কাঠখেকো ক্যাটফিশ ।। Wood Eating Catfish

বলেন তো মাছ কি খায়?! সে তো অনেক কিছুই খেতে পারে, তাই না! পোকমাকড় থেকে শুরু করে, ঘাস লতা পাতা, কী খায় না? তাই বলে মাছ যদি কাঠ খায়? বিশ্বাস হচ্ছে না? মাছ কিন্তু কাঠও খায়। অন্তত বিজ্ঞানীরা সেরকমই জানিয়েছেন। ব্যাপারটা একটু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি সত্যি আমাজন রেইন ফরেস্টে এক ধরনের ক্যাটফিশ পাওয়া গেছে যেগুলো শুধু কাঠই খায়। এদের আবার ধারালো দাঁত আছে। এই দাঁত দিয়েই তারা নাকি বড় বড় গাছ রীতিমত সাবাড় করে দেয়। চলেন তবে শুনি কাঠখেকো সেই মাছের কথা।


কাঠ পেলেই এই মাছেরা ছেড়ে কথা বলে না। দল নিয়ে হামলে পড়ে কাঠের উপরে। তারপর চলতে থাকে কাঠ দিয়ে ভুড়িভোজ। তবে সত্যিটা হলো এসব ক্যাটফিশ কেবল শখ করেই কাঠ খায়। কিন্তু তা হজম করার সামর্থ্যটুকু তাদের নেই। তবে তারা বাঁচে কিভাবে? এই মাছেরা যে কাঠ খায় তার গায়ে লেগে থাকা বিভিন্ন খাদ্যকণাই কেবল তাদের পেটে থাকে। আর পেটে যাওয়া কাঠগুলো শেষ পর্যন্ত বর্জ্য আকারে বের হয়ে আসে। এ রকম কাঠখেকো ক্যাটফিশগুলোর কোনো নাম কিন্তু এখনও বিজ্ঞানীরা জানাতে পারেননি।

প্রজাতি এক হলেও এই ক্যাটফিশগুলো আমাদের দেশের ক্যাটফিশগুলোর চেয়ে কিন্তু বেশ আলাদা। তবে পেরুর লোকজন এই মাছটাকে বেশ পছন্দই করে। তারা এই মাছের স্যুপ ও বিভিন্ন খাবার বানিয়ে খায়। এদের শরীরে শক্ত একটা খোলস থাকে। এই খোলস সরিয়ে ফেললেই মাছগুলো হয়ে যায় খাবার উপযোগী। আর তখন এদের দিয়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন উপাদেয় খাদ্য। লম্বায় এই ক্যাটফিশগুলো নাকি আড়াই ফুট পর্যন্ত বড় হয়ে থাকে।


বিজ্ঞানীরা বলেছেন এই মাছের রয়েছে চামচের মতো শক্ত ও ধারালো দাঁত। এই দাঁতের কারণেই কাঠ খেতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। সেই সঙ্গে আবার রয়েছে বেশ শক্ত ঠোঁট। কাজেই কাঠ খাবার বেশ ভালো রকম বন্দোবস্ত তাদের রয়েছে তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছো। আর কাঠ খাবার ব্যাপারে এরা বেশ পেটুকই। দলের সবাই মিলে কাঠ খেতে শুরু করলেও তাদের মধ্যে চলে পাল্লা। কে কতো বেশি খেতে পারে! ভাবেন তো একবার কাঠের মতো একটা জিনিস এভাবে পাল্লা দিয়ে খাওয়া দেখতে কেমন লাগবে?


যদি জিজ্ঞেস করেন এই মাছগুলো থাকে কোথায়! তবে শোনেন, কাঠখেকো ক্যাটফিশগুলো থাকে আমাজনের বিভিন্ন নদীর তলায়, শক্ত পাথরের নীচে। তবে যদি কাঠের দেখা মেলে তবে আর তাদের পায় কে! কাঠ আছে এমন জায়গায় তারা পাথরের নীচেই থাকে তবে এবারে তারা নরম কাদার সঙ্গে বেশ ভালো মতো কাঠের গুড়ো মিশিয়ে নিয়ে আনন্দেই থাকে।


এই ক্যাটফিশগুলোর মাথার দিকে ব্রাশের মতো পাখনা ছাড়াও একাধিক পাখনা আছে। বিপদে পড়লে এসব পাখনা ছড়িয়ে এবং দাঁত বের করে ভয় দেখাতেও ছাড়ে না এরা।

শুনলেন তো কাঠখেকো মাছেদের কথা। তবে আপনি যেনো ভুল করে কাঠ খেতে চেষ্টা করবেন না। পরে আবার দাঁত ভেঙে বিচ্ছিরি কাণ্ড ঘটে যাবে।

লেখকঃ মিন্টু।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info