আমাদের এই সবুজ পৃথিবী কতই না সুন্দর। আর এই পৃথিবীতে আছে কত মানুষ আর জীব জন্তুর বসবাস। পৃথিবীর কোথাও অনেক গরম আবার কোথাও কন কনে ঠান্ডা। কোথাও আবার অনেক উচু আবার কোথাও কতই না নিচু। আজ আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব আমাদের এই ধরনীর চির অদ্ভুদ আর বিস্ময়কর কিছু জায়গার সাথে। তাহলে আর দেরি কেন চলুন শুরু করা যাক।
দাল্লো, ইথোপিয়াঃ
দাল্লো, ইথোপিয়াঃ
এই শহরটি হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে গরম শহর। এই শহরের তাপমাত্রা ৩৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৩.৯ ডিগ্রি ফারেনাইট)। এত গরম শহর এই পৃথিবীর বুকে আর নেই।
কুরুবেরা গুহাঃ


কুরুবেরা গুহাঃ
এটি পৃথিবীর সব থেকে গভীরতম গুহা। এই গুহার অবস্থান জর্জিয়ার আবকাজিয়া শহরে। এটি এই ধরনীর একমাত্র মাত্র গুহা যার গভিরতা ২০০০ মিটারের থেকেও বেশী।
উচ্চতম স্থানঃ
উচ্চতম স্থানঃ
"মাউন্ট এভারেষ্টের" সাথে বুঝি আবার পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। এটি পৃথিবীর সব থেকে উচু জায়গা। ১৯৫০ সাল থেকে শুরু করে এপর্যন্ত ৩০০ এর কাছাকাছি লোক এই জায়গায় গিয়েছে। আর এ উচ্চতা সমুদ্রের পানির লেভেল থেকে ২৯,০২৯ ফিট উপরে। আচ্ছা আপনারা কি এই এভারেষ্ট জয় করার গল্প পড়েছেন?
পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সব থেকে দূরের অবস্থানঃ
পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সব থেকে দূরের অবস্থানঃ
আপনারা জানেন যে পৃথিবীর আকৃতি অনেকটা কমলা লেবুর মত। এই কারনে উত্তর মেরু আর দক্ষিন মেরু থেকে যতই দূরে যেতে থাকবেন, আপনার এবং পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্যকার দূরত্ত তত বেশী বাড়তে থাকবে। আর আপনি যদি ইকোয়েডরের "চুম্বোরাজো" পাহাড়ের উপরে যান তাহলে আপনি পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সব থেকে দূরে অবস্থান করবেন। অনেকেই বলবে এভারেষ্ট সব থেকে উচু তাই এখানটাই পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সব থেকে দূরে। না তা নয়। সমূদ্র পৃষ্ঠের সাথে যদি তুলনা করে উচ্চতা মাপা হয় তাহলে এভারেষ্ট সব থেকে উচু, আর যদি পৃথিবির কেন্দ্রকে তুলনা করে মাপা হয় তাহলে চুম্বোরাজো নামের এই পাহাড়টি সবথেকে উচু জায়গা।
সব থেকে নিঃসঙ্গ দ্বীপঃ
সব থেকে নিঃসঙ্গ দ্বীপঃ
