ভীনগ্রহবাসিদের সম্ভাব্য ১০টি জিনিষ (শেষ পর্ব)


ভীনগ্রহের প্রানি আছে কি নেই এ নিয়ে মোটামটি সারা বিশ্ব দু'ভাগে বিভক্ত। কেউ বলে আছে আবার কেউ বলে নাই। যারা UFO তে বিশ্বাস করে তারা নির্দিধায় বলে যে আছে, আর যারা অস্বীকার করে তারা বলে যে এগুলা সব আর্মিদের গোপন কোন যান। এ নিয়ে তর্কের কোন শেষ নেই।

সর্বশেষ এই এলিয়েন নিয়ে আলোচনা করেছিলাম "চায়নায় পিরামিড এবং এলিয়েন" লেখায়। আজ আবার আলোচনা করব এই এলিয়েন নিয়ে। তবে আজকের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকবে এমন কিছু বস্তু যার কিছু কিছু মানুষের তৈরি আবার কিছু কিছু বস্তু যে কোথায় আর কিভাবে তৈরি করা হয়েছে তা আবিস্কার করাই সম্ভব হয়নি। আর এই বস্তু গুলি সুস্পষ্ট ভাবে প্রমান করে যে সত্যিই এলিয়েনদের অস্তিত্ব আছে। তাহলে চলুন আজ আপনাদের এমন ১০টি জিনিষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব যেগুলি সম্ভাব্য এলিয়েনদের জিনিষ।


০৫) শ্রীলংকার উল্কাঃ
কোন এক অজানা সময়ে এই উল্কা খন্ড পৃথিবীতে এসে পরে। পরবর্তিতে এই উল্কা খন্ড শ্রীলংকায় খুঁজে পাওয়া যায়। স্পষ্ট ভাবেই উল্কা ঘন্ড পৃথিবীর কোন অংশ না। বরং এটি অজানা কোন স্থান থেকে পৃথিবীতে এসেছে। কিন্তু ঝামেলা বাঁধে এই উল্কা খন্ড পরীক্ষা করার সময়। পরীক্ষা করার সময় দেখা যায় যে এই উল্কা খন্ডের গায়ে আছে এক অজানা প্রানীর ফসিল। আর যেহেতু এই পাথর পৃথিবীর বাইরে থেকে এসেছে তাই এক কথায় বলা যায় যে প্রানীর ফসিল পাওয়া গেছে সেটি অবশ্যই এই পৃথিবীর কোন প্রানী না বরং তা পৃথিবীর বাইরের কোন প্রানী। হয়ত এই পাথরের টুকরাই এর প্রমান বহন করে।


০৪) গ্রীষ্মকালীন আনোন্দ উতসবঃ
উপরে যে আনন্দ উৎসবের ছবি দেখতে পাচ্ছেন এটি একটা কার্পেট যা দেওয়ালে টানানোর জন্য বানানো হয়েছিল ১৫৩৮ সালে বর্তমান বেলজিয়ামে। দেওয়ালে টানানো এই কার্পেটটি UFO বিশ্বাসীদের কাছে এক অনবদ্য প্রমান যে সত্যিই UFO আছে। কার্পেটের ছবির দিকে একটু ভাল ভাবে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে আকাশে গোল চাকতির মত UFO উড়ছে। অনেক বিষেশজ্ঞ বলেন যে আসলে এই উড়ন্ত চাকতি গুলি আসলে ব্যাবহার করা হয়েছিল তৎকালীন শাষকের ক্ষমতাকে আরো উজ্জ্বল ভাবে তুলে ধরবার জন্য কিন্তু প্রশ্ন হল ক্ষমতা দেখাবার জন্য এই সব উড়ন্ত চাকতিই কেন? এর উত্তর এখন পর্যন্ত না পাওয়া গেলেও এই গুলি যে আসলেই UFO সদৃশ্য বস্তু তা বলার অপেক্ষা রাখে না।


