অ্যালফ্রেড ওয়েজেনার (Alfred Wegener) নামে এক ভদ্রলোক ছিলেন। জার্মানির এই ভদ্রলোক ছিলেন খুব কৌতুহলী, রাস্তার হাঁটার সময় চারপাশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন। রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতেন আবহাওয়ার কথা, নক্ষত্রের কথা, মহাকাশের কথা, সাগরের দিকে তাকিয়ে ভাবতেন, কি আছে ওর তলায়? পৃথিবীর মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে ভাবতেন, ও জিনিস কি সব সময়ই এরকম ছিলো?
১৯১১ সালের একদিনের ঘটনা, অ্যালফ্রেড লাইব্রেরিতে বসে পড়াশোনা করছিলেন, হঠাৎ এক সময় খেয়াল করলেন একটা বইতে পৃথিবীর নানা দেশে প্রাপ্ত ফসিলের কথা দেওয়া হয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে, ওই বইতে লেখা আটলান্টিকের দু’পাশের দুটো দেশে প্রাপ্ত ফসিল একই প্রজাতির ডায়নোসোর আর গিরগিটি’র। একই প্রজাতির ডায়নোসোরের ফসিল পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে পাওয়া গেছে। সে স্থানগুলো শুধু আটলাণ্টিক মহাসাগরের দুপ্রান্তে বলা ভুল হবে। বলা উচিত পৃথিবীর এমাথা আর ও মাথায়। মাঝখানে বিরাট বিরাট সাগর। এ কি করে সম্ভব?
১৯১১ সালের একদিনের ঘটনা, অ্যালফ্রেড লাইব্রেরিতে বসে পড়াশোনা করছিলেন, হঠাৎ এক সময় খেয়াল করলেন একটা বইতে পৃথিবীর নানা দেশে প্রাপ্ত ফসিলের কথা দেওয়া হয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে, ওই বইতে লেখা আটলান্টিকের দু’পাশের দুটো দেশে প্রাপ্ত ফসিল একই প্রজাতির ডায়নোসোর আর গিরগিটি’র। একই প্রজাতির ডায়নোসোরের ফসিল পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে পাওয়া গেছে। সে স্থানগুলো শুধু আটলাণ্টিক মহাসাগরের দুপ্রান্তে বলা ভুল হবে। বলা উচিত পৃথিবীর এমাথা আর ও মাথায়। মাঝখানে বিরাট বিরাট সাগর। এ কি করে সম্ভব?


সেই বইতে লেখক এর একটা ব্যাখ্যাও দেবার চেষ্টা করেছিলেন। তার বক্তব্য হচ্ছে, হয়তো আদি পৃথিবীতে মহাসগার গুলোর মাঝে চলাচলের জন্য কোন রাস্তা ছিলো, নয়তো আদি কালে পৃথিবীর সমস্ত স্থলভূমি একসাথে সংযুক্ত ছিলো, সেই সংযুক্ত স'লভূমিতে বিরাট বিরাট ডায়নোসোর হাঁটাহাটি করতো, দৌঁড়াদোড়ি করতো। এ ধারণাটা পছন্দ হলো অ্যালফ্রেডের। তার মনে হলো, “হ্যাঁ তাইতো, একসময় তো দুনিয়ার তামাম স্থলভাগ এক সাথে মিলে মহা মহাদেশ তৈরি করে থাকতেই পারে।”
এরপর অ্যালফ্রেড খুব চিন্তাভাবনা করে একটি মানচিত্র আঁকলেন। সেখানে দেখা গেল বিশাল এক মহামহাসাগরের মাঝে পৃথিবীর সব মহাদেশ মিলে একটা মহামহাদেশ, এই মহামহাদেশের নাম তিনি দিলেন ‘প্যানজিয়া’, এই শব্দের অর্থ ‘সকল স্থলভূমি’। এই মানচিত্র আঁকার পর তিনি বললেন, “পৃথিবী দুইশো মিলিয়ন বছর আগে এরকমই ছিলো।” তিনি এ সম্পর্কে একটা তত্ত্বও দিয়ে ফেললেন। এই তত্ত্বের নাম ‘কন্টিনেন্টাল ড্রিফট’।
এরপর অ্যালফ্রেড খুব চিন্তাভাবনা করে একটি মানচিত্র আঁকলেন। সেখানে দেখা গেল বিশাল এক মহামহাসাগরের মাঝে পৃথিবীর সব মহাদেশ মিলে একটা মহামহাদেশ, এই মহামহাদেশের নাম তিনি দিলেন ‘প্যানজিয়া’, এই শব্দের অর্থ ‘সকল স্থলভূমি’। এই মানচিত্র আঁকার পর তিনি বললেন, “পৃথিবী দুইশো মিলিয়ন বছর আগে এরকমই ছিলো।” তিনি এ সম্পর্কে একটা তত্ত্বও দিয়ে ফেললেন। এই তত্ত্বের নাম ‘কন্টিনেন্টাল ড্রিফট’।
অ্যালফ্রেড নিজে পেশায় ছিলেন জ্যোতির্বিদ। তাই তার এই তত্ত্ব অন্য বিজ্ঞানীরা মেনে নিতে পারলেন না। তারা অ্যালফ্রেডকে বললেন, “তুমি ভায়া তারা, নক্ষত্র নিয়েই থাকো। তোমার আবার ভূ-বিদ্যা কপচানোর কি দরকার?” তারা অ্যাফ্রেডকে বাঁকা কথা শোনাতেও ছাড়লেন না। তারা দল বেঁধে বললেন, “তোমার কথা বিশ্বাস করলে বলতে হবে দুনিয়ার স্থলভাগ সাগরের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করে জায়গা বদল করেছে।”
অ্যালফ্রেড তত্ত্ব দেওয়ার বেশ কিছু দিন পর, ১৯৫০ সালের দিকে প্রযুক্তির বেশ উন্নতি ঘটে। এ সময় সাগর তলের ছবি তোলার যন্ত্রপাতিও তৈরি হয়। তাতে জাহাজে চেপে পুরো পৃথিবীর সাগর চষে বেড়িয়ে তোলা হয়েছিলো সাগর তলের ছবি। তাতে একটা অবাক বিষয় বেরিয়ে এলো। দেখা গেল, সাগরের জলের নীচে বিশাল পর্বতমালার এক লাইন পুরো ছেচল্লিশ হাজার মাইল জুড়ে ছড়ানো। এই লাইন পৃথিবীর চারপাশ ঘিরে রেখেছে। শুরু হলো নতুন নতুন সব আবিস্কার, ভূতত্ত্ববিদরা এবার টের পেলেন অ্যালফ্রেড ঠিকই বলেছিলেন, পৃথিবীর বর্তমান মহাদেশগুলো আগে আলাদা আলাদা ছিলো না, একসাথে লেগে ছিলো।
অ্যালফ্রেড তত্ত্ব দেওয়ার বেশ কিছু দিন পর, ১৯৫০ সালের দিকে প্রযুক্তির বেশ উন্নতি ঘটে। এ সময় সাগর তলের ছবি তোলার যন্ত্রপাতিও তৈরি হয়। তাতে জাহাজে চেপে পুরো পৃথিবীর সাগর চষে বেড়িয়ে তোলা হয়েছিলো সাগর তলের ছবি। তাতে একটা অবাক বিষয় বেরিয়ে এলো। দেখা গেল, সাগরের জলের নীচে বিশাল পর্বতমালার এক লাইন পুরো ছেচল্লিশ হাজার মাইল জুড়ে ছড়ানো। এই লাইন পৃথিবীর চারপাশ ঘিরে রেখেছে। শুরু হলো নতুন নতুন সব আবিস্কার, ভূতত্ত্ববিদরা এবার টের পেলেন অ্যালফ্রেড ঠিকই বলেছিলেন, পৃথিবীর বর্তমান মহাদেশগুলো আগে আলাদা আলাদা ছিলো না, একসাথে লেগে ছিলো।
ঠিক কি কারণে পৃথিবীর স'লভাগ জায়গা বদল করছে বলতে পারেন?
