মা দিবস ।। Mother Day


গল্পটা তুচ্ছ এক প্রাণীর। আমাদের অতি চেনা মাকড়শার। এটাকে গল্প বলাও ঠিক নয়, বলতে পারেন একেবারে সত্যি ঘটনা। প্রতিমুহূর্তে আমাদের অজান্তেই কোথাও না কোথাও ঘটছেই ঘটনাটা। অনেকের কাছেই মাকড়শা মানেই ভয়ের বা ঘৃণার কিছু একটা। কিন্তু এই তুচ্ছ ভয়ংকর (!) মাকড়শা মায়ের কাহিনী যে কাউকে অবাক করে দেবে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানো, মাকড়শার ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। মা মাকড়শা সেই ডিম নিজের দেহে বহন করে বাচ্চা বের না হওয়া পর্যন্ত। প্রকৃতির নিয়মে একসময় ডিম ফুটতে শুরু করে। নতুন প্রাণের স্পন্দন দেখা যায় ডিমের ভেতর। এসেছে নতুন শিশু তাকে ছেড়ে দিতে হবে সন্তান। কিন্তু খাদ্য কোথায়? ক্ষুধার জ্বালায় ছোট ছোট মাকড়শা বাচ্চারা মায়ের দেহই খেতে শুরু করে ঠুকরে ঠুকরে। সন্তানদের মুখ চেয়ে মা নীরবে হজম করে সব কষ্ট, সব যন্ত্রনা। একসময় মায়ের পুরো দেহই চলে যায় সন্তানদের পেটে। মৃত মা পড়ে থাকে ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে, সন্তানেরা নতুন পৃথিবীর দিকে হাঁটতে থাকে। এই হলো মাকড়শা মায়ের আত্মত্যাগের কাহিনী।

আমাদের মায়েরা মাকড়শার মত নিজের দেহকে সন্তানের খাদ্য বানায় না সত্য, কিন্তু সন্তান জন্মের আগ থেকে পুরো জীবন সন্তানের জন্য যেভাবে উৎসর্গ করেন তা মাকড়শার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। কিন্তু এসব কিছুর জন্য তিনি কখনো কোন প্রতিদানের আশা করেন না। তিনি নির্শত ভাবেই নিজের সন্তানকে ভালোবেসে যান। আপনিই বলেন, মায়ের মতো এমন মমতাময়ী আর কে আছে এই পৃথিবীতে? মাকে এক্ষুণি জানিয়ে দেন, “মা আমরা তোমাকে খুব ভালোবাসি। তুমি আরও অনেকদিন বেঁচে থেকো, তুমি ভালো থেকো মা।

১১ মে আন্তর্জাতিক মা দিবস। বিশ্বের অনেকগুলো দেশে জাকজমকের সাথে পালিত হয় এই দিবসটি। স্বল্প পরিসরে হলেও আমাদের দেশেও ইদানিং এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। মা দিবসে মাকে নিয়েই আমাদের আয়োজন।

তবে একটা কথা, মা দিবস তো একটা প্রতীকি দিন। তাই মা দিবসেই শুধু নয়, মাকে ভালোবাসতে হবে বছরের বাকী দিন গুলিতেও।


মা দিবস কেমন করে এলোঃ
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৪৬টি দেশে প্রতিবছর মা দিবস পালন করা হয়। তবে দেশ ভেদে মা দিবস পালনের তারিখে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। সাধারণত প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মা দিবস হিসেবে পালন করার রীতি অনেক দেশেই গড়ে উঠেছে। জানেন কি কবে থেকে মা দিবস পালন করার রেওয়াজ চালু হয়েছে।

ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, মা দিবস পালন করার রীতি এ যুগের নয়। আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগেও অনেক জায়গায় এই দিবসটি পালন করতো মানুষ। কী অবাক হচ্ছেন? অবাক হবারই কথা। খ্রিস্টের জন্মের অনেক আগে থেকেই মিশর, রোম ও গ্রিসে মা দিবস পালন করা হতো। তবে সে দিবসটা ঠিক আমাদের বর্তমানের মা দিবসের মতো ছিলো না। সেটাকে দেবতাদের মায়ের আরাধনা বলতে পারো। সেসময়ে দেবতাদের মায়েদের (যেমন দেবী আইসিস, সিবিলি, রিয়া) পূজা করা হতো।

