অক্ষত "ম্যামথ" দেহ


"Ice Age" এনিমেটেড সিনেমা যারা দেখেছেন তাদের নিশ্চয়ই ম্যামথের সাথে আর পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। বিশাল দেহী, ছোট কান (হাতির তুলনায়), বিশাল দাঁত, লোমে ভরা দেহ আর বিশাল বড় শুঁড়। আকৃতিতে হাতির মত হলেও আকার কিন্তু হাতির তুলনায় অনেক বড়। প্রাকঐতিহাসিক সময়কার এই প্রানী। বিলুপ্ত ঘটেছে প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর আগে। মানে ডাইনোসর এর সময়কার প্রানী এটি। তখন বিশাল দেহী প্রানীর রাজত্ত্ব ছিল এই পৃথিবীতে। তারপর হঠাৎ যেন বদলে যেতে থাকল এই পৃথিবীর পরিবেশ আর পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে উঠতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে গেল এই সব ভয়ংকর বিশাল বিশাল প্রানী।


যখন আমি কোন জায়গায় যেয়ে নিজেকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারি না তখন শুধু একটা কথাই মনে করি, "এই পৃথিবীতে বিশাল দেহী ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটেছে কিন্তু মানুষ নামে এই ক্ষুদ্র আর দূর্বল প্রানী বেঁচে আছে কেননা ডাইনোসর তার পারিপার্শিক পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে নাই, আর মানুষ পেরেছে তাই তারা বেঁচে আছে।" এই কথা আমাকে স্বরণ করিয়ে দেয় যে আমি সেই প্রজাতির প্রানী যে বহু অপ্রতিকু পরিবেশের পরেও নিজের অস্তিত্ব স্বগৌরবে ধরে রেখেছে, কারন তার পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেবার সর্বাধিক ক্ষমতা রয়েছে।

যা হোক নিজের কথা বাদ দিয়ে এবার মূল কথায় ফেরা যাক,


২০১০ সালে, রাশিয়ার সাইবেরিয়ার উত্তর পশ্চিম দিকের শহর "ইয়ামাল পেনিনসুলা" (Yamal Peninsula), আর এই শহরেই খুঁজে পাওয়া গেছে প্রায় অক্ষত এক ম্যামথের বাচ্চার দেহ। জানেনতো রাশিয়া শীত প্রধান দেশ আর এই কারনেই হয়ত অক্ষত রয়ে গেছে এই ৩৯০০০ বছর পুরাতন ম্যামথের বাচ্চার দেহ। এটি এ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া সব থেকে অক্ষত ম্যামথ দেহ।


এই ম্যামথ বাচ্চাটির বয়স ছিল ১০ বছর যখন সে মারা যায়, আর প্রকান্ড ঠান্ডার কারনে তা প্রায় অক্ষত অবস্থায় বরফের মধ্যে সমাধিত হয়ে থাকে। এটি এতটাই অক্ষত ছিল যে এর লিংগ কি তা বুঝতে কোন পরীক্ষা করা লাগে নি। শুধু মাত্র দেখেই বলা যায় যে এটির লিংগ কি? কি খুব জানতে ইচ্ছা করছে এই ম্যামথ পুরুষ না স্ত্রী। এটি স্ত্রী ম্য্যামথ। আর এর ওজন ১১০ পাউন্ড। আকার আকৃতিতে একটা বড় কুকুরের সমান।


এই বাচ্চা ম্যামথের নাম দেওয়া হয়েছে "ইওকা" (Yuka), কেন এই নাম দেওয়া হয়েছে? আসলে এই নাম দেওয়া হয়েছে এর আবিস্কারের স্থান "ইয়াকুতিয়া" (Yakutia) এর নামের উপর ভিত্তি করে।

আর কথা না বাড়িয়ে চলুন দেখে নেই এই ম্যামথ বাচ্চাটির আরো কিছু ছবি,


বলে রাখি, আমি এই লেখা লিখতে যেয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘুটাঘুটি করতে যেয়ে কিছুটা দ্বিধার মধ্যে আছি, কারন একেক জায়গায় একেক তথ্য দেওয়া। যেমনঃ এর আবিস্কার সাল, নাম কিসের উপর ভিত্তি করে রাখা হয়েছে আর এর আনুমানিক বয়স কত। আমি এখানে যে তথ্য গুলি দিয়েছি তা জাপানি একটি পত্রিকার দেওয়া তথ্য। এখানকার তথ্য আমি এই কারনে দিয়েছি, কেননা এই ম্যামথ বাচ্চাটি আবিস্কারের পর CT Scan এর জন্য একে জাপানে পাঠানো হয়। এই কারনে এখানকার তথ্য সর্বাধিক নির্ভুল হবে এই ভেবেই তথ্য গুলি দেওয়া।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info