UFO রহস্যে ঘেরা বস্তু


লক্ষ লক্ষ বছর ধরে যে প্রশ্ন মানব মনে উকি দিয়ে গেছে বার বার তা হলঃ

এই মহা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে আমরা কি একা?
উত্তর মেলা ভারি কঠিন। শুধুমাত্র আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে তেই নক্ষত্র এর সংখ্যা প্রায় ৪০০ বিলিয়ন। আর গ্যালাক্সি তো মহাবিশ্বে বিলিয়ন এর পর বিলিয়ন। বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সি এর বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্রের যদি প্রতি বিলিয়ন এ একটিতেও গ্রহ থাকে তবুও গ্রহের সংখ্যা হিসাবের বাইরে। ১৯৬১ সালে ড্রেক তার সমীকরণে দেখিয়েছেন যে কমপক্ষে ১০০০০ গ্রহে প্রানের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব!!

অন্য গ্রহে প্রানের অস্তিত্ব আছে কি নেই এটার উত্তর তো একদিনেই জানা যায়না। মানুষ হাজার হাজার বছর চেষ্টা করেছে কিন্তু এখনো কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি। হয়তো আরও হাজার বছর লাগবে। অথবা এই রহস্য কোনদিনও ভেদ হবেনা। এটা নিয়ে জল্পনা কল্পনার তাই আর শেষ নেই। তবে এই রহস্য আরও ঘনীভূত করেছে যে বস্তু তার নাম U.F.O। পৃথিবীর আকাশে মাঝে মাঝেই দেখতে পাওয়া উড়ন্ত এই অদ্ভুত বস্তু এর ব্যাখাও মানুষের কাছে রয়ে গেছে অধরা।

কি এই UFO?
U.F.O এর ফুল ফর্ম হচ্ছে, 'Unidentified Flying Object'। অনেকে অবশ্য ফ্লাইং সসার ও বলে থাকেন। ফ্লাইং সসার বলার পিছে কারন হচ্ছে অধিকাংশ UFO যা দেখা গেছে বলে দাবী করা হয়, তা অনেকটা সসার বা পিরিচ আকৃতির। তবে UFO যে শুধুই সসার আকৃতির, তা কিন্তু নয়। অনেক UFO গোলক, অনেক গুলো সিগার আকৃতির, আবার কেউ কেউ বলে পিরামিড এর মতো UFO নাকি দেখেছেন তারা।

UFO এর অস্তিত্ব কি আসলেই আছে নাকি এটি মানব মস্তিস্কের উর্বর কল্পনা?
মানুষ কল্পনাপ্রবন, একথা মিথ্যা নয়। তবে ইউ এফ ও পুরোটাই মানুষের কল্পনা প্রসুত জিনিস, এটা বলাটা বোধ হয় অনেক কঠিন। UFO দর্শনের কমপক্ষে হাজারখানেক, বা তার ও বেশি দাবী ব্যাপারটাকে অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত করে গেছে দিনের পর দিন। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন সময়ে দেখা যাওয়া এই বস্তুরা তাই অবলোকনকারীদের মনে বদ্ধমুল ধারনা জন্মিয়েই ফেলেছে যে পৃথিবীর বাইরে অবশ্যই প্রানের অস্তিত্ব আছে এবং তারা বেশ বুদ্ধিমান।

UFO দর্শনের প্রথম ঘটনাঃ
প্রাচীন মিশরের অনেক লিপিতেই এই উড়ন্ত চাকতির উল্লেখ আছে। তাদের মধ্যে একটি বেশ উল্লেখযোগ্য, সেটি হচ্ছে মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের তৃতীয় ফারাও টুথমোজ এর একটি লিপি। ফারাও শীতের তৃতীয় মাস এবং দিবসের ষষ্ঠ ঘণ্টায় আকাশে কিছু অদ্ভুত দর্শনের উড়ন্ত অগ্নি গোলক দেখতে পান বলে তা লিপিবদ্ধ করে রাখার নির্দেশ দেন। এটি খ্রিস্টের জন্মের ও প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বের ইতিহাস।


এর পরেও বহুবার UFO এর দর্শনের কথা শোনা যায়। তবে বর্তমান পৃথিবীর ইতিহাস অনুসারে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত UFO দর্শন এর তারিখ ১৫৬১ সালের ১৪ই এপ্রিল। স্থানঃ নুরেমবারগ, জার্মানি।

