সুন্দরবন

আমাদের দেশের জাতীয় বন কোনটা বলেন তো? হ্যাঁ, সুন্দরবন। এই বনটা শুধু আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় বনই না, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনও এটাই। ম্যানগ্রোভ বন মানে হল ম্যানগ্রোভ জাতের গাছদের বন। যে সব গাছেরা লোনা পানিতে জন্মায়, তাদের বলা হয় ম্যানগ্রোভ গাছ।

এই ম্যানগ্রোভ গাছগুলোর দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। একটি হল, এদের শ্বাসমূল থাকে। এদের মূল থেকে একটা ডালের মতো চিকন অংশ মাটি ভেদ করে উঠে আসে। জোয়ারের সময় যখন মাটির উপরে পানি জমে যায়, তখনো এই শ্বাসমূলগুলো পানির উপরে ভেসে থাকে। এই শ্বাসমূলগুলোর মাথায় এক ধরনের শ্বাসছিদ্র থাকে, যাদের বলে নিউমাটাপো। এর সাহায্যেই ম্যানগ্রোভ গাছেরা শ্বাস নেয়।

একটি গাছ কীভাবে জন্মায় জানেন? প্রথমে গাছে ফুল হয়, তারপর সেই ফুল থেকে হয় ফল। এই ফলের ভেতরে হয় বীজ। ফলের ভেতরে যে বিচি থাকে, সেগুলোই হল গাছের বীজ। এই বীজ মাটিতে পুঁতলে তবেই বীজের অঙ্কুরোদ্গম হয়, মানে বীজ থেকে গাছের চারা গজায়। এখন ম্যানগ্রোভ গাছগুলোর মজা কী জানেন? এই গাছগুলোর ফলের ভেতরেই বীজ থেকে চারা গজায়, মানে অঙ্কুরোদ্গম হয়ে যায়। আর বীজগুলো সূঁচালো হয়, ফলে গাছ থেকে বীজ খসে পড়ার সাথে সাথেই মাটিতে গেঁথে যায়। ফলে জোয়ারের পানিতেও বীজ ভেসে যায় না।


নাম কেন সুন্দরবন?
সুন্দরবনের নাম ‘সুন্দরবন’ হল কেন? তার আগে বলেন, সুন্দর বনে সবচেয়ে বেশি কোন গাছ পাওয়া যায়? সুন্দরী গাছ। আর তার থেকেই মনে হয় বনটির নাম হয়েছে সুন্দরবন। তবে ভিন্নমতও আছে। অনেকে বলেন, আগে এই বনের নাম ছিল ‘সমুদ্রবন’। আর সেই নামটিই পরে হয়ে গেছে ‘সুন্দরবন’। আবার অনেকে বলেন, স্থানীয় আদিবাসীরা বনটিকে ডাকত ‘চন্দ্র-বান্ধে’ নামে। আর সেই নামটিই বিকৃত হতে হতে হয়ে গেছে ‘সুন্দরবন’। আপনার কি মনে হয়, কোন গল্পটা সত্যি? বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু সুন্দরী গাছের গল্পকেই সত্যি বলে মানে।


সুন্দরবন এবং ইতিহাসঃ
মোটামুটি মুঘল আমল থেকে আমরা সুন্দরবনের ইতিহাস পাই। সম্ভবত ১২০৩ সালে প্রথমবারের মতো পুরো সুন্দরবন রাজার ইজারায় আসে। তখন থেকেই বনটি মুঘল রাজাদের অধীনে ছিল।

১৭৫৭ সালে বাংলার ইতিহাসে এক বড় পালাবদল ঘটে। হ্যাঁ, পলাশীর যুদ্ধে হেরে যান নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা। আর দুর্বল মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে বাংলার ইজারা নিয়ে নেয় বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। বাংলার সঙ্গে সঙ্গে তারা সুন্দরবনেরও ইজারা নেয়। আর ওরাই প্রথম সুন্দরবনের একটা মানচিত্র তৈরি করে।