এদিকে ১৬ শতকে ইংল্যান্ডে মা দিবস পালন করা হতো বলে জানা যায়। এটাই ছিলো দেব-দেবীদের মা ছাড়া নিজের আসল মাকে নিয়ে মানে রক্ত মাংসের মাকে নিয়ে মা দিবস। দিবসটি তারা মাদারিং ডে হিসেবে পালন করতো। সেদিন সরকারি ছুটিও ছিলো। পরিবারের সবাই তাদের মায়ের সাথে দিনটি কাটাতো। তবে এই দিবসটি ততোটা প্রসার লাভ করেনি।

আপনারা তো জানেনই, ব্রিটিশরা আমেরিকায় তাদের কলোনি স্থাপন শুরু করার পর ইংল্যান্ড থেকে দলে দলে মানুষ আমেরিকায় বসবাস করতে শুরু করে। আমেরিকার এই সব নতুন অধিবাসীরা ইংল্যান্ডের মাদারিং ডে’কেও আমেরিকায় আমদানি করে নিয়ে আসতে চেষ্টা করে। কিন্তু নানা কারণে সেটা তারা চালু রাখতে পারে না।

এর প্রায় ১০০ বছর পর ১৮৭০ সালে আমেরিকার জুলিয়া ওয়ার্ড হাও নামের এক গীতিকার মা দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। তিনি আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় একটি দেশাত্মবোধক গান লিখেছিলেন। সে গানটা সে সময় বেশ জনপ্রিয় ছিলো। আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের সময় হাজার মানুষকে হত্যা করা হচ্ছিলো কারণে বা অকারণে। এক মায়ের সন্তান আরেক মায়ের সন্তানকে হত্যা করছিলো অবলীলায়। এই সব হত্যায দেখে জুলিয়া খুব ব্যথিত হয়েছিলেন। তিনি এটা বন্ধ করার জন্য আমেরিকার সব মাকে একসাথে করতে চাচ্ছিলেন। আর এ কারণেই তিনি আন্তর্জাতিক মা দিবস পালন করতে চাচ্ছিলেন। তার লক্ষ্য ছিলো এই দিনটি সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করার। তিনি ব্যাপকভাবে সাড়া না পেলেও তার নিজের শহর বোস্টনে দিবসটি পালিত হচ্ছিলো বেশ ঘটা করেই।

মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার আন্তর্জাতিক মা দিবস হলেও সব দেশ এই দিবসটি পালন করে না। ভাবছেন কেন? আসলে অনেক দেশেরই আলাদা আলাদা মা দিবস আছে। আর সেই দিনেই তারা মা দিবস পালন করে। অনেকে মনে করেন, অন্যসব দেশে পৃথক দিনে মা দিবস পালন করলেও সেটা আসলে আমেরিকা বা ইংল্যান্ডের অনুকরণ। বির্তকে না গিয়ে চলো কোন দেশ কবে মা দিবস পালন করে সেটা একটু চোখ বুলিয়ে দেখা যাক।


এদিকে ভার্জিনিয়ার একটি মহিলাদের দল জুলিয়া ওয়ার্ড হাও এর প্রস্তাবিত মা দিবসটি পালন করতো বেশ মর্যাদার সঙ্গেই। এই দলের নেত্রী ছিলেন অ্যানা রিভেস জারভিস। তিনি গৃহযুদ্ধের সময়কালে ‘মাদার’স ফেন্ডসিপ ডে’ পালনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এই দিবসের পালনের কারণে গৃহযুদ্ধ সময়কালে অনেকটাই শান্তির বার্তা এনে দিয়েছিলো।

