স্ট্রিং থিওরি ।। String Theory

আলবার্ট আইনস্টাইনের ডেস্ক
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন মারা যাবার পর, বিশ্বের সব পত্রিকায়ই একটি অগোছালো ডেস্কের ছবি ছাপা হয়। ডেস্কটি স্বয়ং আলবার্ট আইনস্টাইনের। ডেস্কের ছবির সাথে পত্রিকার শিরোনাম করা হয়, “The unfinished manuscript of the greatest work, of the greatest scientist of our time”। পুরো বিশ্বই তখন এই কিংবদন্তী বিজ্ঞানীর আলোচনায় মুখর। কিন্তু বিজ্ঞানে আগ্রহী যেকোনো লোকেরই কৌতূহলো জাগবে, কী সেই অসমাপ্ত কাজ? আর কেনই বা তার মতো একজন কিংবদন্তী বিজ্ঞানী তা শেষ করে যেতে পারলেন না? আইনস্টাইন তার জীবনের শেষ ৩৫ বছর এই অসমাপ্ত কাজ শেষ করার চেষ্টা করে গেছেন, কিন্তু কোনোভাবেই কুল-কিনারা করতে পারেননি। সাধারণ মানুষের কাছে তাই সবচেয়ে বড় ধাঁধা ছিল, কী এমন কাজ যা আইনস্টাইনের মতো একজন বিজ্ঞানীও শেষ করে যেতে পারলেন না!

আইনস্টাইন বেঁচে থাকতেই তার নামে অনেক মিথ প্রচলিত ছিল। বেশিরভাগ মানুষেরই ধারণা ছিল, তিনি মহাবিশ্ব সম্পর্কে এমন কিছু বুঝতে সক্ষম যা সাধারণ মানুষ কখনই বুঝতে পারবে না। তার আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়েও অনেক কল্পকাহিনী প্রচলিত ছিল। তবে এটিও সত্য যে, সে সময়ে তার “আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব” বোঝার মতো লোক খুব কমই ছিল। বিজ্ঞানী এডিংটন ছিলেন তার আপেক্ষিক তত্ত্বের একজন জোরালো সমর্থক। জনপ্রিয় বিজ্ঞান ও আপেক্ষিক তত্ত্বের বক্তৃতা দিয়ে ততদিনে তার বেশ সুনামও হয়ে গেছে। একদিন এডিংটনকে বলা হলো, “আপনি সহ মোট তিনজন ব্যক্তি আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব বুঝতে পারে”। একথা বলার পর এডিংটন কিছুক্ষণ কোনো কথা বললেন না। তখন সবার মনে হয়েছিল, এডিংটন বুঝি বিনয় দেখিয়ে চুপচাপ আছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে এডিংটন বলল, “আসলে আমি ভেবে পাচ্ছিনা, তৃতীয় ব্যক্তিটি কে?”।

এডিংটনের পরবর্তী সময়ের কারো মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, কেমন সেই তত্ত্ব, আইনস্টাইনের মতো লোকও যার সমাধান করতে চেয়ে সুবিধা করতে পারেননি! তিনি যে তত্ত্বের জন্য তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে গেছেন তার নাম- ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরি (Unified Field Theory) বা “সমন্বিত ক্ষেত্র তত্ত্ব”। তিনি এমন একটি তত্ত্ব গঠন করতে চেয়েছিলেন, যা প্রকৃতির জানা সকল বল ও ঘটনাকে ব্যাখ্যা করতে পারে; এমন একটি সমীকরণ, যা দিয়ে প্রকৃতির সবকিছু বর্ণনা করা যায়।

বিজ্ঞানীরা কিন্তু আইনস্টাইনের এই চিন্তাকে তেমন একটা গুরুত্ব দেননি। সে সময়ের বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, এমন কোনো তত্ত্বের খোঁজ করা সময় নষ্ট ছাড়া বেশি কিছু না। মূলত আইনস্টাইন ছিলেন তার সময়ের চেয়ে অনেক অগ্রগামী। তার সময়ের বিজ্ঞানীরা এমন একটি তত্ত্বের গুরুত্বই বুঝতে পারেনি। কিন্তু আইনস্টাইন মারা যাবার দশক দুয়েক পরেই বেশ কিছু বড়সড় পরিবর্তন আসে। ষাটের দশকের কাছাকাছি সময়ে উন্নত থেকে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে পরমাণুর জগত ও মহাকাশের অনেক রহস্য উন্মোচিত হতে থাকে। এসময় তাদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় এমন একটি তত্ত্ব নির্মাণ করা, যা প্রকৃতির সবগুলো বলকে একীভূত করতে পারে। মূলধারার গবেষকরা বুঝতে পারেন প্রকৃতিতে যে চারটি মৌলিক বল আছে, তাদের একীভূত না করতে পারলে নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না। আর প্রকৃতিকেও বোঝা সম্ভব না। আইনস্টাইনের স্বপ্নের “ইউনিফাইড ফিল্ড থিওরি” তখন বিজ্ঞানীদের বাস্তব প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়।