বাংলা বৃটিশ সরকারের অধীনে চলে যায় কোন সালে বলেন তো? ১৮৫৬ সালে, সিপাহী বিদ্রোহের কাছাকাছি সময়ে। ওদিকে সুন্দরবন কিন্তু আরো আগেই চলে গিয়েছিল বৃটিশ সরকারের অধীনে, ১৮২৮ সালে। আর তার পরের বছরই এল টি হজেস নামের এক বৃটিশ ভদ্রলোক বনটিতে প্রথম জরিপ চালান।

১৮৬০ সালে বাংলায় বন বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকেই বনটিকে বন বিভাগের দায়িত্বে দেয়া হয়। কিন্তু সুন্দরবনে বন বিভাগের পুরো কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হতে ১৮৬৯ সাল পর্যন্ত লেগে যায়। তখনো অবশ্য সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবেই ঘোষণা করা হয়নি। তাই বন বিভাগও ঠিকমতো দেখাশুনা করতে পারছিল না। পরে ১৮৭৮ সালে বনটিকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা দিলে পরের বছর থেকেই সুন্দরবন শুধুই বন বিভাগের অধীনে চলে যায়।


তবে সুন্দরবনে জরিপ করা সবসময়ই ছিল খুবই কঠিন। কেন বলেন তো? আরে, এই বনটা যে ভয়ানক সব জীবজন্তুতে পরিপূর্ণ। ওখানে বাঘ আছে, কুমির আছে, অজগর সাপ আছে। তারপরও আগে যে জরিপগুলো হয়েছিল, তাতে এই বনের সীমানা হিসেবে বলা হয়েছিল পশ্চিমে হুগলী নদী থেকে পুবে মেঘনা নদী পর্যন্ত। আর মোট আয়তন হিসেব করা হয়েছিল ১৬,৯০২ বর্গ কিলোমিটার (বর্গ কি.মি.)।

শুধু আমাদের দেশেরই না; এই ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর ১৯৪৭ সাল। কারণ, সেই বছরে যে উপমহাদেশটিকেই ভাগ করা হলো; তা-ও কিনা ধর্মের ভিত্তিতে! সে যাই হোক, তখন বাংলা প্রদেশের হিন্দুপ্রধান অংশটা গেল ভারতের ভাগে, আর মুসলিমপ্রধান আমাদের অংশটা গেল পাকিস্তানের ভাগে। তাই সুন্দর এই বনটাও কাটা পড়লো। বড় অংশটা অবশ্য আমাদের ভাগেই এল; আমাদের ভাগে পড়লো ৬০%, ভারতের ভাগে পড়লো বাকী ৪০% এলাকা।


সুন্দরবনের আয়তনঃ
এখন সুন্দরবনের মোট আয়তন কতো বলতে পারবেন? অনেকেই তো চেঁচিয়ে বলবে, ৬,০১৭ বর্গ কিমি। উহু, সে হলো আমাদের দেশের সুন্দরবনের আয়তন। ভারতেও তো সুন্দরবনের একটা বড় অংশ থেকে গেছে। দুটো মিলিয়ে সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কি.মি.। তবে ইউনেস্কো আবার সুন্দরবনকে দু’ভাগ করে হিসেব করে; ওদের কথা অনুসারে আমাদেরটার নাম সুন্দরবন, আর ভারতের অংশটুকুর নাম সুন্দরবন ন্যাশনাল পার্ক। সেই হিসেবে অবশ্য আপনার কথায় কোনো ভুলই নেই!