০৩) যিশুর নৈশভোজনঃ
১৬ শতকে ইতালির আর্টিষ্ট "Ventura Salimbeni" অংকন করেন "Disputa of the Eucharist" নামের উপরের ছবিটি। Disputa of the Eucharist এর ইংলিশ অর্থ "The Glorification of the Eucharisht"। এখন ছবিটির উপরের অংশ ভাল মত খেয়াল করুন। দেখুন দু'জন লোক মাঝে গোলাকার বস্তু আর ছবির বাম দিকে এক স্বর্গ দূত। এখানে দু'জন ব্যাক্তির মধ্যে ছবির ডান পাশের জন যিশু আর তার পাশে বসা ঈশ্বর। আর তাদের মাঝে যে গোলাকার বস্তু রয়েছে সেটি ভাল মত খেয়াল করুন। দেখুন মনে হবে ধাতুর তৈরি প্রথম দিকের স্যাটেলাইট। আর দু'জনে এই স্যাটেলাইটের দু'টা এন্টিনা ধরে রয়েছে। এমন কি স্যাটেলাইটের উপরের দিকে দেখলে মনে হবে যে আলো প্রতিফলিত হচ্ছে। কি খায়াল করে দেখেছেন? এখন প্রশ্ন হলে ১৬ শতকের দিকে স্যাটেলাইট সদৃশ্য জিনিষ সম্পর্কে তৎকালীন অংকন শিল্পী ধারনা পেল কি ভাবে? আর এন্টিনা কোন বস্তু তৎকালীন সময়ে ছিল বলে মনে হয় না। অনেকের ধারনা যিশু আসলে ছিলেন এলিয়েন। আর এ কারনেই তার ছিল কিছু ঐশ্বরিক ক্ষমতা। আর এই ছবি যে তাদের বিশাল এক খোড়াক তা বলার অপেক্ষা রাখে না।


০২) মায়ানদের হস্তনির্মিত বস্তুঃ
এই মায়ান সভ্যতার মধ্যে যে কত রহস্য লুকিয়ে আছে তা বলে শেষ করে যাবে না। সর্বশেষ বার এর রহস্য ধরা পরে ২০১২ সালে। এই বছর মেক্সিকোর সরকার জনসাধরনের দেখার জন্য মায়ানদের হস্ত নির্মিত কয়েকটি জিনিষ উন্মুক্ত করে দেয়, যেগুলি প্রায় ৮০ বছর ধরে মেক্সিকোর সরকার লুকিয়ে রেখেছিল জনসাধরেরন কাছ থেকে। এই জিনিষ গুলি পাওয়া গিয়েছিল এমন এক পিরামিড থেকে যে পিরামিডের অবস্থান আরেক পিরামিডের নিচে, আর এই পিরামিড তৈরি করা হয় "চালাকমুল" (Calakmul) শহরে যা কিনা মায়ানদের আমলে বেশ বড় শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

মায়ানদের হস্ত নির্মিত এই জিনিষ গুলি ভাল মত খেয়াল করলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে এগুলিতে আঁকা ছবি গুলি কিসের। তবে সমস্যা হচ্ছে এগুলিকে তেমন একটা পরীক্ষা করার অনুমতি দেওয়া হয় নাই মেক্সিকোর সরকারের তরফ থেকে এছাড়াও ৮০ বছর আগে যে এগুলি আবিস্কার করেছিল সে মারা যায় এবং তার আবিস্কারের কৃতিত্ব নিয়ে তার সতির্থদের মাঝে বেশ বড় আঁকারের ঝামেলা বাদে, তার ফলশ্রুতিতে এরা একে অপরকে মিথাবাদী বা চোর প্রমানিত করতে যেতে এই সকল জিনিষ গুলিকেও মিথ্যা প্রমানিত করতে কার্পন্ন করেনি। বলতে পারেন নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মেরেছে। আর একারনে নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব না যে আসলেই এগুলা মায়ানদের তৈরি নাকি কোন স্বার্থপর মানুষের লোভের ফসল। তবে তা এখনো সংরক্ষনে রেখেছে মেক্সিকোর সরকার।