আর এখানেই বাধে সমস্যা। তিনটি বলকে একীভূত করা গেলেও, মহাকর্ষকে কোনোভাবেই অন্য বলগুলোর সাথে একীভূত করা সম্ভব হচ্ছিল না। আইনস্টাইনের সময় নিউক্লীয় বলগুলো সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা ছিল না। তাই সে সময় কোনো চূড়ান্ত একীভূত তত্ত্ব গঠন করাটা একরকম অসম্ভব ছিল।

কোয়ান্টাম মেকানিক্সের যুগান্তকারী সফলতার পর একে একে তিনটি বলের জন্যই কোয়ান্টাম তত্ত্ব গঠন করা হয়। কিন্তু মহাকর্ষের বিষয়টিই আলাদা। এই বলের কোয়ান্টাম তত্ত্ব গঠন করার জন্য বিজ্ঞানীরা শত চেষ্টা করেও সফল হতে পারেননি। কিন্তু আইনস্টাইনের মহাকর্ষ তত্ত্বকে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে সমন্বিত করতে না পারলে তো আইনস্টাইনের স্বপ্নের “একীভূত ক্ষেত্রতত্ত্ব” গঠন করা যাবে না!

পুরো বিশ্বজগতকে ব্যাখ্যা করার জন্য আমাদের হাতে এখন দুটি তত্ত্ব আছে। একটিকে বলা যায় বড়দের তত্ত্ব; আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব। অন্যটিকে বলা যায় ছোটদের তত্ত্ব; কোয়ান্টাম মেকানিক্স। আপেক্ষিক তত্ত্বের সাহায্যে বৃহৎ জগতের সবকিছুই নিখুঁতভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। গ্রহ-নক্ষত্র, সৌরজগৎ, ছায়াপথ, নীহারিকা, ব্ল্যাক হোল, হোয়াইট হোল, মহাবিশ্বের প্রসারণ এমনকি বিগ ব্যাং। আর পরমাণু, অতি-পারমাণবিক কণিকা- ইলেকট্রন, কোয়ার্ক, নিউট্রিনো, মেসন সহ আরও অনেক অতিক্ষুদ্র কণিকাদের জগতকে ব্যাখ্যা করে কোয়ান্টাম মেকানিক্স।

দুটি তত্ত্বই আলাদাভাবে মহাবিশ্বের সকল ভৌত ঘটনার ব্যাখ্যা করতে পারে। কিন্তু দুটি একসাথে কখনোই নয়। মূলত এই দুটি তত্ত্ব সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারণার উপর গড়ে উঠেছে। দেখলে মনে হবে যেন, একটি সঠিক হলে অন্যটি সঠিক হতে পারে না। কিন্তু দুটো তত্ত্বই সকল প্রকার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় ইতিমধ্যেই নির্ভুল প্রমাণিত। বিজ্ঞানীরা যখন অতিক্ষুদ্র কোনো কিছুর আচরণ ব্যাখ্যা করেন তখন তারা কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাহায্য নেন। আবার বড় থেকে শুরু করে অতি-বৃহৎ কিছুর আচরণ ব্যাখ্যা করার জন্য আপেক্ষিক তত্ত্বকে কাজে লাগান।

সমস্যা হলো, এভাবে কিন্তু সব কিছুর ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। যেমন, ব্ল্যাকহোলের কথাই ধরা যাক। ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রে কী ঘটছে তা জানার জন্য আমাদের আপেক্ষিক তত্ত্ব ও কোয়ান্টাম মেকানিক্স দুটোই ব্যবহার করতে হবে। কারণ ব্ল্যাকহোলের প্রচণ্ড ভর, স্থান-কালকে এমনভাবে বাঁকিয়ে দেয় যে, সেখানে আপেক্ষিক তত্ত্বের সমীকরণ ভেঙ্গে পড়ে। আর ব্ল্যাকহোলের ভেতরটায় পদার্থ কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে না; ভেঙ্গে চুরে এমন অবস্থায় থাকে যে, কোয়ান্টাম মেকানিক্স ছাড়া সেই অবস্থা ব্যাখ্যা করা সম্ভব না। তবে এত বিশাল ভরের বস্তুকে ব্যাখ্যা করার জন্য’তো আপেক্ষিক তত্ত্বেরও দরকার। ফলে এমন পরিস্থিতিতে আমাদের একই সাথে কোয়ান্টাম মেকানিক্স ও আপেক্ষিক তত্ত্ব দুটোরই প্রয়োজন হয়।

