UFO এক অজানা রহস্য ।। UFO An Unknown Mystery


একটা ছিল ছেলে। তার মাথায় বুদ্ধি ছিল না বলে সে অনেক ছোটদের সঙ্গে পড়তো। আদতে সে কিছুই পাড়তো না। তাদের শহরে একদিন একটা বিশাল যান এলো। সেই যানের মধ্যে একদল প্রাণী ছিল। তাদের মধ্যে একজন পৃথিবীতে আটকা পড়ে গেল। সেই প্রাণীটা এসে আশ্রয় নিল বোকা ছেলেটার বাসায়। এরপর সেই প্রাণীটার সাহায্যে বোকা ছেলেটা বুদ্ধিমান হয়ে গেল। তারপর কিভাবে সেই প্রাণীটাকে আবার ফিরিয়ে দিল তাদের যানে, সেই নিয়ে একটি হিন্দি ছবি হয়েছে। যার নাম ‘কোই মিল গ্যায়া’। এর বাংলা করলে দাড়ায়, মিলে গেছে কেউ, আরো সহজ করে বললে, একজনকে পাওয়া গেল। এই গল্পের প্রাণীটা আসলে ভিন গ্রহের প্রাণী আর যানটির নাম ইউএফও।

ইউএফও কি?
দুর আকাশে তারার মতো নয় ঠিক মাথার উপর ভেসে যাচ্ছিল এক চাকতি। মুহুর্তের মধ্যে আকাশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে গেল সে। জানি না বস্তুটি কী, কিন্তু জানি তার ছুটে চলা যেন বিদ্যুতের মতো। যারা ইউএফও দেখেছে তারা এ ভাবেই বলেছে তাদের গল্প।

অনেক মানুষ দাবী করেছে, তারা এ রকম অদ্ভুত কিছু বস্তু আকাশে উড়ে যেতে দেখেছে। অনেকে আবার দাবী করেন তাদেরকে এই সমস্ত ভিন গ্রহের প্রাণীরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকে একে বলে ভিন গ্রহ থেকে আসা কোন যান। আবার কেউ বলে এসব কিছুই না মানুষের মনের ভুল।


যারা দেখে তারা বলে, এগুলো দেখতে অনেকটা প্লেটের মতো বা বা চ্যাপ্টা । এগুলো পিরিচের মতো দেখতে হয় বলে একে সসার বা ফ্লাইং সসার নামে।

যারা দেখে তারা বলে, এগুলো দেখতে অনেকটা প্লেটের মতো বা বা চ্যাপ্টা। এগুলো পিরিচের মতো দেখতে হয় বলে একে সসার বা ফ্লাইং সসার নামে ডাকা হয়। বেশীর ভাগ মানুষই বিশ্বাস করে এগুলো ভিন গ্রহ থেকে আসা প্রাণীর যান। এই যানগুলোর ক্ষমতা অনেক।

যারা এই ধরনের যান আকাশে উড়তে দেখেছে তাদের অনেকেই এই কাহিনী লিখে রেখেছিল। প্রাচীন আমলের মানুষ এটিকে একটা অলৌকিক ঘটনা ভাবতো। কারণ এখন থেকে ১০০ বছর আগের মানুষেরা আকাশে ওড়ার মতো কোন যন্ত্র আবিস্কার করতে পারেনি। অনেক বিজ্ঞানী এই ধরনের কথা ভাবলেও সাধারন মানুষেরা তা ভাবতো না। তাই আকাশে পাখীর মতো কিন্তু পাখি নয় এ রকম কোন বস্তু দেখলে সেটাকে তারা আকাশ থেকে আসা কোন ফেরেশতা বা দেবতার যান ভাবতো।

এ রকম এক যানের উল্লেক পাওয়া যায় সেন কুও নামের এক চাইনিজ ভদ্রলোকের লেখায়। এই ভদ্রলোক অনেকগুলো আবিস্কার করেছিলেন।


একটা বই লেখেন যার নাম ‘ড্রিম পুল এসে’। এই বইয়ে তিনি এক আজানা উড়ে যাওয়া যান সমন্ধে লেখেন। তার বর্ণনায় জানা যাচ্ছে শহরের কোন কোন ব্যক্তি এক রকম কিছু যান আকাশে উড়তে দেখেছে। সময়টা ছিল এগারো শতক। নএক শহরের উপর দিযে উড়ে যাওয়া এই অজানা বস্তুর কথা তিনি তার বইয়ে লিখে রাখেন। সে যান দশ মাইলের মতো জায়গায় ছায়া তৈরী কতো। এর মধ্যে থেকে মুক্তোর মতো এক আলো আসতো।

এদের মধ্যে অনেকে আবার এই রকম যানে চড়ার অভিজ্ঞতাও বর্ণনা করেন। এদেরই একজন ইজিকেয়েল। বাইবেলে তিনি ঈসা (আঃ) এর সহযোগি। এরপর আরো অনেকেই দাবী করেন যে তারা এই রকম কোন অলৌকিক যান দেখেছেন। কেউ আবার দাবী করেন এই রকম যানে তারা এক অজানা প্রাণীর দেখা পেয়েছেন।

আধুনিক কালে এই সমস্ত উড়ন্ত বস্তুর একটা নাম দেওয়া হয়েছে। বলাই বাহুল্য সেই নামটি ইউএফও। এর পুরো মানে আনআইডেন্টিফাইং ফ্লাইং অবজেক্ট । যাকে বাংলায় করলে দাড়ায়, যার পরিচয় পাওয়া যায়নি এমন উড়ন্তু বস্তু।

