কোন কুকুর যদি ঘোড়ার মতো বিশাল হয়! মনে করেন সে এক ইয়া মস্তো বিশাল কুকুর, তার বাঘের মতো বড় বড় থাবা আর এত্তো বড় বড় সিংহের চেয়েও বড়ো লম্বা দাঁত! নিশ্চয় বলবেন, যাহ্ তাই আবার হয় নাকি! কিন্তু আসলেও যে তাই। এমনই একটি কুকুর হচ্ছে জর্জ। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকডর্স তাকে পৃথিবীর সবচে বড় কুকুর বলে ঘোষণাও দিয়ে দিলো। এমনি এমনি তো আর দেয়নি, জর্জ যে মানুষের চেয়েও লম্বা!
জানতে ইচ্ছে হচ্ছে জর্জ কতোটা লম্বা, তাই না? মাটি থেকে ও প্রায় ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা! আর মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত প্রায় ৭ ফুট ৪ ইঞ্চি। এখন মেপে দেখেন তো আপনার আশেপাশের সবচেয়ে লম্বা মানুষটা মাথা থেকে পা পর্যন্ত কতোটা লম্বা। ৭ ফুট লম্বা মানুষই তো খুঁজেই পাবেন না। বুঝতেই পারছেন কি রকম বড়োসড়ো এই জর্জ। ভাবছেন অনেক বুড়ো হয়েছে বলেই বুঝি এতোটা বড় হয়েছে জর্জ তাই কি? না, জর্জের বয়স তো মাত্র ৪ বছর চলছে! ৪ বছর বয়সেই জর্জের দেহ এতো বড়। ভাবা যায়!


ওর থাবা কত বড় হতে পারে? আন্দাজ করেন তো, মানুষের হাতের মুঠোর সমান! চিন্তা করে দেখেন, একটা কুকুরের থাবা যদি বড় মানুষের হাতের মুঠোর সমান হয়, সে কুকুর দেখে কে না ভয় পাবে!
জর্জ নামের এই বিশাল দেহের কুকুরটির গর্বিত মালিক হচ্ছেন দু’জন, ডেভিড নাসের আর ক্রিস্টিন নাসের। মার্কিন মুলুকের অ্যারিজোনা রাজ্যের তুসকানের রাস্তায় তারা যখন জর্জকে নিয়ে ঘুরতে বের হন, তখন কি মজাটাই না হয়। ঘোড়ার মতো ইয়া মস্তো বড় এক কুকুর নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন দুজন। ওদের চেয়ে দেখতে কিন্তু জর্জকেই তখন বেশি বড় মনে হয়। কি দারুণ দৃশ্য, তাই না?
ডেভিড আর ক্রিস্টিন মাত্র ৭ মাস বয়স থেকে এই জর্জকে খাইয়ে দাইয়ে বড় করে তুলেছেন। তখন কিন্তু ওরা ঘুণাক্ষরেও ভাবেন নি যে জর্জ একদিন এতো বিশাল হয়ে উঠবে। বয়সের তুলনায় ও অন্য কুকুরদের চেয়ে অনেক বেশি বড়ই হয়ে উঠতে থাকে। আর এক সময় দেখা যায় যে, আশে পাশের যে কোনো কুকুরই তার কাছে একবারে লিলিপুট। আর এখন তো গিনেস বুকই জানিয়ে দিয়েছে যে, পৃথিবীর সবচে বড় কুকুর হলো জর্জ।
জর্জের মালিক হয়ে ডেভিড আর ক্রিস্টিনের কিন্তু ভোগান্তিও কম নয়। একবার চিন্তা করে দেখেন, এতো বড়ো শরীর যার তার জন্য রোজ কি পরিমাণ খাবারের দরকার পড়ে। শুধু কি খাওয়া দাওয়া? থাকার জন্যও তো ওর একটা বিশাল জায়গাই লাগে? জর্জের ঘুমানোর জন্য তো আলাদা খাটের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। তবুও ওরা জর্জকে নিয়ে মহাখুশি। পৃথিবীর সবচে বড় কুকুরের মালিক বলে কথা। সমস্যা হলো, কেউই আদর করে জর্জকে কোলে নিতে পারে না। এতো বড়ো কুকুরকে কোলে নিতে হলে তো রীতিমতো শক্তিশালী পালোয়ানই হতে হবে। একবার জর্জকে কোলে নেবার চেষ্টা করতে যাবেন নাকি?
জর্জ যে শুধু বিশাল তাই নয়, ইতিমধ্যে বেশ বিখ্যাতও হয়ে গেছে সে। ওর ভক্তদের জন্য এরিমধ্যে ফেসবুকে আলাদা পেজও খোলা হয়েছে। আপনি চাইলে সেখানে অংশ নিয়ে ওর ভক্তও হয়ে যেতে পারেন।
জর্জই এখন পৃথিবীর সবচে বড় কুকুর। কিন্তু যার রেকর্ড ভেঙে জর্জ গিনেসে এই রেকর্ডটি করেছে তার নাম জানেন? তার নাম হচ্ছে, "টাইটান"। টাইটানের চেয়ে জর্জ মাত্র ০.৭৫ ইঞ্চি লম্বা। এ নিয়ে ঝামেলাও অবশ্য কম হয়নি। শেষে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বিচারকরা এসে মেপেটেপে রায় দিয়েছেন যে, আর গোলমাল নয়, জর্জই হচ্ছে পৃথিবীর সবচে বড় কুকুর।
এতক্ষণ ধরে এই এত্তো বড় কুকুরের কথা শুনে ভয় পেয়েছেন নাকি? ভয় পাওয়ার আসলে তেমন কিছুই নেই। আর জর্জ একবারেই কোনো ভয়ানক ধরনের কুকুর নয়। ও খুবই ভালো একটা কুকুর। জর্জ নাকি কাউকে কামড়ও দেয় না। খুবই নিরিহ কুকুর জর্জ।
লেখকঃ নাবীল জাহান।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
লেখকঃ নাবীল জাহান।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন