বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট, বাংলা ভাদ্র মাসের ১২ তারিখে। আমরা অবশ্য ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করি। সেদিন তো তাকে নিয়ে অনেক অনুষ্ঠানই হবে। হতেই হবে, তিনি যে আমাদের জাতীয় কবি! তার আগে তার সম্পর্কেও তো বেশ করে জেনে রাখা চাই নাকি? চলেন তাহলে আজকে আমরা তাঁর সম্পর্কে খুব করে খোঁজ খবর নিয়ে আসি।
জাতীয় কবির জন্ম কবে হয়েছিলো সে তো সবাই জানেন; ২৫শে মে ১৮৯৯ (বাংলা ১১ জৈষ্ঠ্য ১৩০৬)। সেদিন কি বার ছিলো সেটা কি জানেন? মঙ্গলবার। তিনি জন্মেছিলেন বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। আর তাঁর মায়ের নাম ছিলো জাহেদা খাতুন। তারা কিন্তু আমাদের জাতীয় কবির বাবা-মা, তাদের নামগুলো ঠিক ঠিক মনে রেখো কিন্তু। ছোটোবেলায় আমাদের এই বিদ্রোহী কবির কিন্তু বেশ কয়েকটা সুন্দর সুন্দর ডাকনামও ছিলো। তার দু’টো আপনাদের শোনাই, ‘দুখু মিয়া’ ছিলো একটি নাম আর আরেকটি নাম ছিলো, তারাখ্যাপা!
জাতীয় কবির জন্ম কবে হয়েছিলো সে তো সবাই জানেন; ২৫শে মে ১৮৯৯ (বাংলা ১১ জৈষ্ঠ্য ১৩০৬)। সেদিন কি বার ছিলো সেটা কি জানেন? মঙ্গলবার। তিনি জন্মেছিলেন বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। আর তাঁর মায়ের নাম ছিলো জাহেদা খাতুন। তারা কিন্তু আমাদের জাতীয় কবির বাবা-মা, তাদের নামগুলো ঠিক ঠিক মনে রেখো কিন্তু। ছোটোবেলায় আমাদের এই বিদ্রোহী কবির কিন্তু বেশ কয়েকটা সুন্দর সুন্দর ডাকনামও ছিলো। তার দু’টো আপনাদের শোনাই, ‘দুখু মিয়া’ ছিলো একটি নাম আর আরেকটি নাম ছিলো, তারাখ্যাপা!
কিন্তু বাবা মা কি আর কারো ডাকনাম সাধ করে ‘দুখু মিয়া’ রাখেন! আসলে তাঁর ছোটোবেলা কেটেছিলো অনেক দুঃখে। আর তাই তার ডাকনাম হয়ে গিয়েছিলো দুখু মিয়া। আর ওই নাম হবে না বা কেন! মাত্র ৯ বছর বয়সেই যে তার বাবা মারা গেলেন। কী আর করা, পরিবারের হাল ধরতে তিনি স্থানীয় মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ নিলেন। আবার তাদের এলাকায় এক মাজার ছিলো, হাজী পালোয়ানের মাজার। তিনি সেই মাজারে খাদেমের কাজও করতেন। এই দিয়ে যা আসতো তাই দিয়ে সংসার চালাতে লাগলেন।
দুখু মিয়ার আরো একটা ডাকনামের কথা বলেছিলাম, তারাখ্যাপা। তার ঐ নাম হয়েছিলো পাগলাটে স্বভাবের জন্য। কেমন পাগল ছিলেন তিনি? দেখেন না, অভাবের সংসার, তারপরও তার মাথায় চাপলো গান-বাজনার ভূত। সবকিছু ছেড়ে-ছুড়ে ভিড়ে গেলেন লেটো গানের দলে। এখান থেকেই কিন্তু তাঁর সাহিত্য জীবনের শুরু। এই লেটো গানের দলে ভিড়তে তাঁর সবচেয়ে বড়ো উৎসাহ ছিলেন তাঁরই চাচা কাজী বজলে করিম। গান গাইতেন কবি শেখ চকোর ও কবি বাসুদেবের লেটো দলে। নিজেই লিখেছিলেন অনেকগুলো নাটক। নাম শুনবেন কয়েকটা নাটকের? ‘চাষার সঙ’, ‘শকুনীবধ’, ‘রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ’, ‘দাতাকর্ণ’, ‘কবি কালিদাস’, ‘আকবর বাদশাহ’, ‘বিদ্যাভূতুম’, ‘রাজপুত্রের গান’, এমনি আরো কতো নাটক। আর তিনি যখন লেটো দল ছেড়ে দিলেন, তখন তাঁর শিষ্যরা কি করলো জানেন? তাঁকে নিয়ে একটা গানই বেঁধে ফেললো। তাহলেই বোঝেন, কেমন বিখ্যাত ছিলেন তিনি! গানটার কয়েকটা লাইন শুনবেন নাকি?