ইউএফ দেখতে অনেকটা আমাদের চায়ের কাপের পেয়ালার মতো। তবে সেই পেয়ালাটা উল্টো দিলে যেমন হয় ইউএফওর চেহারা অনেকটাই সে রকম। যারা দেখে তাদের বেশীর ভাগেরই দাবী তাই। অনেক প্রাচীন কালে অনেকে দাবী করেছিল তারা আকাশে এক যান উড়তে দেখেছে।


এখন থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে বিমান আবিস্কার হলে এই গল্পগুলোর ধরন খানিকটা পাল্টে যায়। বিজ্ঞানীর অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্ত বিষয়গুলো পাল্টে যেতে থাকে। এই সসার বা ফ্লাইং অবজেক্ট গুলো হয়ে ওঠে ভিন গ্রহ থেকে আসা কোন বুদ্ধিমান প্রাণীর যান। এই নিয়ে তৈরী হতে থাকে নানা গল্প। এক সময় এই অতি বুদ্ধিমান প্রাণী ও এই রকম রহস্যময় যান নিয়ে নানা গল্প তৈরী হতে থাকে। ভাবা শুরু হয় এগুলো ভিন গ্রহ থেকে আসা কোন যান। এদের নাম হয়ে যায় ভিন গ্রহের প্রাণীর যান। তবে ইউএফও শব্দটি বেশ জোরে শোরে শোনা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে। ১৯৪৭ সালে আমেরিকার এক বৈমানিক কেনেথ আর্নল্ড তার রেডিওতে বলতে থাকেন তিনি কিছু আকাশে উড়তে দেখছেন। নটি প্লেটের মতো এই বস'গুলো আকাশে খুব দ্রুত গতিতে উড়ে যাচ্ছে। বলতে গেলে এরপর থেকে আমেরিকায় ইউএফও সম্বন্ধে গবেষনা শুরু হয়।

ইউএফও নিয়ে অনেক তথ্য জানা যায়। যেমন আমেরিকানদের প্রতি সাতজনে একজন দাবী করে তারা ইউএফও দেখেছেন। আর্নল্ডের ঘটনার পর অনেকেই দাবী করতে থাকেন তারা ইউএফও দেখেছেন। ফ্লাই সসার বা ফ্লাইং ডিস্ক এই শব্দগুলে বৈমানিক আর্নল্ডরই দেয়া।


ইউএফও নিয়ে কিছু তথ্যঃ
১৮৮৩ সালে প্রথম এক ব্যাক্তি দাবী করেন তিনি ইউএফওর ছবি তুলেছেন। জোসে বোনিলা নামের এক জোতিঃবিজ্ঞানী দাবী করেন তিনি ইউএফওর ছবি তুলেছেন। মেক্সিকোর জাকাটেকাস নামক এক জায়গায় তিনি ইউএফও দেখেন।

U.F.O আজ পর্যন্ত কতবার আর কোথায় কোথায় দেখা গিয়েছে তা জানতে "UFO রহস্যের আবডালে ঘেরা যে বস্তু" লেখাটি পড়ে আসতে পারেন।

আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। তাই বিজ্ঞানীরা এখন এই বিষয়টি নিয়ে গবেষনা শুরু হয়। আর এই গবেষনা শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। আমেরিকা ও বিশ্বের অন্যান দেশে ইউএফও নিয়ে গবেষনা শুরু হয় এবং চলছে। তারা এই সব গল্পগুলোকে সংগ্রহ করে। এর সাথে তারা নানা ধরনের ছবিও সংগ্রহ করে। এরপর সেগুলোকে তারা বিশ্লেষন করে। এর মধ্যে দিয়ে তারা বের করার চেস্টা করেছে আদৌও ঘটনাগুলো ঘটেছে কি না। নাকি এগুলো যারা দেখে তাদের মনের ভুল।

এখন পর্যন্ত যতগুলো বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষনা হয়েছে তার কোনটাতেই ইউএফওর কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীদের মতো এই মহাবিশ্বে কোথাও এখনও প্রাণের অস্তিত্ব আবিস্কার হয়নি। তার মানে যেহেতু কাছে পিঠে কোথাও প্রাণী নেই তাহলে কোন ইউএফও নেই। যারা ছবি নিয়ে হাজির হয়েছে তাদের ছবিগুলোকেও বিজ্ঞানীর সঠিক বলে ধরেননি। অনেকের ছবি পরিস্কার ছিল না। আবার কারো ছবি তো বুজরুকি বলে বিজ্ঞানীরা উড়িয়ে দিয়েছেন।

বিজ্ঞানীরা না মানলেও অনেকে বিশ্বাস করেন ইউএফও ও অতিবুদ্ধিমান প্রাণী রয়েছে। অনেকে মনে করেন আমাদের এই সভ্যতার অনেক কিছু বাইরে থেকে এসেছে। তবে যে যে ভাবে প্রমান আনুক বিজ্ঞান এগুলোতে বিশ্বাস করছে না যতক্ষন না সত্যিই একটা ইউএফও বা ভিন গ্রহের মানুষ এসে হাজির হচ্ছে বিজ্ঞানীদের সামনে।

তবে ভিনগ্রহের জীব নিয়ে একটি লেখা পড়েছিলাম। "ভীন্য গ্রহের প্রাণী এলিয়েন এদের সম্পর্কে আমরা কতটুকো জানি, আসুন জানি এলিয়েন কি?" আপনারাও পড়ে দেখবেন। বেশ ভাল লেগেছিল আমার।

লেখকঃ বিজয় মজুমদার।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info