আবার আমাদের দেশের সুন্দরবনের আয়তনের আরো একটা হিসেব আছে। এই ৬,০১৭ বর্গ কি.মি. তো পুরো বনটা। এরমধ্যে স্থলভাগ মোটামুটি ৪,১১০ বর্গ কি.মি.। আর নদী-খাল-খাঁড়ি মিলে জলভাগ মোটামুটি ১,৭০০ বর্গ কি.মি।


সুন্দরবনের গাছপালাঃ
সুন্দরবনের প্রধান গাছ কোনটা, সে তো আগেই বলে দিয়েছি- সুন্দরী গাছ। এছাড়াও গেওয়া, কেওড়া, গরান আর ধুন্দল গাছও ওখানে প্রচুর পাওয়া যায়। এছাড়া শন, নলখাগড়া, গোলপাতার মতো ঘাসজাতীয় উদ্ভিদও জন্মে প্রচুর। তবে মোটমাট কয় প্রজাতির গাছ যে ওই বনে আছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কারণ, আমাদের প্রিয় এই বনে যে ঠিকমতো জরিপই হয় না। আর এই বনে জরিপ করাও তো মুখের কথা না! শেষ বড়োসড়ো জরিপটি হয়েছিল এখন থেকে একশ’ বছরেরও আগে, ১৯০৩ সালে। তখনো বনটিতে প্রায় ৩৩৪ প্রজাতির গাছ ছিল।


সুন্দরবনের বনবাসীরাঃ
সুন্দরবনের পশুপাখির মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত পশুটির নাম শুধু আপনি কেন, সম্ভবত পৃথিবীর সবাই জানে- রয়াল বেঙ্গল টাইগার। তবে দিনদিন মানুষের আগ্রাসনে সুন্দরবন যেমন ছোট হয়ে যাচ্ছে, তেমনি কমে যাচ্ছে ওদের সংখ্যাও। বাঘ নিয়ে সর্বশেষ জরিপটি করা হয়েছিল ২০০৪ সালে। তাতে দেখা গেছে, এখন সুন্দরবনে মোট বাঘই আছে ৪৪০টি। তারমধ্যে ২৯৮টা মেয়ে বাঘ, ১২১টা ছেলে, আর বাকি ২১টা বাঘের বাচ্চা।

এছাড়া সুন্দরবনের অন্যান্য বিখ্যাত আর গুরুত্বপূর্ণ প্রাণীদের মধ্যে আছে হরিণ, বানর, মেছোবাঘ, লোনাপানির কুমির, কচ্ছপ, হাঙর, ডলফিন, শুশুক, বন্য শূকর, বনরুই, বনবিড়াল, শেয়াল আর গিরগিটি। এদের মধ্যে আবার হরিণ একটু বেশিই বিখ্যাত। বিশেষ করে কয়েক প্রজাতির হরিণ তো বেশ পরিচিত। ঐ যে মাথায় শুকনো গাছের ডালপালার মতো আঁকাবাঁকা শিংওয়ালা চিত্রা হরিণ, তারপর মায়াভরা চোখের মায়া হরিণ, আর শুধু ম্যানগ্রোভ বনেই দেখা যায় যেই হরিণদের- প্যারা হরিণ।