আমরা এই অধীন,
হয়েছি ওস্তাদহীন,
ভাবি তাই নিশিদিন,
বিষাদ মনে
নামেতে নজরুল ইসলাম
কি দিব গুণের প্রমাণ...
হয়েছি ওস্তাদহীন,
ভাবি তাই নিশিদিন,
বিষাদ মনে
নামেতে নজরুল ইসলাম
কি দিব গুণের প্রমাণ...
যাই হোক, নজরুল কিন্তু পড়াশোনা ছাড়লেন না। বছরখানেক লেটো দলের সঙ্গে গান গেয়ে বেড়িয়ে আবার ফিরে এলেন পড়াশোনার জগতে। সময় মতো মক্তব থেকে নিম্ন-মাধ্যমিক পরীক্ষায় তো পাশ করেছিলেনই, তারপর কিছুদিন ঐ মক্তবে পড়িয়েছিলেনও। এরপর গেলেন হাই স্কুলে পড়তে। সেখানে আবার প্রধান শিক্ষক কে ছিলেন জানেন? কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক। এই কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিককে কিন্তু নজরুল খুব পছন্দ করেছিলেন। কুমুদরঞ্জনও নজরুলকে খুব পছন্দ করতেন। পড়ে একবার নজরুলের কথা বলতে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘ছোট সুন্দর চনমনে ছেলেটি, আমি ক্লাশ পরিদর্শন করিতে গেলে সে আগেই প্রণাম করিত।’
কিন্তু নাম যে তাঁর দুখু মিয়া। কপালে কী তার এতো সুখ আছে! ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাঁকে স্কুল ছাড়তে হলো। টাকা নেই যে! আবার টাকা পয়সা রোজগারে নেমে গেলেন। প্রথমে কিছুদিন কবি বাসুদেবের দলে গান গেয়ে বেড়ালেন। তারপর কিছুদিন রেলওয়ের এক খ্রিস্টান গার্ডের খানসামা হিসেবে কাজ করলেন। এরপর আসানসোলের এক চা রুটির দোকানে নিলেন রুটি বানানোর কাজ। কিন্তু নজরুল তো ছিলেন জাত কবি। রুটি বানাতে বানাতে মুখে মুখেই ছড়া বেঁধে ফেলতেন। এই ধরো আটা বেলছেন নজরুল, গা বেয়ে টপাটপ করে ঘাম ঝরছে। অমনি ছড়া কেটে ফেললেন,
'মাখতে মাখতে গমের আটা
ঘামে ভিজলো আমার গা’টা।'
ঘামে ভিজলো আমার গা’টা।'
একদিন এক পুলিশ ইন্সপেক্টর ঘটনাটা দেখে ফেললেন। বুঝলেন, এ তো যে সে কোনো ছেলে নয়। একে তো পড়াশুনার সুযোগ দেয়া দরকার। নজরুলকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়ে দিলেন ময়মনসিংহের দরিরামপুর হাই স্কুলে (এখন এটাই কিন্তু জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়)। কিন্তু সেখানে বড় বেশি নিয়ম কানুনের বালাই। ভালো লাগলো না ‘তারাখ্যাপা’র। পালিয়ে গেলেন। ফিরে আসলেন রাণীগঞ্জে, সিয়ারসোল হাই স্কুলে। এটাই ছিলো তার জীবনের প্রথম স্কুল। কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের মাথরুন স্কুলে পড়ারও আগে তিনি এখানে পড়তেন। এবার এই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক তাঁকে অনেক অনুপ্রাণিত করলেন। তাদের মধ্যে বিপ্লবী নিবারণচন্দ্র ঘটকও ছিলেন। ছিলেন সতীশচন্দ্র কাঞ্জিলাল, হাফিজ নুরুন্নবী ও নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
তার প্রিটেস্ট পরীক্ষা এগিয়ে আসছে। সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এমন সময় বিশ্বে বেজে উঠলো দামামা, শুরু হয়ে গেলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। বৃটিশ ভারতের হয়ে যুদ্ধ করার জন্য সেনাবাহিনীর ডাক এলো। বৃটিশরা সেই যুদ্ধে ছিলো মিত্র বাহিনীতে, মানে ভালোদের পক্ষে। নজরুল কী আর চুপচাপ বসে থাকতে পারেন! নাম তার ‘তারাখ্যাপা’ না! পরীক্ষা টরীক্ষা ফেলে চলে গেলেন যুদ্ধ করতে। আর এই যুদ্ধে গিয়েই তাঁর মধ্যে এলো এক বিশাল পরিবর্তন।
সেনাবাহিনী থেকে দেশে ফেরার পর শুরু হলো নজরুলের সাহিত্য জীবন। এই যে তিনি কলম ধরলেন, অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত কেউ আর তার কলম থামাতে পারেনি। এমনকি তার ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতাটির জন্য তাকে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়েছিলো। বিচারে তার এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডও হয়। মানে ১ বছর জেলে তো থাকতে হবেই, সাথে সাথে জেলের নানা কাজও করে দিতে হবে। তবু তাঁর কলম থামলো না। অত্যাচারী বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে, ধর্মের নামে নানা অনিয়ম, অনাচার আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি অবিরাম লিখে গেছেন। যদি পারো তো একটু পড়ে দেখেন, দেখবেন আপনার গায়ের রক্ত যেনো টগবগ করে ফুটতে শুরু করে দিয়েছে।
‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার জন্য তো তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো ১৯২৮ সালে। ১৯৩০ সালে তাঁর একটা আস্ত বই বাজেয়াপ্ত করলো সরকার। বইয়ের নাম ‘প্রলয় শিখা’। সঙ্গে নজরুলকে ৬ মাসের জন্য জেলে থাকার আদেশও দিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অবশ্য বৃটিশ সরকার এই আদেশ কার্যকর করেনি।
বেশ তো লিখে যাচ্ছিলেন নজরুল। বিশ আর ত্রিশের দশকে তিনি একাই যতো বই লিখেছিলেন, অন্য লেখকেরা কেউ তার অর্ধেক বইও লিখতে পেরেছিলেন কি না সন্দেহ! কিন্তু ঐ যে, তার ডাকনাম যে দুখু মিয়া! তার প্রথম ছেলে একেবারে বাচ্চাটি থাকতেই মারা গিয়েছিলো। আর ‘প্রলয় শিখা’ বাজেয়াপ্তের বছরে মারা গেলো তাঁর আরেক ছেলে বুলবুল। তিনি তো একেবারে ভেঙ্গেই পড়লেন। বুলবুলকে নিয়ে যে তিনি কতো কবিতা আর গান লিখেছিলেন! কেনো, ওই গানটা শোনেন নি ‘ঘুমিয়ে গেছে ক্লান্ত হয়ে আমার গানের বুলবুলি।’
তার প্রিটেস্ট পরীক্ষা এগিয়ে আসছে। সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এমন সময় বিশ্বে বেজে উঠলো দামামা, শুরু হয়ে গেলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। বৃটিশ ভারতের হয়ে যুদ্ধ করার জন্য সেনাবাহিনীর ডাক এলো। বৃটিশরা সেই যুদ্ধে ছিলো মিত্র বাহিনীতে, মানে ভালোদের পক্ষে। নজরুল কী আর চুপচাপ বসে থাকতে পারেন! নাম তার ‘তারাখ্যাপা’ না! পরীক্ষা টরীক্ষা ফেলে চলে গেলেন যুদ্ধ করতে। আর এই যুদ্ধে গিয়েই তাঁর মধ্যে এলো এক বিশাল পরিবর্তন।
সেনাবাহিনী থেকে দেশে ফেরার পর শুরু হলো নজরুলের সাহিত্য জীবন। এই যে তিনি কলম ধরলেন, অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত কেউ আর তার কলম থামাতে পারেনি। এমনকি তার ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতাটির জন্য তাকে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়েছিলো। বিচারে তার এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডও হয়। মানে ১ বছর জেলে তো থাকতে হবেই, সাথে সাথে জেলের নানা কাজও করে দিতে হবে। তবু তাঁর কলম থামলো না। অত্যাচারী বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে, ধর্মের নামে নানা অনিয়ম, অনাচার আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি অবিরাম লিখে গেছেন। যদি পারো তো একটু পড়ে দেখেন, দেখবেন আপনার গায়ের রক্ত যেনো টগবগ করে ফুটতে শুরু করে দিয়েছে।
‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার জন্য তো তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো ১৯২৮ সালে। ১৯৩০ সালে তাঁর একটা আস্ত বই বাজেয়াপ্ত করলো সরকার। বইয়ের নাম ‘প্রলয় শিখা’। সঙ্গে নজরুলকে ৬ মাসের জন্য জেলে থাকার আদেশও দিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অবশ্য বৃটিশ সরকার এই আদেশ কার্যকর করেনি।
বেশ তো লিখে যাচ্ছিলেন নজরুল। বিশ আর ত্রিশের দশকে তিনি একাই যতো বই লিখেছিলেন, অন্য লেখকেরা কেউ তার অর্ধেক বইও লিখতে পেরেছিলেন কি না সন্দেহ! কিন্তু ঐ যে, তার ডাকনাম যে দুখু মিয়া! তার প্রথম ছেলে একেবারে বাচ্চাটি থাকতেই মারা গিয়েছিলো। আর ‘প্রলয় শিখা’ বাজেয়াপ্তের বছরে মারা গেলো তাঁর আরেক ছেলে বুলবুল। তিনি তো একেবারে ভেঙ্গেই পড়লেন। বুলবুলকে নিয়ে যে তিনি কতো কবিতা আর গান লিখেছিলেন! কেনো, ওই গানটা শোনেন নি ‘ঘুমিয়ে গেছে ক্লান্ত হয়ে আমার গানের বুলবুলি।’
নজরুলের পরের দুই ছেলে অবশ্য মারা যাননি। উল্টো দু’জনই বেশ নামও কুড়িয়েছিলেন; কাজী সব্যসাচী আবৃত্তিকার হিসেবে, কাজী অনিরুদ্ধ বাদক ও সুরকার হিসেবে। কিন্তু হলে কি হবে, ঐ যে তাঁর যে দুঃখের দিন শুরু হলো, সে তো আর শেষ হবার নয়। ’৩৯ সালে অসুস্থ হয়ে পড়লেন তাঁর স্ত্রী প্রমীলা নজরুল। আর ৪২ সালে কবি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তাও যে সে রোগ নয়, তাকে ধরলো প্যারালাইসিসে। তখনকার ভারতের ভালো ভালো হাসপাতালে তার চিকিৎসা করানো হলো; ‘লুম্বিনী পার্ক’ আর ‘রাঁচী মেন্টাল হসপিটাল’-এ। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। কিন্তু তাই বলে কি আর নজরুলের মতো অমন প্রতিভাবান কবিকে এভাবে নিস্তব্ধ হয়ে যেতে দেয়া যায়? তাই ’৫৩ সালে সবাই মিলে তাঁকে আরো ভালো চিকিৎসার জন্য পাঠালো ইংল্যান্ডে। সেখানকার চিকিৎসকেরাও ঠোঁট উল্টালো। তারাও কিছু করতে পারলো না। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হলো জার্মানিতে। সেখানেও কিছু হলো না। সবাই একবাক্যে বলে দিলো, কবির অসুখ চিকিৎসারও অতীত।
৬২ সালে মারা গেলেন তাঁর স্ত্রী। কবি তখন প্রায় বোধশক্তিহীন। লিখতে পারেন না, কথা বলতে পারেন না, কথা বললে কিছু বুঝতে পারেন না, ‘তারাখ্যাপা’র এমন জীবন কল্পনা করা যায়!
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠিত হলো। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলীও ঘোষিত হলো। জাতীয় সঙ্গীত হলো রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’, রণ সঙ্গীত হলো নজরুলের ‘চল চল চল’; আর জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হলো কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাম। আর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তো বাংলাদেশ পাকিস্তানিদের পরাজিত করে স্বাধীনই হয়ে গেলো। এখন আমাদের জাতীয় কবিকে তো আর অন্য দেশে রাখা যায় না। তিনি তখন থাকতেন তাঁর কলকাতার বাড়িতে। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর সরকার তাকে একদম রাষ্ট্রীয় সম্মান দিয়ে আমাদের বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করলো। তাঁর সকল খরচও সরকার নিজের কাঁধে তুলে নিলো। ১৯৭২ সালে, তাঁর জন্মদিনে (২৪ মে) তাকে নিয়ে আসা হলো বাংলাদেশে। তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি আমাদের বাংলাদেশেই ছিলেন। এই দিনগুলোতে অবশ্য তিনি ছিলেন একদমই অসহায়, কিছুই করতে পারতেন না। তাকে খাইয়ে পর্যন্ত দিতে হতো!
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠিত হলো। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলীও ঘোষিত হলো। জাতীয় সঙ্গীত হলো রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’, রণ সঙ্গীত হলো নজরুলের ‘চল চল চল’; আর জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হলো কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাম। আর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তো বাংলাদেশ পাকিস্তানিদের পরাজিত করে স্বাধীনই হয়ে গেলো। এখন আমাদের জাতীয় কবিকে তো আর অন্য দেশে রাখা যায় না। তিনি তখন থাকতেন তাঁর কলকাতার বাড়িতে। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর সরকার তাকে একদম রাষ্ট্রীয় সম্মান দিয়ে আমাদের বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করলো। তাঁর সকল খরচও সরকার নিজের কাঁধে তুলে নিলো। ১৯৭২ সালে, তাঁর জন্মদিনে (২৪ মে) তাকে নিয়ে আসা হলো বাংলাদেশে। তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি আমাদের বাংলাদেশেই ছিলেন। এই দিনগুলোতে অবশ্য তিনি ছিলেন একদমই অসহায়, কিছুই করতে পারতেন না। তাকে খাইয়ে পর্যন্ত দিতে হতো!
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, ওরফে দুখু মিয়া, ওরফে তারাখ্যাপা, মৃত্যুবরণ করেন। সারা জীবন দুঃখের সঙ্গে লড়াই করা, অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা, ধর্মের নামে অনাচার আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধাচারণ করা পাগলাটে স্বভাবের এই কবি। আমাদেরকে কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, কখনো যেনো তাকে আমরা কোনোরকম অপদস্থ না করি, তার যেন কোনো অসম্মানের কারণ না হই। তিনি তো আর শুধু আমাদের জাতীয় কবি নন, তিনি কিন্তু বাংলা সাহিত্যেরও একজন খুব বড়ো মাপের কবি।
লেখকঃ নাবীল আল জাহান।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
লেখকঃ নাবীল আল জাহান।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
উপকৃত হলাম।নজরুলের 'তারাক্ষ্যাপা' নামের কথ ইতিপূর্বে জানা ছিল না।
উত্তরমুছুনআপনাকে নতুন কিছু জানাতে পেরেছি জেনে ভাল লাগছে... :)
মুছুনভালো লাগলো পড়ে৷ কিন্তু উনি সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধে গিয়েছিলেন৷
উত্তরমুছুননা...
মুছুন