প্রাচীন পৃথিবীর ১০টি আশ্চর্য স্থাপনা

আমাদের এই পৃথিবীটা যে সত্যিই সুন্দর তা একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যায়। সেই আদ্দিকাল থেকেই কতোই না অবাক করা আশ্চর্য অদ্ভুদ সব বিষয় আশয়, জিনিসপত্র পৃথিবীতে রয়েছে। এর কোনোটা প্রকৃতিই তার আজব খেয়ালে তৈরি করেছে আবার কোনো কোনোটি মানুষ তৈরি করেছে। শেষ কথা হলো, এসবের প্রত্যেকটিই মানুষের কাছে আজও বিস্ময়ের, আশ্চর্যের; যে রহস্য আজো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। প্রকৃতির অদ্ভুত সব সৃষ্টি আর মানুষের বিচিত্র খেয়ালে পৃথিবী সবসময়ের জন্যই সুন্দর। মানুষ পৃথিবীতে যেসমস্ত আশ্চর্য রহস্যঘেরা জিনিস তৈরি করেছে তার অনেক গুলোই আজ আর নেই। এর কোনোটা ধ্বংস হয়ে গেছে আবার কোনোটাকে মানুষ নিজেই ধ্বংস করেছে।

বিজ্ঞানীরা মানুষের তৈরি এই সমস্ত আশ্চর্য জিনিসগুলোকে সময়ের হিসেবে কয়েকটি যুগে ভাগ করেছেন। এগুলো হলো, প্রাচীন যুগ, মধ্য যুগ এবং আধুনিক যুগ। আজকে আমরা প্রাচীন যুগের রহস্যঘেরা সেইসব আশ্চর্য নির্মাণের কথাই শুনবো। চলেন তাহলে সেই আর্শ্চয সুন্দর রোমাঞ্চকর প্রাচীন পৃথিবী থেকে খানিক বেড়িয়ে আসি।


অজান্তা গুহঃ
ভারতের আগ্রাবাদ শহর থেকে ১০০ কিঃমিঃ উত্তরপূর্ব কোণে অবস্থিত এই অজান্তা গুহ। এই গুহা গুলি পাহারের চূড়ার অংশ কেটে তৈরি করা হয়েছে এই আবাস্থান। বুদ্ধ ধর্মালম্বিদের তৈরি করা এই আবাসস্থান গুলি তৈরি করা হয় ১ম এবং ২য় খ্রীষ্টপূর্বে। ৫ম এবং ৬ষ্ঠ খ্রীষ্টাব্দে এই গুহা গুলিকে বেশ মূল্যবান সম্পদ দিয়ে আরো বিস্তার ভাবে তৈরি করা হয়। ব্রিটিশ ঐতিহাসিক "William Dalrymple" এর মতে "One of the great wonders of the ancient world"। 


নিউগ্রেজঃ
নিউগ্রেজের (Newgrange) এর আকৃতি বিশাল। UFO আকৃতির বিশাল এই স্থাপনা জেগে উঠেছে আয়ারল্যান্ডে। এই স্থাপনা তৈরি করা হয় নবোপলীয় সময়ে, তা আনুমানিক ৩,২০০ খ্রীষ্টপূর্বে। হিসেবে একটু পটু হলে বুঝেই গেছেন এই স্থাপনার বয়স মিশরের পিরামিডের থেকেও বেশি।

প্রাচীন এই স্থাপনায় রয়েছে পাথরের তৈরি বিশাল একটা দরজা আর পথ। ভিতরে রয়েছে অনেকগুলি রুম। এই ঢিবির মধ্যে রয়েছে পাথরের তৈরি দেয়াল আর সেই দেয়ালে আছে নানা রকমের খোঁদাই। এই স্থাপনা নিয়ে বেশ কয়েকটি লোক কথা প্রচলিত আছে। কেন আর কি কাজে এই স্থাপনা ব্যবহৃত হত তা নিয়ে এখন পর্যন্ত সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। তারপরেও এটি যে ধর্মের কাজে ব্যবহৃত হত এ নিয়ে কোন দ্বিধা নেই। এই স্থাপনার কিছু ছিদ্র আছে যার মধ্যে দিয়ে আলোর প্রবেশ করে এক অবাস্থাব পরিবেশ তৈরি করে এর ভিতরে।


ডেরিনকুঊঃ
ডেরিনকুঊ (Derinkuyu) বহুতল বিশিষ্ট ভূগর্ভস্ত শহর। এর অবস্থান তুর্কির ডেরিকুঊ অঞ্চলে। বহুতল এই শহরের গভীরতা ২০০ ফুট। এই ভূগর্ভস্ত শহর এতটাই বড় যে এখানে ২০,০০০ লোক খুব সহজেই তাদের জীবন স্বাচ্ছন্দে কাঁটাতে পারবে। এযাবৎ যত গুলি ভূগর্ভস্থ স্থাপনা খুঁজে পাওয়া গেছে তার মধ্যে এটিই সব থেকে বড়।

এই ভূগর্ভস্থ শহর তৈরি করা হয় ৭-৮ খ্রীষ্টপূর্ব শতাব্দীতে। এই স্থাপনা কেন তৈরি করা হয়েছিল তা নিয়ে রহস্য থাকলেও অধিকাংশের মতে এর স্থাপনা হয়েছিল বাইরের আক্রমন থেকে রক্ষা পাবার জন্য। বিশাল এই শহরের ভিতরে ঢুকার পথ আছে ৬০০টি। এছাড়া বায়ু প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য আছে ১৫,০০০টি ছোট জানালা।

আচ্ছা, প্রথমেই বলেছিলাম প্রাচীন পৃথিবীর ১০টি আশ্চর্য স্থাপনা নিয়ে আলোচনা করব। এ পর্যন্ত আলোচনা করেছি তিনটি স্থাপনা নিয়ে। আর বাকি আছে ৭টি স্থাপনা, তাই না? আর এই ৭টি স্থাপনা সম্পর্কে যেহেতু "প্রাচীন পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য" লেখায় পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে তাই আর লিখলাম না।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

৫টি মন্তব্য:

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info