০১) রহস্য গোলকঃ
এই রহস্য গোলকের সাথে যে নাম জড়িত তা হল "বেটয" (Betz), কেননা এই বেটয ফ্যামিলি সর্বোপ্রথম এই রহস্য গোলক আবিস্কার করে। একবার আকাশ থেকে ছুটে আসা এক উল্কায় প্রায় ৮৮ একর বনাঞ্চল জুড়ে আগুন লেগে যায়। আর এই আগুন নিভে যাওয়ার পরে বেটয দেখতে যান বনের পুড়ে যাওয়া অংশ আর এসময়ে তিনি রূপালী রঙের মসৃন আর গোলাকার এই বস্তুটি আবিস্কার করেন। প্রথমে ভেবেছিলেন এটি হত নাসা বা সোভিয়েত ইউনিয়নের কোন স্যাটেলাইট কিন্তু পরবর্তিতে ভাবলেন এই অগ্নিকান্ডকে স্বরনীয় করে রাখতে এর থেকে ভাল কোন কিছু আর হয় না, আর সে কারনেই তিনি সংরক্ষন করলেই এই গোলক। এই গোলকের ব্যাস ২০ সেঃমিঃ এবং একদম মশৃন তল বিশিষ্ট।

বাড়ি নিয়ে যাবার পর এটিকে পরিস্কার করে বেটয রেখে দিলে ড্রয়িং রুমে। একদিন বেটয এর ছেলে একই রুমে বসে গিটার বাজাতে ছিল। এসময় এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল, এই গোলক তার গিটারের শব্দের সাথে তাল মিলিয়ে এক অদ্ভুত শব্দ তৈরি করা শুরু করল, যে শব্দ তাদের পোষ্ট কুকুরের জন্য বেশ বিরক্তিকর ছিল। এছাড়াও সময়ের সাথে সাথে আরো অদ্ভুত কিছু চরিত্র ধরা পরল এই গোলকের মধ্যে। যেমনঃ এটিকে যদি ফ্লোরে গড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে এটি আপনা আপনি নিজের চলার দিক পরিবর্তন করতে পারে এবং তা ঘুরে যে গড়িয়ে দিয়েছে তার কাছেই ফিরে আসবে, অনেকটা পোষা কুকুরের মত। বেটয আরো লক্ষ করলেন যেই এই গোলক সূর্যের আলোতে গেলে আরো বেশি চঞ্চল হয়ে ওঠে তার ধারনা এটি সূর্য থেকেই শক্তি পায়।

এর কার্যক্রম দেখলে আপনার মনে হবে যে কেউ এর কাজ কর্ম নিয়ন্ত্রন করে, এছাড়া এর মধ্যে থেকে খুব সল্প মাত্রায় শব্দ আর কাপুনি অনুভব করা যায়, মনে হবে যেন ভিতরে মটর ঘুরছে। আরো অবাক করার বিষয় হচ্ছে এটি মহাকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম। বেটয একবার দেখেন যে এটি টেবিলের পা বেয়ে টেবিলের উপরে উঠে যাচ্ছে। যা কোন ভাবেই কোন বস্তুর জড় গোলকের ক্ষেত্রে সম্ভব না। এছাড়াও মাঝে মধ্যে এটি তীক্ষ একটি শব্দ তৈরি করে।

এই রহস্য চাক্তি নিয়ে "New York Time" এবং "London Daily" তে রিপোর্ট করা হলে এটি সকলের নজড় কারে। এমন কি এটিকে দেখতে সামরিক বাহিনী পর্যন্ত আসে। কিন্তু বেটয এটি কাউকে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু দিনে দিনে এই রহস্য চাকতি বেটয এর রাতের ঘুম হারাম করে দেয়। যেমনঃ হঠাত করে ঘরের সব দরজা জানালা আপনা আপনি আটকে যেতে থাকে আবার হঠাত কোন জায়গা দিয়ে সারা ঘর এক ভোতা শব্দে আচ্ছাদিত হয়ে যেত। এই যন্ত্রনা সহ্য না করতে পেরে শেষে বেটয এটি নেভিদের হাতে তুলে দেয় পরীক্ষা করা জন্য। তারা পরীক্ষা করে জানায় এটি ১০০% উচ্চমানের স্টিলের বল মাত্র। এছাড়া আর কিছুই নেই এর মধ্যে!!!

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info
জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info