জীবন যুদ্ধে বিজয়ী এক 'ডেনিয়েল বার্ট' ।। Winning the battle of life 'Danielle Bert'


আজ আমি আপনাদের যার কথা শুনাব তার নাম ডেনিয়েল বার্ট। এনার বর্তমান বাসস্থান স্যান ডিয়াগো (ক্যালিফর্নিয়া) আর তার বয়স মাত্র ২৫বছর। আর তারন্যের বয়সে অন্যান্য আমেরিকানদের মত তারও আছে হরেক রকম ইচ্ছা। এই যেমন, ঘোরাঘুরি করা, পাহাড় চড়া, সার্ফিং করা, বিভিন্ন ধরনের গেম খেলা। ইত্যাদি। কিন্তু এই মেয়েটির ডান পা নেই। কি অবাক হলেন? কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যে তাকে আটকে রাখতে পারে নাই। আজ শুনাব সে কথা।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info


মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক দুর্ঘটনা মানুষকে বদলে দেয়। তাদের ভাসিয়ে নিয়ে যায় কোন এক অচেনা নিঃসঙ্গ জীবনে। যেখানে সে নিজেকে একদম একা ভাবে। হতাশার বেড়া জাল যেন তাকে খুড়ে খুড়ে খায়। অনেক বিকলংগ ব্যাক্তি আছে যারা তাদের জীবনের ঘটে যাওয়া দুরঘটনা কে ভূলে থাকতে আশ্রয় নেয় মদ্য পানের। তারা কেউ তাদের জীবনের দূর্ঘটনা কারো সাথে কোন দিন ভাগাভাগি করে নিতে পর্যন্ত রাজি থাকে না। কিন্তু এই মেয়েটি মোটেও এরকম নয়। সে তার জীবনের দূর্ঘটনা কাউকে বলতে কোন দ্বিধা বোধ করে না। কেননা তার মতে জীবনে যা ঘটে গেছে তা সে হাজার চাইলেও এড়িয়ে যেতে পারবে না, আর কেউ তা পিছে তার জন্য দুঃক্ষ প্রকাশ করবে তা তার মোটেও পছন্দ না। এ কারনে সে তার মনের কথা বা দুর্ঘটনার পুংখান পুংখ আলোচনা করতে বিন্দু মাত্র দ্বিধা গ্রস্থ হয় না। হয়ত এটাই তার হতাশা কেটে ওঠার মূল অস্ত্র। কে জানে এটাই হয়ত তাকে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে সহায়তা করে। মনের বোঝা গুলিকে দূরে ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগায়।


তাকে কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে তাহলে তার সরল উত্তর ৮ বছর আগে এক মটর সাইকেল দূর্ঘটনায় সে তার ডান পা হারিয়েছে।

এখন সে সার্ফ করা শিখেছে চার বছর আগে। যদিও একটি প্লাষ্টিকের পা দিয়ে তা করা মোটেও সহজ কোন কাজ না তারপরেও অনেক সময় আর পরিশ্রম করার পরে তা করতে পেরেছেন তিনি। হাটুর নিচের অংশ নেই। সেই অবস্থায় ব্যালেন্স করা অনেকটা দুরহ ব্যাপার হলেও তার বন্ধুরা তাকে অনেক সহায়তা করেছে।


তিনি বেড়ে উঠেছেন নিউ জার্জির সমুদ্র পাড় অঞ্চলে। অর্থাৎ অনেক আগের থেকেই তার শখ ছিল তিনি সার্ফিং শিখবে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারনে তার শেখা হয়ে ওঠে নাই। আর যখন নিজে মোটা মুটি আয় করা শুরু করলেন তখন তিনি তার পা হারালেন।

দুর্ঘটনার পরে এক পা দিয়ে কোন ভাবে পানিতে নামার সাহস পেতেন না। এর পর তিনি নকল পা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। যেটা তার জীবনের সব থেকে কষ্টের সময় ছিল। কেননা তখন তার মনে হচ্ছিল তিনি আসলেই আজ অচল। আর এর জন্য অনেক হতাশায় ভূগতেন তিনি। কিন্তু মন কে বুঝিয়ে তিনি প্রথমে নকল পার সাহায্যে সাঁতারের চেষ্টা করেন এবং ধিরে ধিরে তিনি তাতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন।


সমুদ্রে সার্ফিং করা বাদেও সে সব ধরনে স্কেটিং করতে পারেন। যেমন, স্নোবর্ডিং, স্কেটবর্ডিং, সাতার ইত্যাদি।


ডেনিয়েল বার্টের মতে, "শারিরিক প্রতিবন্ধকতা মানে যে ইচ্ছা গুলির মৃত্যু হবে তা নয়। এই পৃথিবিতে আমাদের অনেক কিছু করার আছে, যা করার ইচ্ছা হয় সেটা করার চেষ্টা করার মধেই লুকিয়ে থাকে আমার সফলতা।"

আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছে যাদের অনেক কিছু আছে কিন্তু তারপরেও তারা হতাশায় ভোগে, তাদের উদ্দেশ্যে আজ এই লেখা উৎসর্গ করলাম। আর কি নাই সেটা নিয়ে না ভেবে কি আছে সেটা নিয়ে ভাবেন, দেখবেন না পাওয়ার পাল্লার থেকে পাওয়া জিনিষের পাল্লাই ভারি হবে।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।