সুন্দরবনে কিন্তু খুব মজার মজার সব মাছ পাওয়া যায়। ওগুলো খেতেও যেমন মজা, দেখতেও তেমনই সুন্দর আর বৈচিত্র্যময়। আর ওদের নামগুলোও কত্তো সুন্দর! কয়েকটার নাম শোনোই না- পারশে, বাটা ভাঙান, ভাঙান, গুল বাটা, খরুল ভাঙান, খরশুলা বা খল্লা, কাইক্কা বা কাইকশেল, মেদ মাছ, বড় কান মাগুর, দাগি কান মাগুর, গুলশা ট্যাংরা, নোনা ট্যাংরা, শিলং, কাজলী, ভোল, গনগইন্যা, রেখা, গুটি দাতিনা, লাল দাতিনা, লাক্ষা (স্থানীয় নাম তাড়িয়াল), তপসে (স্থানীয় নাম রামশোষ), ঢেউয়া, মেনো (ডাহুক মাছ নামেও পরিচিত), ফ্যাসা, বৈরাগী। এগুলো তো গেলো লোনা পানির মাছেদের কথা। সুন্দরবনে কিছু মিঠা পানির বিল আছে, যেগুলোতে মিঠা পানির মাছও পাওয়া যায়। মিঠা পানির মাছগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় জিওল মাছ। এছাড়া কই, শিং, মাগুর, টাকি, শোল, ট্যাংরা, পুঁটি, খলসে, চ্যালা, দাঁড়কিনা, কুঁচো চিংড়ি, আরো কত্তো মাছ যে পাওয়া যায় এই বনের নদী- নালা- খাল- বিলে! তবে দিন দিন এসব মাছও কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ায় মিঠা পানির বিলগুলোতে ঢুকে পড়ছে সাগরের লোনা পানি। ফলে মিঠা পানির মাছদের বাসাও সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সুন্দরবনের নদী-নালাগুলো যেমন মাছে ভরা, তেমনি ওগুলোতে আছে বিষাক্ত আর বিষহীন নানা জাতের সাপও। আছে অজগরের মতো বিশালদেহী সাপ, আছে চন্দ্রবোড়া, রাজ গোখরা, যাকে ইরেজিতে বলে কিং কোবরা, গুঁইসাপ, সামুদ্রিক সাপের মতো বিষধর সাপ। আরো আছে হাঙ্গর, কুমির, ঘড়িয়াল। সুতরাং, সুন্দরবনে গিয়ে আবার মাছের লোভে নদীতে লাফ দিও না যেন!

সুন্দরবনে মোট কয় প্রজাতির পশুপাখি আছে জানেন? মাছ আছে প্রায় ১২০ প্রজাতির; পাখি আছে ২৭০ প্রজাতির; স্তন্যপায়ী, মানে যেই পশুদের বাচ্চারা মায়ের দুধ খায়, এরকম পশু আছে ৪২ প্রজাতির; সরীসৃপ, মানে যারা বুকে ভর দিয়ে চলে- কুমির, গিরগিটি, ওরা আছে প্রায় ৩৫ প্রজাতির; আর উভচর প্রাণী আছে প্রায় ৮ প্রজাতির। উভচর প্রাণী মানে যারা জলে-ডাঙায় দু’জায়গাতেই বেশ মজা করে বেঁচে-বর্তে থাকতে পারে। তবে এতোক্ষণ প্রাণীদের যে হিসেব দিলাম, সেখানে শুধু সেসব প্রাণীদেরই হিসেব আছে, যারা মানুষের কাজে লাগে। মানে, এমন আরো অনেক মাছ আছে, যে মাছ মানুষ খায় না। সুতরাং, তাদের হিসেব রাখা হয়নি। এরকম আরো পাখিও নিশ্চয়ই আছে। তাহলে চিন্তা করেন, এক সুন্দরবন কত্তো প্রাণীদের বাসা!

তবে এই প্রাণীরা সবাই যে সুন্দরবনে বেশ সুখে-শান্তিতে আছে, তা কিন্তু নয়। উল্টো সুন্দরবনও দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। একে তো মানুষ তাদের প্রয়োজনে বন কাটছে। আবার সাগরও দিন দিন উঁচু হয়ে সুন্দরবনকে গ্রাস করছে। ফলে ওদের সক্কলের বাসা- সুন্দরবনও ছোট হয়ে আসছে। আর সরকারের হিসেবে তো কিছু কিছু প্রাণীর অস্তিত্বই হুমকির মুখে। কিছুদিন পরে হয়তো ওদেরকে আর সুন্দরবনে খুঁজেই পাওয়া যাবে না। ওদের মধ্যে আছে ২ প্রজাতির উভচর, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৫ প্রজাতির পাখি আর ৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।


সুন্দরবনে অভয়ারণ্যঃ
অভয়ারণ্য বলতে বোঝানো হয়, এমন বন বা বনের এমন অংশকে, যেখানে গাছপালা ও পশুপাখিদেরকে মানুষের হাত থেকে নিরাপত্তা দেয়া হয়। মানে, ঐ বনে বা বনের ঐ অংশে অনুমতি ছাড়া শিকার করা কিংবা গাছ কাটা নিষেধ। এমনকি ওখানে যাতায়াত করাও নিষেধ। আপনাকে যেতে হলে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। এর মাধ্যমে বন থেকে অতিরিক্ত শিকার করা, অতিরিক্ত গাছ কাটা, এগুলো বন্ধ রাখা হয়।

