আপনাদের কি এবিগ্যাল ও ব্রিটনির কথা মনে আছে। ঐ যে "একই দেহে দুই বোন এবিগ্যাল এবং ব্রিটনি" লেখায় আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম এই দু'বোনের সাথে। আজ আপনাদের এরকম আরেক জনের বা জনদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব। তবে এবারে যার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব সে কিন্তু সুদুর কোন দেশের বাসিন্দা না। সে আমাদের এই বঙ্গ দেশের। তাহলে চলুন আজ সেই বালকদের কথা জেনে নেই যাদের দেহ বৈশিষ্ট্য এবিগ্যাল ও ব্রিটনির সাথে মিলে যায়।
এটি অনেক অনেক বছর আগের ঘটনা, সেই ১৭৮৩ সালের। এই বছর "মুন্ডুল গাইত" (Mundul Gait) নামক গ্রামে জন্মগ্রহন করে দু'মাথায়ালা বালক। জোড়া লাগানো যত গুলি বাচ্চা দেখা গেলেও এরা ছিল একটু অন্যরকম। মাথা দু'টা থাকলেও এদের দেহ ছিল একটা। মানে দু'জনার মধ্যে একজন মাত্র দেহের সব কিছু পরিচালনা করতে পারত। আর এরা একজন আরেক জনের মাথার উপরে লাগানো ছিল। এরকম জোড়া লাগানো বাচ্চার ঘটনার কথা আর কখনই জানা যায় নাই।
যা বলছিলাম, এদের জন্ম নেবার সাথে সাথে এদের মা এদের আগুনের মধ্যে ছুড়ে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরবর্তিতে মা বাবা দু'জনে বাচ্চাদের জীবিত রাখে। কেননা, এরা ভেবেছিল এদের দেখিয়ে ভিক্ষা করলে বেশ ভালই অর্থের জোগান হবে।
যা বলছিলাম, এদের জন্ম নেবার সাথে সাথে এদের মা এদের আগুনের মধ্যে ছুড়ে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরবর্তিতে মা বাবা দু'জনে বাচ্চাদের জীবিত রাখে। কেননা, এরা ভেবেছিল এদের দেখিয়ে ভিক্ষা করলে বেশ ভালই অর্থের জোগান হবে।
যা ভাবা সেই কাজ, চার বছর পর্যন্ত এই বাচ্চাদের নিয়ে মাঝে মাঝে ভিক্ষা করে আবার মাঝে মাঝে অভিশাপের ভয় দেখিয়ে বেশ ভালই অর্থ উপার্জন করছিল তারা। কিন্তু এই বালকদের বয়স যখন ৪ বছরের মাঝা মাঝি তখন সাপের কামড়ে মারা যায় তারা। এই চার বছরের মধ্যেই এদের নাম ডাক বেশ ভালই ছড়িয়ে পরে। বলতে পারেন বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিল এরা। এই খ্যাতির পিছনে কিছুটা ধর্মীয় কারন রয়েছে। যেহেতু হিন্দু ধর্মে দেবতাদের বহু মাথা আর এই বাচ্চাদেরও দুই মাথা। আর সেই সময়ের মানুষতো আর বর্তমান সময়ের মত এত শিক্ষিত ছিল না।
আগেই বলেছি এই ঘটনা ১৭০০ শতকের। সেই সময় পুরা ভারতবর্ষ জুড়ে রাজত্য ছিল ব্রিটিশদের। ততকালিন সময়ে এই বিস্ময়কর বালক মারা যাবার পর ব্রিটিশ সরকার এই বালকদের দেহ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য নিয়ে নিতে চায়। কিন্তু মা বাবার আপত্তি ও গ্রাম বাসিদের বাধার মুখে তারা নিতে ব্যার্থ হয়। মা বাবার ইচ্ছায় "তামলুক" নামক শহরের বাইরের দিকে এই বিস্ময়কর বালকদের সৎকার করা হয়।
কিন্তু ব্রিটিশ সরকার কি আর হাল ছাড়ার পাত্র? মৃতদেহ মা বাবার কাছ থেকে নিতে না পেরে Mr. Dent নামক একজন ইষ্ট ইন্ডিয়া কম্পানির এক এজেন্টের সহায়তায় কবর খুড়ে শুধু মাত্র মাথাটা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেয় ইংল্যান্ডে।
আর এই মাথার প্রথম বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করেন Surgeon John Hunter। তার পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে তিনি মাথার খুলি সংগ্রহ করে রাখেন। আর এই জোড়া লাগানো মাথার খুলি এখন পর্যন্ত সংরক্ষিত আছে Hunterian Museum এর Bizarre Specimens & Medical Anomalies শাখায়।
এই বালকদের সম্পর্কে আরেকটু তথ্য দেই, তা হল এই দুজন সম্পূর্ন আলাদা আলাদা ভাবে চিন্তা করতে, কথা বলতে পারত। আর Surgeon John Hunter পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পান যে এই দুটি মাথার মধ্যে সম্পূর্ন দুটি ভিন্ন ব্রেন ছিল। অর্থাৎ তারা সম্পূর্ন দু'টি আলাদা মানুষ ছিল।
লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
আর এই মাথার প্রথম বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করেন Surgeon John Hunter। তার পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে তিনি মাথার খুলি সংগ্রহ করে রাখেন। আর এই জোড়া লাগানো মাথার খুলি এখন পর্যন্ত সংরক্ষিত আছে Hunterian Museum এর Bizarre Specimens & Medical Anomalies শাখায়।
এই বালকদের সম্পর্কে আরেকটু তথ্য দেই, তা হল এই দুজন সম্পূর্ন আলাদা আলাদা ভাবে চিন্তা করতে, কথা বলতে পারত। আর Surgeon John Hunter পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পান যে এই দুটি মাথার মধ্যে সম্পূর্ন দুটি ভিন্ন ব্রেন ছিল। অর্থাৎ তারা সম্পূর্ন দু'টি আলাদা মানুষ ছিল।
লেখকঃ জানা অজানার পথিক।