পৃথিবীর গভীরতম গর্ত


আমারা আমাদের মাথার উপরের নক্ষত্র সম্পর্কে যত জানি তার থেকে অনেক কম জানি আমাদের পায়ের নিচে কি আছে সে সম্পর্কে। আর এ কথা চিন্তা করেই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজ্ঞানীরা ১৯৭০ সালে সিদ্ধান্ত নেয় যে এবার তারা জানবে আমাদের পৃথিবীর অভ্যন্তরে কি আছে। আর এ লক্ষ্যেই আগামী ২৪ বছর তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরি করে মানব ইতিহাসের সব থেকে গভীরতম গর্ত।

উপরের ছবিটি সেই গর্তের সীল করা মুখ। এটিই এযাবত মানুষের তৈরি সব থেকে গভীরতম গর্ত।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info

Kola Superdeep Borehole এ কর্মরত শ্রমিক
তাদের এই অক্লান্ত প্ররিশ্রমের ফলে জন্ম নেয় 'Kola Superdeep Borehole'। ভূ-পৃষ্ঠ হতে ৭.৫ মাইল বা ১২ কিঃমিঃ গভীর গর্ত করতে সক্ষম হয় তারা। এটা কিন্তু কম দূরত্ব নয়, সমুদ্রের থেকেও অনেক বেশি গভীরে যেতে সক্ষম হয় তারা। সমুদ্রের গভীরতা সাধারনত ৬.৮ মাইল বা ১১ কিঃমিঃ হয়ে থাকে। এই গর্তটি রাশিয়ার 'Kola Peninsula' তে অবস্থিত।


এত কষ্টো করে এত গভীর গর্ত করে আমরা কি কিছু জানতে পেরেছি নাকি পুরাটাই ছিল পণ্ডশ্রম? আল্লাহর রহমতে হ্যাঁ আমরা অনেক কিছু জানতে পেরেছি এই অক্লান্ত প্ররিশ্রমের ফলে। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক এই গর্ত থেকে আমরা কি কি জানলাম।


প্রথমত, পানি পাওয়া গেছে। এরপূর্বে বিজ্ঞানীদের ধারনা ছিল এত গভীরে কোন ভাবেই পানির অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু সেখানে পানি পাওয়া গেছে। তবে এই পানি কিন্তু আমরা যে পানি দেখি তার মত নয়। এই পানি তৈরি হয়েছে পাথরের মিনারের হতে।

দ্বিতীয়ত, ৪.৩ মাইল বা ৭ কিঃমিঃ গভীরে পাওয়া গেছে ২৪টি প্রজাতির এককোষী প্ল্যাঙ্কটনের ফসিল। এই প্রজাতী গুলি এর পূর্বে আমাদের অজানা ছিল।

একদম গভীরের তাপমাত্র ৩৫৬ ডিগ্রী ফারেনাইট বা ১৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রায় পাথর গুলি মাটির মত নরম ছিল আর এত তাপমাত্রায় আর কাজ করা সম্ভব না দেখে ১৯৯৪ সালে গর্ত খননের কাজ বন্ধো করে দেওয়া হয়।

গর্ত করার কাজে ব্যাবহৃত ড্রিল
এই ভিডিওটি দেখলে হয়ত আপনার আরেকটু স্পষ্ট ধারনা হবে।



Download

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।