অ্যাপলঃ নাম, লোগো, হেডকোয়াটার

নামঃ অ্যাপলের নামকরন নিয়ে আছে অনেক গল্প।

০১) যখন শুরু হল প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা, তখন এর নামকরন এর জন্য জোবস সবাইকে ভাবতে বললেন এবং বললেন যদি নাম যদি পছন্দ না হয় তবে তিনি এর নাম 'A' রাখবেন। পরে মাথায় আসে A For 'Apple' রাখবেন।
০২) সবাইকে যখন বলতে বললেন নাম, কারো নাই জোবস এর পছন্দ হয়নি এবং কথিত আছে তখন তিনি অ্যাপল খাচ্ছিলেন এবং রেখে দেন নাম কোম্পানীর 'অ্যাপল'।

অ্যাপল পণ্যের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য দাঁড় করাতে পেরেছেন স্টিভ জবস। অ্যাপলের প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে একটা করে ইংরেজি ছোট হাতের ‘আই’ দিয়েই শুরু করার প্রচলন তারই। যেমনঃ আইপড, আইফোন, আইম্যাক। এ ধারায় তার বায়োগ্রাফিটিরও নাম হতে যাচ্ছিল ‘আইস্টিভঃ দ্য বুক অফ জবস’।

লোগোঃ
অ্যাপলের প্রথম লোগো ছিল স্যার আইজ্যাক নিউটন আপেল গাছের নিচে আপেল গাছের নিচে বসে আছেন। সেই বিখ্যাত আপেল থেকেই অ্যাপল এর লোগো। এখানে ব্যবহার করা হয়ে ছিল ওয়ার্ডসথ এর একটি উক্তিঃ

"Newton... A Mind Forever Voyaging Through Strange Seas of Thought... Alone."

এটাই অ্যাপলের প্রথম লোগো

কিছু দিনের ভেতরেই এর পরিবর্তন আসে। রব জেনফ এর "রেইনবো অ্যাপল" জায়গা করে নেয় অ্যাপলের লোগোর।

রেইনবো অ্যাপল
অ্যাপলের লোগোটি তে কামড়ের চিহ্ন আনা হয় কারন যাতে এটা অন্য কোন ফলের সাথে মিলে না যায়। অনেক সময় বলা হয়ে থাকে যে অ্যাপলের লোগো-তে কামড়ের চিহ্নটি দেয়া হয়েছে এলান টুরিংকে শ্রদ্ধা করে। এখানে বলতে হয়, এলান টুরিং ইংরেজ গণিতবিদ, যুক্তিবিদ ও ক্রিপ্টো বিশেষজ্ঞ। তাকে আধুনিক কম্পিউটার বিজ্ঞানের জনক মনে করা হয়।

এলান টুরিংকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, পোস্ট মর্টেমে বলা হয় সায়ানাইড পয়জনিং। ডার মৃত দেহের পাশে একটি অর্ধেক খাওয়া অ্যাপল পাওয়া যায়। এটাও হতে পারতো লোগোর পেছনের কথা কিন্তু ডিসাইনার এটা অস্বীকার করে।

১৯৯৮ সালে আই ম্যাক আসার পর লোগোর পরিবর্তন হয়। জায়গা করে নেয় মনোক্রোমাটিক থিম।

পরে ২০০১-২০০৩ থেকে একুয়া এবং পরে এখন পর্যন্ত গ্লাস থিম ব্যাবহার হচ্ছে।


স্টিভেন জোবস বিটলস এর ভক্ত ছিলেন। কিন্তু সমস্যার শুরু হয় অন্য জায়গায়। বিটলস এর ও অ্যাপল করপোরেশন নামে একটি মিউজিক প্রতিষ্ঠান ছিল যা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৭ সালে। ফলে শুরু হয় দ্বন্দ, একাধিক মামলা, যা ২০০৭ সালে গিয়ে শেষ হয়।


স্লোগানঃ
অ্যাপলের স্লোগান নিয়ে আলাদা পোষ্ট লেখা ছাড়া উপায় নেই। লিখে ফেলবো। আপাতত কয়েকটি দিচ্ছি।

অ্যাপলের ১ম স্লোগানটা ছিল চমৎকার, 'Byte into an Apple'

বাইট কোনটা বুঝেছেন, কিলোবাইট, মেগাবাইট, কিন্তু কি চমৎকার করে বুঝিয়ে দিল যে অ্যাপল এর কামড়টির কথা।

১৯৯৭-২০০২ পর্যন্ত ব্যবহার হয়, "Think Different"

হেডকোয়াটারঃ
স্টিভ জবস অ্যাপল হেডকোয়ার্টারকে নতুন করে দেখতে চেয়েছিলেন। সেজন্যই সম্প্রতি স্পেসশিপ আকারের হেডকোয়ার্টার তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল অ্যাপল। কুপারটিনোর এ হেডকোয়ার্টার দেখে মনে হবে আকাশ থেকে কোনো মাদারশিপ যেনো নেমে এসেছে! আর এটা দেখে অ্যাপলের ‘ভবিষৎ দ্রষ্টা’ স্টিভকেই যেনো মনে রাখে বিশ্ববাসী।

এর হেডকোয়াটার হল ক্যালিফোর্নিয়া তে, 'ইনফিনিটি লুপ (স্ট্রিট)' যেখানে ৬টা ভবন নিয়ে গঠিত হেডকোয়াটার। প্রতিটি ভবনে এর একটি সংখ্যা, অপর ৫ টি ভবনের সাথে মিলে যায। তাই এটার মেইলিং এড্রেস, "1 Infinite Loop"

'ইনফিনিটি লুপ' নামটি নেয়া হয়েছে কমপিউটার প্রোগরামিং এ ইনফিনিটি লুপ অথবা এনডলেস লুপ থেকে।


এই তো, জোবস এর প্রতি শ্রদ্ধা আর তার প্রতিভাকে সালাম জানিয়ে এই পোষ্টটি লেখা।


লেখকঃ ব্লগার বৃত্ত।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info