বিশ্বের শীতলতম গ্রাম ।। The Coldest Village On Earth

হীমহীম ঠান্ডায় সকলেই জমে গেছেন নিশ্চয়ই, আহ!! ভীষণ ঠান্ডা বাইরে, একটু বাইরে বের হতে চাইলেই শীতকালীন সোয়েটার বা জ্যাকেট পরে বের হওয়া বাদে যেন কোন উপায় নেই। যা হোক এই শীতকালে চলুন আমরা ঘুরে আসি পৃথিবীর সব থেকে শীতল গ্রাম থেকে। এই গ্রামের নাম Oymyakon, আর এই গ্রাম রাশিয়ার ছোট একটি গ্রাম। এই গ্রামের ছবি গুলি তুলেছেন 'Amos Chapple' নামের একজন ফটোগ্রাফার। আর তার ছবিতেই আমরা ঘুরে দেখব বিশ্বের শীতলতম এই গ্রাম। তাহলে চলুন শুরু করা যাক,


এই রাস্তার নাম 'Road of Bones', আর একমাত্র এই রাস্তা দিয়েই প্রবেশ করতে হয় Oymyakon গ্রামে।


গ্রামে প্রবেশের মূহুর্তে দেখতে পাবেন গ্রামের নামসহ একটি পোল (Pole)। এখানে লেখা 'Oymyakon, The Pole Of Cold'।


কেবল-তো ঠান্ডা লাগা শুরু হল, একটু পরে জমে বরফ হয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান।


এই গ্রামের সাধারন তাপমাত্রা -৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস অথবা -৬০ ডিগ্রী ফারেনাইট।


পাথরের মূর্তি জমে প্রায় বরফ হয়ে গেছে।


এই গ্রামের লোকজন ঘরের বাইরে খোলা জায়গায় মল-মূত্র ত্যাগ করে। কেননা এখানের তাপমাত্রা এতই শীতল যে এখানে কোন প্রকার ড্রেন তৈরি করাই সম্ভব না, কেননা তা জমে বরফে পরিনত হয়।


বাজারে গেলে জমে যাওয়া প্রানি আর মাছ পাবেন অহরহ। এগুলি জমে অনেকটা পাথরের মত শক্ত হয়ে যায়। আর যেহেতু এই মাংস বা মাছ সংরক্ষনের জন্য কোন আলাদা ফ্রিজ ব্যাবহারের প্রয়োজন হয় না, তাই বলাই যায় দোকানদারের ফ্রিজের বিদ্যুতের পিছু কোন খরচই হয় না।


ঠান্ডার মধ্যে গরু গুলোকে দেখলেও কেমন জানি মায়া লাগে আর রাখাল তার কষ্টোতো আরো বেশি। কেননা নেকড়ের হামলা ঠেকাতে সব সময় তাকে ঘুরেবেড়াতে হয় এই গরু গুলির পিছে।


এটি গরু গুলির জন্য বানানো গোয়াল ঘর, এখানে তাপমাত্রা অন্তত্য বাইরের থেকে অনেক বেশি।


গাড়ি থামিয়ে একটু দোকানে ঢুকবেন, খবরদার গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধো করেবেন না। তাহলে এই খোলা আকাশের নিচে আর গাড়ি কোন দিন চালু হবে না। কেননা ষ্টার্ট বন্ধো করার সাথে সাথে-ই গাড়ির ইঞ্জিন এমন ঠান্ডা হবে যে আপনি আর ষ্টার্ট দিতে পারবেন না। আর গড়ি রাখার গ্যারেজ ঘর যান্ত্রিক উপায়ে উষ্ণ রাখা হয়, যাতে বাইরে বের হবার আগে গাড়ি অন্তত্য ষ্টার্ট দেওয়া যায়।


গ্রামটিতে অবস্থিত গুটি কয়েক দোকান।


গ্রামে অবস্থিত একমাত্র কয়ালা চালিত উত্তাপ উৎপাদন যন্ত্র। এর মাধ্যমেই গ্রামের প্রতিটি ঘরে উষ্ণতা সর্বরাহ করা হয়। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছুই হয় না মনে হয়।


তাপ উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত একমাত্র বুল্ডোজার।


ঠান্ডা তো কি হয়েছে, একটু ফ্যাশন কি করা যাবে না?


এত ঠান্ডার মধ্যে নিশ্চয়ই অল্প দূরত্ব হেঁটে পারি দিতে অনেক কষ্টো হয়।


সাধারন জুতা পরে এই গ্রামে হাঁটার কথা চিন্তাও করবেন না, পা জমে বরফ হয়ে যাবে।


ছোট একটি গরম ট্রেলার।


যত ঠান্ডাই হোক না কেন এখানকার মানুষ গুলি কিন্তু বেশ সুখি এবং আনন্দের মাঝেই বেঁচে থাকে।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

৭টি মন্তব্য:

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info