"বুভেট" নামের ছোট বসতিহীন দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে নরওয়েজিয়ান দ্বীপ হল সব দুরের দ্বীপ। এন্টার্কটিকা থেকে প্রায় ১০০০ মাইল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রায় ১৫০০ মাইল দূরে এর অবস্থান। অর্থাৎ এই দ্বীপের ১৫০০ মাইলের মধ্যে আর আর অন্য কোন দ্বীপ নেই।
সব থেকে নিঃসঙ্গ ভাস্কর্যঃ
সব থেকে নিঃসঙ্গ ভাস্কর্যঃ
পোলার অঞ্চল সবথেকে নির্জন এলাকা এই ধরনীর বুকে। এই জায়গার উপর যেমন কোন দেশের কোন দাবী নাই তেমনি এখানে কোন মানূষের বসবাস নেই। কিন্তু এর মধ্যেও দাঁড়িয়ে আছে "লেলিনের" একটি ভাস্কর্য। বলতে গেলে সব থেকে নিঃসঙ্গ।
ধরনীর সব থেকে সমতল ভূমিঃ
ধরনীর সব থেকে সমতল ভূমিঃ
"সালার ডি ইউনি" হল এমন একটি জায়গা, যেটা তৈরি হয় কয়েকটি লেক শুকিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। আর এটি বিশ্বের বৃহত্তম লবণ সমতল ভূমি যা ৪,০৮৬ বর্গ মাইল বা ১০,৫৮২ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে অবস্থিত।
সর্বচ্চ জোয়ার ভাটার হ্রদঃ
সর্বচ্চ জোয়ার ভাটার হ্রদঃ
"লেক টিটিকাকা" নামের এই লেকের জোয়ার ভাটার সময় ১২,৫০৭ ফুট পানির স্তর কমে আর বাড়ে। সারা বিশ্বের আর কোন হ্রদে পানির স্তর জোয়ার ভাটায় এত বেশী উঠা নামা করে না।
পৃথিবীর সবথেকে নিচু শুষ্ক জায়গাঃ
পৃথিবীর সবথেকে নিচু শুষ্ক জায়গাঃ
প্রায় ৫০০০ মাইল জুড়ে অবস্থিত AndesStretching হচ্ছে সবথেকে দীর্ঘতম পর্বতশ্রেনী। এটি দক্ষিন আমেরিকায় অবস্থিত।
মানুষের তৈরি করা সব থেকে বড় গর্তঃ
মানুষের তৈরি করা সব থেকে বড় গর্তঃ
রাশিয়ান বিজ্ঞানিরা ভূগর্ভের স্তর পরিক্ষার জন্য এই গর্ত খোরেন। এটির গভীরতা ৪০,২৩০ ফুট। এটি ভূগর্ভের ব্লাষ্টিক মহাদেশিয় প্লেট কে ভেদ করে চলে গেছে। আরো বিস্তারিত জানতে 'পৃথিবীর গভীরতম গর্ত' লেখাটি পড়ুন।
সব থেকে বৃষ্টিবহূল অঞ্চলঃ
সব থেকে বৃষ্টিবহূল অঞ্চলঃ
"চকো" কলম্বিয়ার একটি শহর। এই অঞ্চলে বছরে ১১,৭৭০ সেমি বা ৪৬৩.৪ ইঞ্চি বা ৩৮ ফিট ৬ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। যে কারনে বলা হয় এটি সব থেকে বৃষ্টি বহূল অঞ্চল। ঢাকায় এই পরিমান বৃষ্টি হলে নৌকা বাদে আর কোন যান থাকবে বলে মনে হয় না।
সব থেকে শুষ্ক স্থানঃ
সব থেকে শুষ্ক স্থানঃ
আফ্রিকার "আটাকামা মরুভূমি" বিশ্বের সব থেকে শুষ্ক অঞ্চল। এই মরুভূমিতে ১৯০৮ থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত এক ফোঁটাও বৃষ্টি হয় নাই। এত লম্বা সময় বৃষ্টি না হওয়ার রেকর্ডটিও একমাত্র এই অঞ্চলের রয়েছে।
সব থেকে জনবহূল সমুদ্র সৈকতহীন দেশঃ
সব থেকে জনবহূল সমুদ্র সৈকতহীন দেশঃ