বিজ্ঞানীরা প্লেট টেকটোনিক্স তত্ত্বের মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা করেছেন। পৃথিবীর উপরিভাগে বেশ কয়েক জায়গা ফাঁটল আছে। ফাঁটল যুক্ত বহিস্তরকে বলা হয় প্লেট। পৃথিবীতে এরকম মোট বারোটি প্লেট আছে। এই ফাঁটল বরাবর মাটির নীচে সোজা ষাট মাইল নেমে গেলে গরম পাথরের একটা ঘন স্তর পাওয়া যায়।
এ স্তর উপরের প্লেটের তুলনায় অনেক নরম। নরম এই স্তরের উপর প্লেট গুলো ভেসে আছে। সুপের বাটিতে চিপস দিলে যেমন করে ভেসে তাকে অনেকটা ঐরকম।
বিজ্ঞানীরা প্লেট টেকটোনিক্স তত্ত্বের মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা করেছেন। পৃথিবীর উপরিভাগে বেশ কয়েক জায়গা ফাঁটল আছে। ফাঁটল যুক্ত বহিস্তরকে বলা হয় প্লেট। পৃথিবীতে এরকম মোট বারোটি প্লেট আছে। এই ফাঁটল বরাবর মাটির নীচে সোজা ষাট মাইল নেমে গেলে গরম পাথরের একটা ঘন স্তর পাওয়া যায়।
এ স্তর উপরের প্লেটের তুলনায় অনেক নরম। নরম এই স্তরের উপর প্লেট গুলো ভেসে আছে। সুপের বাটিতে চিপস দিলে যেমন করে ভেসে তাকে অনেকটা ঐরকম।
নিজের অক্ষের উপর পৃথিবী যখন ঘোরে তখন এর ভেতরের সেই নরম স্তরও নড়ে। সেই নড়াচড়া সে একা করে না, উপরে ভেসে থাকা প্লেট গুলিকে নিয়ে করে। তাই স্থলভুমি ক্রমাগত একে অপরের কাছ থেকে সরে যাচ্ছে।
প্লেট টেকটোনিক্স তত্ত্ব অনুযায়ী পৃথিবী কিন্তু এখনও থেমে নেই। পৃথিবী এখনও বদলাচ্ছে। এখন আমরা পৃথিবীর যে চেহারা দেখতে পাচ্ছি, তা একসময় এরকম ছিলো না। ভবিষ্যতেও এরকম থাকবে না।
আজ থেকে হয়তো একশো মিলিয়ন বছর পর দেখা যাবে, ইংল্যান্ড আমাদের দেশের পাশে চলে এসেছে। ভারত চলে গেছে ইংল্যান্ডের জায়গায়।
লেখকঃ মানিক চন্দ্র দাস।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
প্লেট টেকটোনিক্স তত্ত্ব অনুযায়ী পৃথিবী কিন্তু এখনও থেমে নেই। পৃথিবী এখনও বদলাচ্ছে। এখন আমরা পৃথিবীর যে চেহারা দেখতে পাচ্ছি, তা একসময় এরকম ছিলো না। ভবিষ্যতেও এরকম থাকবে না।
আজ থেকে হয়তো একশো মিলিয়ন বছর পর দেখা যাবে, ইংল্যান্ড আমাদের দেশের পাশে চলে এসেছে। ভারত চলে গেছে ইংল্যান্ডের জায়গায়।
লেখকঃ মানিক চন্দ্র দাস।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন