বিশ্বের সব থেকে লম্বা মানুষ ।। World's Tallest Human


আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব "রবার্ট পারসিং ওয়াডলো" (Robert Pershing Wadlow) এর সাথে, যিনি বর্তমানেও বিশ্বের সব থেকে উঁচু বা লম্বা মানুষের খেতাবের অধিকারি। তার জীবন কাল ১৯১৮ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত। মাত্র ২২ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি, মৃত্যর সময় তার উচ্চতা ৮ ফুট ১১.১ ইঞ্চি আর ওজল ছিল ২২২.২৬ কেজি। তার এই অসাভাবিক লম্বা হবার পিছে দায়ি ছিল এলিজা সিলভা এর মত বৃহৎ পিটুটারি গ্লান্ড। এলিজা সিলভার চিকিৎসা যদি যথা সময়ে না হত তাহলে হয়ত এলিজা সিলভাকেও বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হত না।

রবার্ট পারসিং ওয়াডলোর জন্ম হয় ১৯১৮ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি, আমেরিকার এলটোন শহরে। জন্মকালীন সময়ে তার ওজন ছিল ৩.৮ কেজি। অনেক আগেই সে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে, কেননা সে তার আরো চার ভাইদের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি বড় হচ্ছিল, মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তার উচ্চতা দাঁড়ায় ৭ ফুট ৪ ইঞ্চি। ১৮ বছর বয়সে তার উচ্চতা দাঁড়ায় ৮ ফুট ৪ ইঞ্চি আর ওজন ১৭৭ কেজি। তার পায়ের জুতার সাইজ ছিল ৩৭।


৩৭ সাইজের জুতা বানাতে তৎকালীন সময়ে খরচ যেত প্রায় ১০০ ডলারের মত, এসময় তিনি একটি আন্তর্জাতিক জুতা কম্পানির সাথে চুক্তি করেন যার ফলে তিনি তার জীবন দশায় বিনামূল্যে জুতা পেতেন ঐ কম্পানির কাছ থেকে বিনিময়ে তাদের কম্পানির প্রচারনা করতেন তিনি।

১৯৩৬ সালে তিনি Shurtleff College এ আইন বিষনে ভর্তি হন, এক বছর পরেই অর্থাৎ ১৯৩৭ সালে তিনি পূর্বের সবথেকে লম্বা ব্যাক্তির রেকর্ড টপকে যান আর বিশ্বের সব থেকে লম্বা ব্যাক্তির রেকর্ডের মালিক হন। এই অধিক লম্বা হবার কারনে তার পা দূর্বল হয়ে যায় ফলে তিনি পায়ে ধাতব ব্রেস পরা শুরু করেন, এছাড়াও তার পায়ের অনুভূতি শক্তি মারাত্মক ভাবে কমতে থাকে।

দাদির সাথে
১৯৪০ সালের ৪ই জুলাইতে তিনি মারাত্মক ভাবে অসুস্থ হয়ে পরেন। ডাক্তাররা দেখতে পান যে তার পায়ের ব্রেস গুলির সমস্যার কারনে তার পায়ে এক জায়গায় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর সেখানে ইনফেকশন দেখা দেয়। ইনফেকশনের মাত্রা অনেক বেশি ছিল তা ইতি মধ্যে তার রক্ত প্রবাহের মধ্যে প্রবেশ করেছে। এ সময়ে রবার্ট পারসিং ওয়াডলো কিছু টের পান নাই কেননা ইতি মধ্যে তার পায়ের সকল অনুভূতি লোপ পেয়েছিল। এ সময় ডাক্তাররা তাকে নতুন রক্ত দেওয়া শুরু করে সাথে অপারেশনের মাধ্যমে তার ক্ষত স্থান সারাবার চেষ্টা করে, কিন্তু কোন কিছুতেই তার জ্বর কমানো যাচ্ছিল না বরং তা আরো বেড়ে যাচ্ছিল। অবশেষে ১৯৪০ সালের ১৫ই জুলাই ঘুমের মধ্যেই মারা যান বিশ্বের সব থেকে লম্বা মানুষ রবার্ট পারসিং ওয়াডলো। ১৯ই জুলাই তার দাফন সম্পন্ন করা হয় এলটোন শহরে।

১৯৮৪ সালে তার স্বরনে তার জন্ম শহরে তার একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি স্থাপন করা হয়। এসময় তার পরিবারের লোকেরা রবার্ট পারসিং ওয়াডলোর বায়বহার যা কিছু ছিল সব কিছু পুরিয়ে ফেলে, তা না হলে আজ তার ব্যাবহার করা অনেক জিনিষ সংরক্ষন করা যেত।

রবার্ট পারসিং ওয়াডলোর বয়স ও তার উচ্চতাঃ
  • ০৮ বছর = ৬ ফুট
  • ১০ বছর  = ৬.৬ ফুট
  • ১৪ বছর = ৭.৪ ফুট
  • ১৬ বছর = ৭.১০ ফুট
  • ১৭ বছর = ৮.১ ফুট
  • ১৮ বছর = ৮.৪ ফুট
  • ২২ বছর = ৮.৯ ফুট (জন্মদিন)
  • ২২ বছর = ৮.১১ ফুট (মৃত্যু দিন)
রেডিও অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info
জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info