পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো গুহা

গুহা তো চেনেনই আপনারা। অনেকেই হয়তো দেশের বাইরে ঘুরতে গিয়ে নানা রকম গুহা দেখে এসেছেন। শুধু দেশের বাইরে কেন, আমাদের দেশেও তো বেশ কয়েকটি গুহা আছে।


সেখানেও প্রতিবছর দলবেঁধে বেড়াতে যায় অনেকেই। এই গুহা গুলো প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়। কোনোটি হয় এতোই ছোট যে একজন মানুষ হয়তো কোনোভাবে আশ্রয় নিতে পারে সেখানে। আবার, কোনোটি হয় এতোই বড়ো যে, একটা ছোটখাটো শহর ওর ভিতরে সেঁধিয়ে যাবে!!

hybridknowledge.info hybridknowledge.info


কী, বিশ্বাস হচ্ছে না তো? আজকে আপনাদের এমনই একটি গুহার কথা জানাবো, যেটি কিনা এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গুহা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। এতোই বড় যে, একটা ৪০ তলা বিল্ডিং খুব সহজেই সোজা দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে এর মধ্যে। গুহার মধ্যে যে নদীটা আছে, সেখানে ভেসে থাকতে পারবে একটা আস্ত জাহাজ। আর গুহার শেষ মাথা? চোখেই দেখা যাবে না! এত্তো বড়ো গুহাটি কোথায় জানতে ইচ্ছা করছে তো? ভিয়েতনামের এই "সান ডং" গুহাটির গল্প শোনাবার জন্যই আজ বসেছি আপনাদের সামনে।


ভিয়েতনামের এক প্রত্যন্ত এলাকায়, একদম শেষ সীমানায়; লাওস সীমান্তের কাছে এই সান ডং গুহাটি। শুধু ভিয়েতনাম কেভ নামেও এর পরিচিতি রয়েছে। ইংল্যান্ড আর ভিয়েতনামের এক যৌথ প্রত্নতত্ত্ব দল এই গুহাটি সবার সামনে নিয়ে আসে। সহজে কারো নজরে পড়েনি কেন এই গুহাটি এত দিন জানেন? কারণ, গুহামুখটি ছিল জঙ্গলে ঢাকা। বছর কয়েক আগে ঐ এলাকার এক কৃষক অনেকটা ভাগ্যক্রমেই এই গুহা মুখের সন্ধান পান। তিনিই পরবর্তীতে অভিযাত্রী দলটিকে পথ দেখান। অনেক দুর্গম পথ পেরিয়ে অভিযাত্রী দলটি সান ডং গুহায় পৌঁছানোর পর বিষ্ময়ে একদম থ মেরে যায়। ওরা দেখে, একটা বিশাল বড়ো নদী ঐ গুহার মধ্যে দিয়ে ছুটে চলেছে। আর কী বিশাল বিশাল একেকটা থাম সোজা দাঁড়ানো মাটি থেকে প্রায় ছাদ পর্যন্ত! একেকটা থাম ৭০ মিটারেরও বেশি লম্বা। মানে কিনা ২০ তালারও বেশি লম্বা! ভাবা যায়!!


অভিযাত্রী দলটি সাড়ে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত হেটে হেটে যেতে পেরেছিল। বন্যার পানি থাকায় আর তারা এগুতে পারেনি। তার মানে কী দাঁড়ালো, বুঝতে পারছেন তো? মানে হচ্ছে, এই গুহা, আসলে আরো অনেকটা লম্বা! গুহাটির বেশিরভাগ অংশই ২৬২ ফুট বাই ২৬২ ফুট (৮০ বাই ৮০ মিটার) মাপের। এদিক থেকে এর আগে খুঁজে পাওয়া মালয়েশিয়ার বোর্নিও দ্বীপের ডিয়ার কেভ বা "হরিণ গুহা" অনেকটাই বড়ো। ওটার মাপ হচ্ছে ৩০০ বাই ৩০০ ফুট (৯১ বাই ৯১ মিটার)। তবে কিনা, হরিণ গুহাটি মাত্র ১.৬ কিলোমিটার লম্বা। কাজেই সর্বমোট জায়গার হিসেবে সান ডং গুহাটিই হয়ে যাচ্ছে সবচেয়ে বড়ো। ও হ্যাঁ, আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি এখানে, "সান ডং" এর মোটামটি মাইল খানেক জায়গা ৪৬০ বাই ৪৬০ ফুট (৯১ বাই ৯১ মিটার) আয়তনের। তাহলে কী দাঁড়ালো, এটাই তো সবচেয়ে বড়ো গুহা হওয়ার দাবী রাখলো, তাই না?

কি ভাবছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো গুহাটি একবার সামনি সামনি দেখে আসতে পারলে মন্দ হতো না, তাই তো? সে তো সুযোগ হলে যাবেনই। আজ না হয় শুধু ছবি দেখে মনের ক্ষুদা মিটান।

লেখকঃ তাহসান আহমেদ।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।