আমাদের সুন্দরবনেও একরম ৩টি অভয়ারণ্য আছে- পূর্বাঞ্চলীয় সুন্দরবন অভয়ারণ্য, পশ্চিমাঞ্চলীয় সুন্দরবন অভয়ারণ্য আর দক্ষিণাঞ্চলীয় সুন্দরবন অভয়ারণ্য। এগুলোর মধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় অভয়ারণ্যে গাছপালার বৈচিত্র্য একটু বেশি। এখানে বেশি আছে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর, কেওড়া, সিংড়া, আমুর, গোলপাতা- এইসব গাছ আর ঘাসজাতীয় উদ্ভিদগুলো। আবার পশ্চিমাঞ্চলীয় অভয়ারণ্যে বেশি দেখা যায় গেওয়া, গরান আর হোন্তাল গাছ। আর দক্ষিণাঞ্চলীয় অভয়ারণ্যে বেশি দেখা যায় গেওয়া গাছ। অন্যান্য গাছ তেমন দেখা যায় না। এই অঞ্চলটিতে লবণাক্ততা একটু বেশি-ই তো, তাই। আর এই লবণাক্ততা আবার কম-বেশিও হয়। সব মিলিয়ে গাছদের জন্য এই অঞ্চলটি তেমন সুবিধের নয় আরকি!


সুন্দরবনের প্রশাসনঃ
আচ্ছা, শেষ করার আগে আপনাদের আরো এক প্রশ্নের মীমাংসা করে দেই; কীভাবে সুন্দরবনের দেখাশোনা করে বন বিভাগ? সুন্দরবনের দেখাশোনা করার জন্য বন বিভাগ সুন্দরবনকে দুটো ভাগে ভাগ করেছে। এই দুটো ভাগে মোটমাট বন বিভাগের রেঞ্জ আছে- চাঁদপাই, শরণখোলা, খুলনা ও বুড়িগোয়ালিনি। এই রেঞ্জগুলোর অধীনে আবার অনেকগুলো স্টেশনও আছে। মোটমাট বন স্টেশনের সংখ্যা ১৬টি। এগুলোকে সুন্দরবনে বন বিভাগের অফিস বলতে পারো। সুন্দরবনের দেখাশোনা যাতে ভালো করে করা যায় সেজন্য চারটি রেঞ্জকে আবার ৫৫টি কম্পার্টমেন্টে ভাগ করা হয়েছে। শুধু তাই না, পুরো সুন্দরবনকে আবার নয়টি ব্লকেও ভাগ করা হয়েছে। আর পুরো সুন্দরবনটি দেখাশোনা করার দায়িত্ব খুলনা বন সার্কেলের; যিনি দেখাশোনা করেন, তাঁর পদের নামই হল বন সংরক্ষক।

তাহলে, আমাদের প্রিয় সুন্দরবনের অনেক কিছুই তো জানা হয়ে গেল। এখন কেউ যদি সুন্দরবন সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করে, ঝটপট করে সব বলে দিতে পারবেন? ব্যস, তবে তো হয়েই গেল। আরেকদিন না হয় আরেক বনের কথা শুনবো; আরো অনেক বন আছে না আমাদের দেশে- পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি বন, ভাওয়াল ও মধুপুরের শালবন, বরেন্দ্র অঞ্চলের বন, এমনি আরো কত্তো বন! আস্তে আস্তে সব বনেরই গল্প শোনাবো আপনাদের; আজ না হয় সুন্দরবনের গল্পতেই মন ভরান!

লেখকঃ নাবীল আল জাহান।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

২টি মন্তব্য:

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info