আবার সৃষ্টির একদম শুরুতেও আপেক্ষিকতার তত্ত্বের সমীকরণগুলো কাজ করে না। শুরুটা ছিল একই সাথে একটি কোয়ান্টাম ঘটনা ও স্থান-কালের বক্রতার সৃষ্ট। সেই সময়টা ব্যাখ্যা করার জন্য আমাদের দুটি তত্ত্বকে একইসাথে প্রয়োগ করতে হবে। তাই বোঝাই যাচ্ছে মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য বুঝতে হলে একটি একীভূত তত্ত্বের কোনো বিকল্প নেই।

পদার্থের গঠনের মৌলিক একক- স্ট্রিং
এই একীভবনের বিষয়টি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানের ইতিহাস মূলত অনেকগুলো সফল একীভবনের ইতিহাস। একজন সাধারণ মানুষ কখনোই চাদের ঘূর্ণন ও আপেল মাটিতে পড়ার মাঝে কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাবে না। কিন্তু বিজ্ঞানের কাজ হলো ঘটনার পেছনের কারণ খুঁজে বের করা। নিউটন যখন পৃথিবীর বস্তুদের গতি ও মহাকাশের গোলকদের গতিকে একীভূত করে মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রস্তাব করেন, তখন থেকেই বিজ্ঞান সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মাত্রা পায়।

বিদ্যুৎ, চুম্বক ও আলোকে একসময় আলাদা মনে করা হতো; আর এদের কাজে লাগিয়ে তেমন কিছুই আমরা করতে পারতাম না। কিন্তু হেন্স ক্রিশ্চিয়ান ওরস্টেড দেখতে পেলেন যে- তড়িৎ প্রবাহের ফলে চুম্বক শলাকা প্রভাবিত হয়। পরে মাইকেল ফ্যারাডে প্রমাণ করে দেখান যে, পরিবর্তনশীল চুম্বক প্রবাহের কারণে তড়িৎ শক্তি উৎপন্ন হয়। জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল এই দুই শক্তিকে একীভূত করে এক মৌলিক বলের সন্ধান দেন, যাকে আজ আমরা তড়িৎ-চুম্বক শক্তি বলে জানি। তার থেকে জানা যায়- যখন তড়িৎ ক্ষেত্র ও চৌম্বক ক্ষেত্রকে আন্তঃপরিবর্তন করা হয়, তখন একটি তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। আর এমন একটি তরঙ্গই হলো আলো। দেখা যাচ্ছে, একেকটি সফল একীভবনের ফলে আমরা প্রকৃতির আরও গভীরে প্রবেশ করছি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন- চারটি মৌলিক বলকে একীভূত করে যে চূড়ান্ত একীভবন হবে, তা আমাদের সৃষ্টির রহস্য উন্মোচন করে দেবে।

তবে কাজটি কিন্তু মোটেই সহজ নয়। এ পর্যন্ত অনেক তত্ত্বের সাহায্যে মহাকর্ষের একটি কোয়ান্টাম রূপ গঠন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এসব গণনা থেকে সবসময়ই কিছু ত্রুটিপূর্ণ ও অসীম মান পাওয়া যায়। তাই গত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ধাঁধা ছিল মহাকর্ষের জন্য একটি কোয়ান্টাম তত্ত্ব গঠন করা।

অবশেষে আবির্ভূত হয় স্ট্রিং থিওরি। এই তত্ত্ব প্রকৃতির বলগুলোকে সফলভাবে একীভূত করার পাশাপাশি মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। এই তত্ত্ব মতে ইলেকট্রন, কোয়ার্কের মতো মৌলিক কণিকাদের আমরা মাত্রা-বিহীন বিন্দুর মতো ভাবলেও এগুলো আসলে তেমন নয়। আমাদের দৃষ্টির সীমাবদ্ধতার কারণে এদেরকে আমরা বিন্দু হিসেবে দেখি। যদি এদেরকে কোনো সুপার মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে বহুগুণে বিবর্ধিত করা সম্ভব হয় (প্রায় বিলিয়ন বিলিয়ন গুন বেশি) তাহলে আমরা এদেরকে একমাত্রিক লম্বা সুতার আকারে দেখব। স্ট্রিং তত্ত্ব অনুসারে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সকল মৌলিক কণিকাই আসলে এরকম সুতা। এসব সুতা আবার বিভিন্ন কম্পাঙ্কে কাঁপছে। এসব সুতার কম্পাংকের ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন রকম বৈশিষ্ট্যের মৌলিক কণিকা সৃষ্টি হয়। সুতার কম্পনের পার্থক্যই এসব কণিকার আধান, ভর নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে। আর এসব সুতার বলবিদ্যা স্টাডি করে অন্য বৈশিষ্ট্যগুলোও বের করা যাবে। সহজভাবে বললে, গিটারের তারের কম্পাঙ্কের পার্থক্যের কারণে যেমন চিকন মোটা সুর বের হয় (আলাদা নোট বাজে) তেমনি এসব স্ট্রিং এর কম্পনের পার্থক্যের কারণে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কণিকা দেখা মিলছে।