অতীতে পরে যাই, তার আগে গত ২০-৩০ বছরের কিছু কাহিনী বলি,

হোয়াইটভিল, ভার্জিনিয়া এর ঘটনাঃ


১৯৮৭ সাল। হোয়াইটভিল, ভার্জিনিয়া এর একটি ছোট, শান্ত, ছিমছাম শহর। WYVE নামের একটি রেডিও স্টেশনে কাজ করেন ড্যানি গরডন নামের এক যুবক। প্রতি রাতের মতো রেডিও বার্তা চেক করতে যেয়ে তিনি বেশ কিছু অস্বাভাবিক রিপোর্ট পান। এই রিপোর্ট কারীদের মধ্যে তিন জন ছিলেন আবার শেরিফ। তারা সবাই হোয়াইটভিল এর আকাশে একগুচ্ছ অদ্ভুত আলো দেখতে পান বলে দাবী করেন। ড্যানি প্রথমে এটি হেসে উড়িয়ে দিলেও মুহূর্তের মধ্যেই হোয়াইটভিল থেকে আরও অনেক তাদের তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন যে এটি তাদের চোখে পড়েছে।

ড্যানি এটিকে ভার্জিনিয়া এয়ার বেস এর কোন এক্সপেরিমেন্ট ভাবলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়ে দেন, সে রাতে এমন কিছু পরীক্ষা করা হয়নি।

ব্যাপারটা ধীরে ধীরে সবার মনেই একটা খটকা তৈরি করে। এর প্রায় দু'সপ্তাহ পর, ড্যানি এবং তার বন্ধু রজার হল দুজনেই খুব কাছে থেকে UFO দেখতে পান বলে জানান।

"আমরা তখন কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ করেই গাড়ির বা দিকে আমার চোখ গেলো এবং আমি ভুমির সরলরেখা বরাবর একটি খুবই অস্বাভাবিক বস্তু লক্ষ্য করলাম। সাথে সাথেই গাড়িটা ডান পাশে রেখে আমরা লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে আসি। আমরা দেখতে পাই, যে আকাশ যানটি আমাদের দিকে আসছে, সেটি আকৃতিতে বিশাল এবং তার মাথার দিকে একটি ডোম আছে এবং কোন পাখা অনুপস্থিত। আকাশ যানটির ডান দিক থেকে বিভিন্ন ধরনের উজ্জ্বল আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছিল, সেটি যত দ্রুতই আমাদের দিকে ধাবিত হচ্ছিল, ঠিক ততো দ্রুতই আমাদের থেকে দূরে চলে গেলো এবং একটা সময় মিলিয়ে গেলো।"

এ ঘটনার তিন মাসের মধ্যেই প্রায় শতাধিক লোক UFO গুলোকে বার বার দেখতে পান। কয়েকটি ছবি ও তোলা হয় যার মধ্যে এগুলো উল্লেখযোগ্য।

হোয়াইটভিল এর এই অদ্ভুত ঘটনার কোন ব্যাখাই পায়নি হোয়াইটভিলবাসী।
মেক্সিকো এর ঘটনাঃ
১৯৯১ সালের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের কথা বোধহয় সবারই মনে আছে। সমস্ত পৃথিবী যেন সূর্যগ্রহণ অবলোকন উৎসবে মেতে উঠেছিলো। মেক্সিকো ও ব্যাতিক্রম ছিলনা। কিন্তু কেউ তখন ও ভাবেনি তাদের পুরো দেশকেই এই দিনটা বদলে দিবে UFO এর হিস্টিরিয়াতে।

সেই দুপুরে, Guillermo Arragin, নামের একজন টেলিভিশন এক্সিকিউটিভ ছাদের উপরে বসে সূর্যগ্রহণের ভিডিও ধারন করছিলেন। জিনিসটা ঠিক তখনই তার দৃষ্টিগোচর হয়।


Jaime Maussan তখন কাজ করছিলেন Arragin, এর সাথে। তারা পরবর্তীতে সূর্যগ্রহণের ভিডিও টেপটি মেক্সিকান টিভি চ্যানেলে সম্প্রচার করেন, সূর্যগ্রহণের ৮ দিন পরে। এই টেপ টির সাথে তারা UFO এর ফুটেজটিও সম্প্রচার করে। মুহূর্তের মধ্যে তারা ৪০০০০ ফোন পান প্রায় একই সাথে। এটা এতোটাই দ্রুত ছিল যে সমস্ত নেটওয়ার্ক বিকল হয়ে যায়। বহু প্রত্যক্ষদর্শী তাদের জানায়, যে তারা ঠিক একই বস্তু দেখেছেন মেক্সিকো এর আকাশে। পরবর্তীতে তারা মেক্সিকান দের ধারণকৃত কমপক্ষে ১৫ টি ভিডিও পান যার সাথে Arragin, এর ভিডিও এর কোন পার্থক্য নেই।

২ মাস পরে ঠিক একই রকম ভাবে আরও অনেক গুলো UFO দেখা যায় মেক্সিকোর আকাশে।

ফিনিক্স রহস্যঃ
মার্চ ১৩, ১৯৯৭ এর রাত। অ্যারিজোনা এর অধিবাসী Michael Krzyston এর অপটু লেন্স এ ধরা পড়লো "V" আকৃতির এক অদ্ভুত আলোক গুচ্ছ।


শুধু Krzyston-ই নন, অ্যারিজোনার কমপক্ষে হাজার খানেক মানুষ সে রাতে একই আলো দেখেছেন এবং এগুলো যে UFO এ সম্পর্কে তারা প্রায় নিঃসন্দেহ।


রসওয়েল এর অমীমাংসিত রহস্যঃ
এটি UFO এর সাথে সম্পর্কযুক্ত খুব বেশি আলোচিত একটা ঘটনা।

ঘটনার সুত্রপাত ১৯৪৭ সালে একটি বজ্রপাত সহ ঝড়ের মাধ্যমে। 'ম্যাক' নামের এক ভদ্রলোক তখন তার ঘরে বসেই ঝড় দেখছিলেন। হঠাৎ তার বাড়ির সংলগ্ন বড় ক্ষেত্রে তিনি বেশ বড়সড় এবং অস্বাভাবিক এক বজ্রপাতের শব্দ পান।


পরেরদিন তিনি যখন তার ছেলেকে নিয়ে তার ক্ষেত এর ক্ষয় ক্ষতি দেখতে গেলেন তখন অবাক হয়ে দেখলেন, বজ্রপাতের কোন চিহ্নই নেই। বরং সারা মাঠ জুড়ে পড়ে রয়েছে কোন কিছুর ধ্বংসাবশেষ। প্রায় তিন মাইলের ও বেশি লম্বা এবং দুই তিনশত ফুট প্রস্থ জুড়ে ধ্বংসাবশেষ গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ম্যাক এর ভাষ্য অনুসারে, উদ্ধারকৃত টুকরো গুলিকে এককথায় ধাতু বলা যায়না। টুকরোগুলি ছিল বেশ মজবুত এবং প্লাস্টিক এর মতো হালকা অথচ প্লাস্টিক নয়। দুই তিন ফুট লম্বা টুকরো গুলিও খবরের কাগজের মতোই হালকা ছিল, বলেন ম্যাক। তবে এই টুকরো গুলোকে তিনি কাটতে পারেননি এবং আগুনেও পোড়াতে পারেন নি বলে জানান তিনি।


পরেরদিন রসওয়েল আর্মি এয়ার বেস এ ঘটনাটি জানানো হয়। সেদিন বিকেলেই আর্মি ইন্টেলিজেন্স এর কিছু কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মেজর জেসি মারসেল যার উপরে এই ঘটনাটি তদন্তের মুল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। তিনিও টুকরো গুলি দেখে হতভম্ব হয়ে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বলে গেছেন যে এটি তার জীবনে দেখা সবচেয়ে বেশি অস্বাভাবিক ঘটনা। তিনিও টুকরো গুলিকে আগুনে পোড়াতে পারেন নি। তিনি দৃঢ় ভাবেই দাবী করেন, এটি কোন ভাবেই এয়ার বেলুন অথবা পৃথিবীতে তৈরি কোন আকাশ যান এর ধ্বংসাবশেষ নয়। তার কাছে সবচেয়ে আশ্চর্য লেগেছে যে টুকরোটি সেটি একটি ছোট এল বিম এর টুকরো যেটি এর উপরে কিছু অদ্ভুত চিহ্ন এবং অক্ষর খোদাই করা ছিল। এটা থেকে তার মনে বিশ্বাস আরও প্রবল হয় যে এটি পৃথিবীর বাইরের কোন একটা স্থানে তৈরি কোন আকাশযান।


খবরটা নিউজপেপারে চলে আসে মুহূর্তের মাঝেই। ঠিক ওইদিন সক্করো, মেক্সিকো থেকেও UFO দর্শনের কিছু রিপোর্ট পাওয়া যায়। এই ঘটনাগুলি রসওয়েল এ বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।