অ্যানা রিভেস জারভিস তার জীবনের সুদীর্ঘ ২০ বছর কাটিয়েছিলেন ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটনের একটি গির্জায়। সেখানে তিনি সানডে স্কুলের শিক্ষকতা করেছেন। তার মৃত্যুর পর তার মেয়ে অ্যানা এম জারভিস মা দিবস ঘোষণা আন্দোলনের হাল ধরে। অ্যানা জীবিত ও মৃত সব মায়ের প্রতি সন্মান জানানোর তথা শান্তির জন্য এই দিবসটি পালন করতে চাচ্ছিলেন। এই লক্ষ্যে তারা ১৯০৮ সালে গ্রাফটনের ওই গির্জার সুপারিনটেনডেন্টের কাছে একটি আবেদন জানায়। তার অনুরোধে সাড়া দিয়ে সে বছরই ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ও পেনসিলভেনিয়ার কয়েকটি গির্জায় মা দিবস পালিত হয়। এভাবে অনেকেই প্রতিবছরই মা দিবস পালন করতে শুরু করে।

এরপর অনেক পথ পেরিয়ে ১৯১৪ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে জাতীয় মা দিবসের মর্যাদা দেয়।

আরও পরে ১৯৬২ সালে এই দিবসটি আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

দেশে দেশে মা দিবসঃ
নরওয়েতে ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এদিকে আফগানস্তান, আলবেনিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বেলারুস, বসনিয়া ও হারজেগোভিনা, বুলগেরিয়া, লাওস, মেসিডোনিয়া, মলডোবা, মন্টেনিগ্রো, রোমানিয়া, রাশিয়া, সার্বিয়া, ইউক্রেন, দক্ষিন কোরিয়া ৮ মার্চ মা দিবস হিসেবে পালন করে। আবার আলবেনিয়া, বেলারুস, বুলগেরিয়া, গায়ানা, ইটালি, মেসিডোনিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং রশিয়া ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবেও পালন করে।


রাহরাইন, মিশর, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, ওমান, লেবানন, প্যালেস্টাইন, কাতার, সৌদি আরব, সুদান, সুরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইয়েমেন ২১ মার্চ মা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।

আবার হাঙ্গেরি, লিথুনিয়া, পর্তুগাল, স্পেন মে মাসের প্রথম রবিবার মা দিবস হিসেবে পালন করে। এদিকে প্যারাগুয়ে ১৫ মে, পোল্যান্ড ২৬ মে, বলিভিয়া ২৭ মে এবং নিকারাগুয়া ৩০ মে মা দিবস পালন করলেও আলজেরিয়া, ডমিনিকান রিপাবলিক, ফ্রান্স, হাইতি, মৌরিতাস, মরক্কো, সুইডেন ও তিউনিশিয়া মে মাসের শেষ রবিবার মা দিবস পালন করে।

জুনের ১ তারিখে মঙ্গোলিয়া মা দিবস ও শিশু দিবস পালন করে। মঙ্গোলিয়া হচ্ছে একমাত্র দেশ যে বছরে দুবার মা দিবস পালন করে।

লুক্সেমবার্গ জুনের দ্বিতীয় রবিবার, কেনিয়া শেষ রবিবার মা দিবস পালন করে।

থাইল্যান্ড তাদের রাণী সিরিকিট কিতিয়াকারার জন্মদিনকে মা দিবস হিসেবে পালন করে ১২ আগস্ট। কোস্টারিকা ১৫ আগস্ট, মালাও অক্টোবরের দ্বিতীয় সোমবার, বেলারুস ১৪ অক্টোবর, আজেন্টিনা অক্টোবরের তৃতীয় রবিবার, পানামা ৮ ডিসেম্বর, ইরান ১৬ ডিসেম্বর এবং ইন্দোনেশিয়া ২২ ডিসেম্বর মা দিবস পালন করে।


মা দিবসঃ (ভিন্ন দেশের ভিন্ন রীতি)
মা দিবস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পালন করা হয় সেটা তো জেনেই গেছো। শুধু কী তাই, দেশভেদে এই বিশেষ দিবস পালনের রীতিও ভিন্ন ভিন্ন। তবে সব দেশের রীতিতে যত ভিন্নতাই থাকুক একটা ব্যাপারে সবাই কিন্তু এক। সেটা কি জানো? সেটা আর কিছুই নয়, সবাই চায় এই দিনে মাকে খুশি করতে। মায়ের সাথে সময় কাটাতে, মাকে সুন্দর সুন্দর জিনিস বানিয়ে উপহার দিতে আরও অনেক কিছু।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেটিনার কথাই ধরা যাক। এই দেশটি অক্টোবর মাসের তৃতীয় রবিবার মা দিবস পালন করে থাকে। এই সময়টা আর্জেটিনায় বসন্তকালের আমেজ থাকে। তাই মা দিবসে পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে বেরোয়। অবশ্য সবাই যে বাইরে ঘুরতে যায় এমন নয়। যারা বাড়িতে থাকে, তারা মাকে খুশি করতে নানান কাজ করে থাকে। যেমন ধরেন, মায়ের সন্মানে তারা একত্রে খাওয়া দাওয়া করে, কবিতা আবৃত্তি করে। আবার স্কুলে গিয়ে মায়ের উদ্দেশ্যে চিঠি লেখে বা নিজে হাতে কার্ড বা অন্যকিছু বানিয়ে মাকে উপহার দেয়। আর সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে, এইদিনে মায়ের কথা তারা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে।

এদিকে এইদিনে আর্জেটিনায় পরিরবারের বাবা রান্না ও ঘরের অন্যান্য কাজ করে। যেন আজ মায়ের ছুটি। তাছাড়া মাকে ফুল, কার্ড, ক্যান্ডি, অলংকার বা অন্য চমকপ্রদ কিছু উপহার দেয়।

এদিকে ফ্রান্স মে মাসের শেষ রবিবার মা দিবস পালন করে আসছে ১৯২০ সাল থেকে। এই দিনটি তারা সরকারীভাবে পালন করা হয়। মজার ব্যাপার কী জানেন, যে মায়ের যত বেশি সন্তান তার তত বেশি সন্মান। এজন্য যে মায়ের চার বা পাঁচটি সন্তান আছে তাকে মা দিবসে সরকারীভাবে ব্রোঞ্জ পদকে পুরস্কৃত করা হয়। একইভাবে যার ছয় বা সাতটি সন্তান তাকে রৌপ পদক এবং যার আটটি বা তারও চেয়ে বেশি সন্তান তাকে স্বর্ণপদদ দিয়ে সন্মান জানানো হয়।

জাপানে মা দিবসের পৃথক একটি নাম আছে। তারা মা দিবসকে বলে ‘হাহা নো হি’। ১৯১৩ সাল থেকে জাপানি খ্রিস্টানরা আমেরিকান রীতিতে মা দিবস পালন করতে শুরু করে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে পশ্চিমাদের অনুকরণে এই দিবসটি পালন করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যুদ্ধের পর থেকে আবার তারা মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালন করছে। জাপানিরা এই দিনে মাকে ফুল, রুমাল এবং হাতব্যাগ উপহার দেয়। বাড়িতে আয়োজন করা হয় জাপানের ঐতিহ্যবাহী খাবারের।

মেক্সিকোতে অনেক আগে থেকেই মা দিবস পালন করা হয়। মেক্সিকানরা ১০ মে মা দিবস পালন করে। সকাল বেলায় পরিবারের সবাই মিলে মাকে গান শুনিয়ে মা দিবস শুরু হয়। মাঝে মাঝে ব্যান্ড দলও ভাড়া করে আনা হয় গান গাওয়ার জন্য। মায়ের জন্য সন্তানরা ফুল আর চকোলেট কেনে।

মা দিবসে কী কী করতে পারেনঃ
বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় সব কিছুরই আলাদা আলাদা নাম আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এক ভাষার সাথে আরেক ভাষার কোন মিলই নাই। কিন্তু পৃথিবীর সব দেশের শিশুর প্রথম ভাষা ‘মা’। তাই এক কথায় ‘মা’ শব্দটি আসলে কোন ভাষার নিজস্ব সম্পত্তি নয়। এই শব্দটি সার্বজনীন। যেমন দেখেন না, ফান্সে মা বলা হয় মেরি, জার্মানিতে মাটার, হিন্দিতে মাজি, উর্দূতে উমি, ইংরেজিতে মামি, মাম, মামা, মাম্মি, বাংলায় আম্মা, আম্মি, আম্মাজি, মাগো, মা। ভালো মতো খেয়াল করে দেখেন, মা শব্দটি কী খুব বেশি পার্থক্য সৃষ্টি করছে?

