স্কাইডাইভিং এর নতুন রেকর্ড ।। New Record Of Skydiving


অষ্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার 'ফেলিক্স বমগার্টনার' ৯ অক্টোবর ২০১২ সালে ১২৮,১০০ ফুট উচ্চতা থেকে লাফ দিয়ে এবং সে সময়ে স্কাইডাইভিং এর সর্বোচ্চ গতি ৮৩৩.৯ মাইল প্রতি ঘ্নটা বেগে ছুটে আসেন পৃথিবীর বুকে; আর একই সাথে প্রথম বারের মত সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে স্কাইডাইভিং এর রেকর্ড এবং একই সাথে সর্বোচ্চ গতিতে পৃথিবীর বুকে পতিত হবার রেকর্ড অর্জন করেন। তার এই অর্জন ১২.৬ মিলিয়ন লোক সরাসরি টিভিতে দেখেছিল। কিন্তু অতিসম্প্রতি ২৪ শে অক্টোবর ২০১৪ সালে ৫৭ বছর বয়স্ক কম্পিউটার বিজ্ঞানী 'অ্যালেন ইউছটেস' ভেংগে দিয়েছেন 'ফেলিক্স বমগার্টনারের রেকর্ডটি। তিনি ১৩৫,৮৯০ ফুট উচ্চতা থেকে স্কাইডাইভিং করে ফেলিক্স বমগার্টনারের রেকর্ডটি টোপকে নিজের নাম লেখান ইতিহাসের পাতার সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে স্কাইডাইভিং এর।


স্কাইটাইভিং এর জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা পান 'Paragon Space Development Corporation' এর কাছ থেকে। এই স্কাইডাইভিং এর জন্য যে স্যুট ব্যাবহার করা হয়েছে সেটি মূলত এই কম্পানির তৈরি। এই স্যুটটি তৈরি করা হয়েছে মূলত মহকাশ যাত্রীদের জীবন রক্ষাকারী স্যুট হিসেবে। অ্যালেন ইউছটেস মূলত ছিলেন এই স্যুটের টেষ্ট ড্রাইভার। এর বাস্তব কার্যপ্রনালী পরীক্ষা করার জন্য এই স্যুটটি ব্যাবহার করার অনুমতি পান অ্যালেন ইউছটেস। এই স্যুটের মূল কাজ হল ভূ-পৃষ্ট থেকে উপরে ওঠা এবং নিচে নামার সময় তাপমাত্রা ও বায়ুচাপের যে পরিবর্তন হয় তা নিয়ন্ত্রনে রাখা আর পরিধেয় ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট পরিমান অক্সিজেন উৎপন্ন করা যাতে শ্বাস-প্রশ্বাসে কোন অসুবিধা না হয়।


অ্যালেন ইউছটেস গুগলে কর্মরত সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তার এই স্কাইডাইভিং এর যাত্রা শুরু হয় মেক্সিকোর রজওয়েল রানওয়ে থেকে। একটি বিশাল হিলিয়াম পূর্ন বেলুনের মাধ্যমে। এই বেলুনটি সরাসরি অ্যালেন ইউছটেসের স্যুটের সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হয় যা তাকে নিয়ে যায় ভূ-পৃষ্ঠ হতে ১৩৫,৮৯০ ফুট উচ্চতায়। এই উচ্চতায় পৌছাতে অ্যালেন ইউছটেসের সময় লেগেছিল ২ ঘন্টা। যেহেতু তাকে ফেলিক্স বমগার্টনার এর মত কোন ক্যাপসুলে করে পাঠানো হয় নাই তাই তিনি তার এই উচ্চতাকে খুব ভাল ভাবেই অনুভব করতে পেরেছিলেন, আর শুধু মাত্র বেলুনের সহায়তায় ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৩৫,৮৯০ ফুট উচ্চতায় ঝুলে থাকাটাও কম রোমাঞ্চকর ছিল না অ্যালেন ইউছটেসের কাছে। যখন তিনি তার নির্ধারিত উচ্চতায় পৌছে যান তখন ছোট একটি নিয়ন্ত্রিত বিষ্ফোরণ তাকে বেলুন থেকে আলাদা করে দেন আর তিনি ছুটে আসেন ভূপৃষ্টের দিকে। ২৫ মাইল এই পথ অতিক্রম করতে তিনি সময় নেন মাত্র ১৫ মিনিট।


অ্যালেন ইউছটেস ভূ-পৃষ্ঠের দিকে ফিরে আসার সময় তার গতি ছিল প্রতি ঘন্টায় ৮২২ মাইল। আর শব্দের গতিকে অতিক্রম করতে তিনি সময় নেন মাত্র ২ মিনিট। ফেলিক্স বমগার্টনার এর গতি ছিল প্রতি ঘন্টায় ৮৩৩.৯ মাইল। অ্যালেন ইউছটেস ফেলিক্স বমগার্টনার এর উচ্চতার রেকর্ড ভাংতে পারলেও গতির রেকর্ড ভাংতে পারেন নাই। ১৮,০০০ ফুট উচ্চতায় তিনি তার প্যারাসুট খোলেন এবং নিরাপদেই ভূ-পৃষ্টে ফিরে আসেন। তিনি যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেন তার থেকে ৭০ মাইল দূরে অবতরন করেন।

এবার চলুন অ্যালেন ইউছটেস এর অভিযান নিয়ে ভিডিও প্রতিবেদন দেখে নেই,


Download

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info