয়ায়। ১৯৯৫ সালে 'ইন্টার আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক' এই রাস্তাটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক রাস্তা হিসেবে ঘোষনা করে। প্রতিবছর প্রায় ১০০ পর্যটক মারা যায় বিপদজনক মোড় গুলোতে।


সিচুয়ান, তিব্বত হাইওয়ে, চিনঃ
চিনে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা গত বিশ বছরে প্রায় দি'গুন হয়েছে। প্রতি লাখে হারটা ৩.৯ থেকে বেড়ে ৭.৬ হয়ে গিয়েছে। এতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এই মহাসড়ক-কে চিনের সবচেয়ে বিপদজনক মহাসড়ক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই মহাসড়কের চেংডু এবং তিব্বতের অংশে ভূমিধস, পাথর গড়িয়ে পড়ার কারনে দুর্ঘটনা বেশী হয়।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info