এই স্ট্রিংগুলোর দৈর্ঘ্য অস্বাভাবিক রকম ক্ষুদ্র, ১০^-৩৩ সে.মি.। এই ক্ষুদ্র তারগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এদের কম্পনের ধরন। ইলেকট্রনের তারগুলো হয়তো একভাবে কাঁপছে, আবার কোয়ার্কের তারগুলো হয়তো ভিন্নভাবে কাঁপছে। এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো, প্রত্যেকটি মৌলিক কণিকাদের জন্য কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন তার বরাদ্দ নেই। মানে ইলেকট্রনের তারগুলো এক রকম, নিউট্রিনোর তারগুলো আরেক রকম, এমন কিছু নয়। বরং একই তার ভিন্ন ভিন্নভাবে কেঁপে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কণিকা হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

সব মৌলিক কণিকাই যদি স্ট্রিং হয় তাহলে আমাদের চেনাজানা বাস্তবতার চিত্রটিই কিন্তু পাল্টে যাবে। এই চিত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসিদ্ধান্ত হলো, মৌলিক কণিকা বলে আসলে কিছু নেই। কারণ কোয়ার্ক বা নিউট্রিনোর মতো সব মৌলিক কণিকাই আসলে অভিন্ন স্ট্রিং দিয়েই তৈরি। তাই একমাত্র মৌলিক সত্তা হলো স্ট্রিং, যা থেকেই মহাবিশ্বের সকল বস্তু ও শক্তির সৃষ্টি। বিজ্ঞানীরা যখন প্রথমবারের মতো স্ট্রিংগুলোর আচরণ নিয়ে গবেষণা করছিলেন তখন দেখতে পেলেন, স্থান-কালের মধ্যে স্ট্রিংগুলো ইচ্ছা মতো চলাফেরা করতে পারে না। বরং সুনির্দিষ্ট কিছু গাণিতিক নিয়ম মেনে এরা স্থান-কালের মধ্যে কিছুর জটিল গতির সৃষ্টি করে। স্ট্রিংগুলোর এসব গতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তো বিজ্ঞানীদের চোখ একেবারে কপালে। আর তা হবেই বা না কেন? স্ট্রিংগুলোর আচরণ থেকেই আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সমীকরণ এমনিতেই বেরিয়ে আসছে! অন্যভাবে বললে বলা যায়, আইনস্টাইন যদি কখনো আপেক্ষিকতার তত্ত্ব আবিষ্কার না’ও করতেন তবুও স্ট্রিং তত্ত্ব থেকে আমরা তা জানতে পারতাম। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আপেক্ষিক তত্ত্বও আসলে মৌলিক কোনো তত্ত্ব নয়।

অন্যদিকে পরমাণু, অতি-পারমাণবিক কণিকা ও এদের আচরণ ব্যাখ্যা করার জন্য বিজ্ঞানীরা “স্ট্যান্ডার্ড মডেল” (Standard Model of Particle Physics) এর সাহায্য নিয়ে থাকেন। স্ট্যান্ডার্ড মডেল অতি-পারমাণবিক কণিকাদের আচরণ ব্যাখ্যা করার ব্যাপারে খুবই সফল। এখন মজার বিষয় হলো, আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের মতো স্ট্যান্ডার্ড মডেলকেও শুধুমাত্র স্ট্রিং তত্ত্বের নীতিগুলো থেকেই প্রতিপাদন করা যায়।

লেখকঃ হিমাংশু কর
hybridknowledge.info

৭টি মন্তব্য:

  1. ধন্যবাদ, খুব সহজে স্ট্রিং সম্পর্কে সামান্য কিছু (আমার কাছে অসামান্য) জানলাম

    উত্তরমুছুন
  2. স্ট্রিং থিওরির উপর বাংলায় কোনো বই আছে? অথবা অন্য ভাষার কোনো বই এর বাংলা অনুবাদ?

    উত্তরমুছুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info