তাই মা কিন্তু হেলাফেলার কোন কিছু নয়। মা দিবসটিও পালন করতে হবে সুন্দর ও অর্থপূর্ণভাবে। এই দিনে অনেকেই ফুল, বই, গানের সিডি, চকোলেট বা অন্য বিশেষ কোন কিছু উপহার হিসেবে বেছে নেয়। কিন' এছাড়াও আরও নানাভাবেই এই বিশেষ দিনটিকে আপনি উদযাপন করতে পারেন। কী শুনবেন সেগুলো?

০১) সারাদিন মা কত পরিশ্রম করে সেটা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? মা দিবসে মাকে একটু বিশ্রাম দিতে বাড়ির কাজগুলো না হয় নিজেই করেন। বাড়ির ঘরগুলো যতটুকু পারেন সাজিয়ে গুছিয়ে রাখেন। শুধু মা দিবসেই নয় অন্যান্য দিনেও মাকে নানা ভাবে সাহায্য করতে পারেন।
০২) মায়ের প্রিয় কোন খাবার রান্না করতে পারেন। আর রান্না যদি করতে না পারেন তাহলে অন্তত একটা আইস ক্রিম তো বানাতে পারবেন, তাই না? নিজের হাতে একটা আইস ক্রিম বানিয়ে মাকে দেন।
০৩) মায়ের জন্য কিনে নয় নিজেউ তৈরি করতে পারেন একটি কার্ড। দেখতে সুন্দর না হোক আপনার হাতের ছোঁয়ায় তৈরি এই সামান্য জিনিসটাই মায়ের কাছে অসাধারণ হয়ে উঠতে পারেন।
০৪) মাকে নিয়ে একটি ছবি এঁকে ফেলেন।
০৫) ভালো রেজাল্ট করলে কেমন লাগে আপনার? নিশ্চয়ই ভালো। আর সার্ঠিফিকেট পেলে তো কথাই নেয়। সবাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে বেড়ান অনেকেই। এবার আপনার মাকেই না হয় একটা সার্টিফিকেট দেন। না, স্কুলের, কলেজের বা ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট দিতে বলছি না। একটি সার্টফিকেট আপনি নিজেই তৈরি করেন। তাতে লেখা থাকতে পারে- ‘মা, তুমি আমার শ্রেষ্ঠ মা। মা, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি’। এরকম আরও অনেক কথা লিখে দিতে পারেন শ্রেষ্ঠ মা সার্টিফিকেটটাতে।
০৬) মাকে নিয়ে একটি রচনা লিখতে পারেন। আপনার মা কেন সেরা সেটা রচনাটিতে বর্ণনা করেন। তারপর তাকে সেটা দেখান।
০৭)যারা বিশেষ কারণে এই দিনে মায়ের কাছে থাকতে পারছেন না তারা মাকে চিঠি লিখতে পারেন। আর ফোন কল, এসএমএস তো পাঠাবেনই। যারা কম্পিউটার ও ইন্টার নেট ব্যবহার করো তারা মজার মজার মা দিবসের ই-কার্ড পাঠাতে পারেন।

মা কে নিয়ে ছড়া কবিতাঃ
পৃথিবীর প্রায় সব কবিই মাকে নিয়ে ছড়া-কবিতা লিখেছেন। বাংলাভাষার কবি বা ছড়াকারও পিছিয়ে নেই এক্ষেত্রে। কবির কল্পনায় মায়ের নানান রূপ ফুটে উঠেছে ছড়া-কবিতাতে। এসব ছড়া-কবিতায় মা কখনো মমতাময়ী, কখনো খেলার সাথী, কখনো তার শিশুমনের আজব কল্পনায় সবচেয়ে আপন চরিত্র, কখনোবা একমাত্র অবলম্বন। একেক কবি মাকে একেকভাবে চিত্রিত করেছেন তাদের ছড়া-কবিতায়। মা দিবসে মাকে নিয়ে এসব ছড়া-কবিতাগুলো আপনাদের জন্য।

মা কথাটি ছোট্ট অতি
কিন্তু জেনো ভাই
ইহার চেয়ে নাম যে মধুর
ত্রিভূবনে নাই।

লেখকঃ আবুল বাসার।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info