ইথোপিয়া দেশটি এমন একটি দেশ যে দেশের কোন সমুদ্র সৈকত নাই। সারা বিশ্বে এরকম ৪৮ টি দেশ আছে। কিন্তু বাকি ৪৭ দেশের তুলনায় এই দেশের জনসংখ্যা সর্বাধিক এবং তা ৭০ মিলিয়নের কাছাকাছি।
সব থেকে খাড়া ঢালঃ
সব থেকে খাড়া ঢালঃ
কেনাডার মাউন্ট থর পাহাড়ের উচ্চতা ৪,১০১ ফিট আর এর ঢাল ১০৫ ডিগ্রি কোনে অবস্থিত।
সব থেকে ঠান্ডা শহরঃ
সব থেকে ঠান্ডা শহরঃ
রাশিয়ার "ওয়েমিয়াকন" শহর পৃথিবীর সব থেকে শীতল শহর। এই শহরের তাপমাত্রা বছরের সাত মাসই শূন্য ডিগ্রি এর নিচে থাকে। আর এই শহরের জনসংখ্যা মাত্র ৪০০ জন।
সব থেকে ঝড় বাতাস বহূল অঞ্চলঃ
সব থেকে ঝড় বাতাস বহূল অঞ্চলঃ
এন্টার্টিকার "কমন ওয়েলথ" সমূদ্র সৈকত সব থেকে ঝড় বাতাস বহূল অঞ্চল। এই অঞ্চলের বাতাস ২৪০ কিমি প্রতি ঘন্টার গতীতে বয়ে চলে।
উচ্চতম জলপ্রপাতঃ
উচ্চতম জলপ্রপাতঃ
ভেনেজুয়েলার "এঞ্জেল জলপ্রপাত" হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে উচ্চতম জলপ্রপাত। এটি এতটাই উচ্চতায় অবস্থিত যে এর পানি নিচে পরার আগেই বাস্পে পরিনত হয়। এই জলপ্রপাতের উচ্চতা ৩,২১১ ফুট।
দীর্ঘতম পাহাড়ের রাস্তাঃ
দীর্ঘতম পাহাড়ের রাস্তাঃ
মার্চমিক নামের এই রাস্তা ভারতের উত্তর অঞ্চলে অবস্থিত। এটি পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে চলে যাওয়া সব থেকে দীর্ঘতম রাস্তা। এটি ৫,৫৮২ ফুট লম্বা রাস্তা।
বৃহত্তম সাদু পালির লেকঃ
বৃহত্তম সাদু পালির লেকঃ
আমেরিকা এবং ক্যানাডার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা "সুপিরিয়র লেক" বিশ্বের সব থেকে বড় সাধু পানির লেক। এটি ৩১,৮২০ স্কয়ার মাইল দীর্ঘ।
দীর্ঘতম সমুদ্র পাড়ঃ
দীর্ঘতম সমুদ্র পাড়ঃ
ক্যানাডায় অবস্থিত এই সমুদ্র পাড়ের দৈর্ঘ ১,৫১,০১৯ মাইল। আপনি যদি এই সমুদ্র পাড় ধরে হাঁটা শুরু করেন আর দিনে যদি ২০ মাইল করে অতিক্রম করতে সক্ষম হন তাহলে সম্পূর্ন সমুদ্র পাড় ধরে হাটতে আপনার সময় লাগবে ৩৩ বছর।
গভীরতম গিরি খাদঃ
গভীরতম গিরি খাদঃ
এন্টার্টিকার "ল্যাম্বার্ট ফিশার" হচ্ছে সব থেকে বড় হিমবাহ। এর বিস্তার প্রায় ১০০ মাইল জুড়ে।
ক্ষুদ্রতম নদীঃ
ক্ষুদ্রতম নদীঃ
মন্টানার "রো" নদী হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে ক্ষুদ্রতম নদী। আর এই নদীর দৈর্ঘ মাত্র ২০০ মিটার।
গভীরতম স্থানঃ
গভীরতম স্থানঃ
"মারিয়ানা ট্রেঞ্চ" হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে গভীরতম স্থান। আর উপরের এই যন্ত্রটি হচ্ছে একমাত্র যন্ত্র যা এই গভীরতম স্থানে যেতে সক্ষম।
লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন