সফল ভাবে ক্লোন করা প্রাগৈতিহাসিক পেঁচা

সময়ের সাথে সাথে কত প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে এই ধরনীর বুক থেকে সে কথাতো সকলেরই জানা। কিন্তু এই প্রাণী গুলির অস্থি কিন্তু এখনও খুঁজে পাওয়া যায়। আর এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা আশার বাণী শুনিয়েছেন। কেননা তারা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাণী গুলিকে পুনঃরায় ফিরিয়ে আনতে এগুলির ক্লোন করার চেষ্টা করছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় বিলুপ্ত প্রাগৈতিহাসিক পেঁচাকে পুনঃরায় ফিরিয়ে এনেছেন ব্রাজিলের এক সফল বিজ্ঞানী।

বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাগৈতিহাসিক পেঁচা প্রজাতির সফল ভাবে ক্লোন করা হয়েছে ব্রাজিলে অনেকটা গোপনীয় ভাবে, আর এর চরম মূল্য পরিশোধ করেছে এই কাজে নিয়োজিত বিজ্ঞানী; সে কথা একটু পরেই বলব তার আগে চলুন এই পেঁচা সম্পর্কে একটু জেনে নেই।

ব্রাজিলে ক্লোন হওয়া এই পেঁচার প্রজাতির নাম 'Ornimegalonyx'; এই প্রজাতির পেঁচা গুলি সাধারনত ৩ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়, আর ক্লোন করা পূর্ন বয়স্ক পেঁচাটির উচ্চতা ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি।


পেঁচাটির অবশিষ্ট অংশ অর্থাৎ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই পেঁচাটির মৃত দেহের অবশিষ্ট কিছু অংশ প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় ব্রাজিলের ছেরা (Serra) অঞ্চলে ২০০৭ সালের মার্চ মাসে। এরপরে বিজ্ঞানীরা সফল ভাবে এই অবশিষ্ট অংশ থেকে সফল ভাবে DNA সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।

এরপরেই প্রস্তুতি চলে ক্লোন করার। যদিও বিলুপ্ত প্রাণী ক্লোন করার উপর নিষেধাজ্ঞা আছে; কেননা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই প্রাণী গুলি আমাদের পরিবেশের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে বা এর ফলে আমাদের পরিবেশে এমন কোন পরিবর্তন যদি ঘটে যার ফলে তা আমাদের বিরুদ্ধে চলে যায় এই সকল কারনের জন্যই এটি মূলত নিষিদ্ধ। আরেকটু বিস্তারিত বলতে গেলে আমাদের পরিবেশে বসবাসরত অন্যান্য প্রাণী গুলির যে খাদ্য শৃঙ্খল রয়েছে তা বিনষ্ট হবার সমুজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে, আর এই কারনেই মূলত এটি নিষিদ্ধ।


নিষিদ্ধ ক্লোনিং-এর কাজটি করেন 'Fogarty International Center' এর প্রধান বিজ্ঞানী 'ব্রাইন ক্রিষ্টোফার' (Brian Christopher) নামের এক বিজ্ঞানী। আগেই বলেছি এর জন্য চরম মূল্য তাকে পরিশোধ করতে হয়েছে; এবার সেই ঘটনাই বলব।

২০১৪ সালে সফল ভাবে ক্লোন করা এই পেঁচাটিকে খাঁচা বন্দি করে রাখা হয়েছিল Fogarty International Center এ। কোন এক বৃহস্পতি বার ব্রাইন তার রুটিন কাজের অংশ হিসেবে পেঁচাটিকে পরিদর্শনে যান। এসময় পেঁচাটি তার খাঁচার মধ্যে ঝিমাচ্ছিল, আর ব্রাইন খাঁচাটি খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন। বলে রাখি খাঁচাটি কিন্তু বেশ বড় ছিল আর তার মধ্যে অনায়াসেই যে কোন মানুষের পক্ষেই প্রবেশ করা সক্ষম। ব্রাইন খাঁচার মধ্যে ঢোকার সাথে সাথেই কোন কারনে হোক আর অকারনেই হোক পেঁচাটি তাকে আক্রমন করে বসে।

ব্রাইনের উপর আক্রমনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় পেঁচাটি তার দু'কাধ পা দিয়ে খামচে ধরে এবং পেঁচাটি তার ধারালো ঠোঁট দিয়ে ব্রাইনের দু'চোখ উপড়ে ফেলে।


আর আক্রমণের শেষ পর্যায়ে পেঁচাটি খাঁচা থেকে বেড় হয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ছবি গুলি দেখলেই বুঝে যাবেন যে পাখটি কোন খাঁচার মধ্যে বন্দি নেই আর এর মুখের আকৃতিও অন্যান্য পেঁচা থেকে বেশ ভিন্ন।

হাসপাতালের ডাক্তারদের মতে ব্রাইনের দু'চোখ চিরতরে নষ্টো হয়ে গিয়েছে এবং তা আর কোন দিন ঠিক করে তোলা সম্ভব নয়।


পেঁচাটিকে পুনঃরায় ধরতে সক্ষম হয় Fogarty International Center এর অন্যান্য কর্মীরা এবং পেঁচাটি বর্তমানে তাদের তত্ত্বাবধানেই আছে। অন্যান্য বিজ্ঞানীরা এটির উপর আরো গবেষনা করতে চান। তারা এর খাদ্য অভ্যাস, আচার আচারন এগুলির উপর মূলত কাজ করছে। তবে Fogarty International Center একটি প্রতিবেদনে বলেছে তারা এবার আরো সতর্কতার সাথে পেঁচাটির দেখাশোনা করছে আর কর্মীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে নির্মিত পোষাক এবং মুখ আবরণ ব্যাবহার বাধ্যতামূলক করেছে যাতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

২টি মন্তব্য:

  1. eita ki sotty ghotona????
    :O
    onek obak laglo, valo j onno kono voinkor prani clone kore nai.
    ek somoi dekha jabe manob jati buliptir prodhan karon ei clone e hote pare.
    hote pare area51 e rinoceros o ache.

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. কয়েক জনের দাবি এটা মিথ্যা ঘটনা কিন্তু তাদের কাছে কোন প্রমান নেই... যতটুকু দেখলাম মনে হল সত্য তবে মিথ্যা হতেও পারে... :p

      মুছুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info