তবে রসওয়েল এয়ার বেস কোন এক অজ্ঞাত কারনে খবরটা ধামাচাপা দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করে। গ্লেন ডেনিস নামের ২২ বছরের এক ছেলেও ম্যাক এর মাঠটি পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। পরবর্তীতে তাকেও মিলিটারি ক্যাম্প এ নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে বলা হয়, এটি নিয়ে আর কোন রকম উচ্চ্যবাচ্চ্য না করার জন্য। এছাড়া ঠিক ওই সময়ে একজন নার্স দাবী করেন, তাকে এয়ার বেস ক্যাম্প এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিনটি বডি অটোপসি করার জন্য। তিনি বলেন, তিনটি প্রাণীর কোনটিই পৃথিবীর নয় এ ব্যাপারে তিনি শতভাগ নিশ্চিত। তিনি প্রানীগুলির বর্ণনা দেন এভাবে, "তারা আমাকে ডেকেছিল 'Partial Sutopsy' এর জন্য। তাদের ওখানে একটা বড় ক্রাশ ব্যাগ ছিল যেটির মধ্যে দোমড়ানো মোচড়ানো খুব ছোট দুটি বডি ছিল যাদের মাথা ছিল দেহের তুলনায় অনেক বড়। তাদের কোন কান ছিল না বরং তাদের কানের দুটি ক্যানাল ছিল। তাদের বিবর ছিল দুটি এবং তাতে কোন দাত ছিলনা।"


পরবর্তীতে গ্লেন অবশ্য নার্সটিকে অনেক খুজতে চেষ্টা করেছিল, যদিও তাকে আর কখনোই খুজে পাওয়া যায়নি।

এটি প্রমানিত হলে এয়ার বেস মিলিটারি তাদের বিবৃতি দান করে বলেন, তাদের প্রাপ্ত প্রাণী গুলো আসলে একটি এয়ার বেলুনের ডামি ছিল। যদিও তাতে সন্দেহ দূরীভূত না হয়ে উল্টো সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।

টেক্সাস UFO:
ডিসেম্বর এর ২৯ তারিখ, ১৯৮০ সাল। ডিনার শেষে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলেন বিটি ক্যাশ, ভিকি ল্যান্ড্রাম ও তাদের ৭ বছরের নাতি কলবি। টেক্সাসে ডেয়টন এর কাছাকাছি স্টেট রোড থেকে তারা যখন যাচ্ছিলেন তখন রাত প্রায় ৯টা। ঠিক এসময় আকাশে খুব উজ্জ্বল এক আলো দেখতে পান তিনজনই। তাদের গাড়ি অগ্রসর হচ্ছিল এবং এ অবস্থাতেই গাছের ফাক থেকে তারা বস্তুটিকে দেখতে পাচ্ছিলেন। বিটি ক্যাশ তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন এভাবেই, "আমরা তখনো জানতাম না এটা কি, শুধু এটাই বুঝেছিলাম যে এটি প্লেন নয়। আকাশ তখন অত্যাধিক উজ্জ্বল হয়ে পড়েছিলো। একটা সময় ভিকি এর চিৎকারে আমি গাড়ি থামাই এবং বস্তুটিকে দেখার জন্য দরজা খুলে বের হয়ে আসি। বের হওয়ার সাথে সাথেই আমি প্রচণ্ড তাপ অনুভব করি এবং যান টিকে ভালভাবে দেখতে পাই। এটি ছিল অনেকটা ডায়মন্ড এর আকৃতির, যেটার নিচ থেকে প্রচণ্ড ভাবে তাপ নির্গত হচ্ছিল। মুহূর্তের মাঝে আমি পালাতে চাইলাম ওই জায়গা ছেড়ে। গাড়ির হ্যান্ডেল এ যখন হাত দিলাম তখন সেটি পুরোপুরি তপ্ত একটা ধাতু। আমার শুধু মনে হচ্ছিল, আমরা এখান থেকে জীবিত ফেরত যেতে পারবো তো?"


ভিকি বলেন, "এর কিছুক্ষনের মধ্যেই বহু হেলিকপ্টার জায়গাটিকে কভার করে ফেলে।"

পরেরদিন তিনজনই মারাত্মক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তাররা জানান, তারা রেডিয়েশন পয়জনিং এ আক্রান্ত হয়েছেন।


পরবর্তীতে ক্যাশ এবং ভিকি সরকারের কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়ার আশায় অনেক চেষ্টা করেও সফল হতে পারেন নি। এখানেও টেক্সাস সরকার ধামাচাপা দিয়ে ফেলে ব্যাপারটিকে। পুড়ে যাওয়া রাস্তার ওই অংশটুকু অতি দ্রুত খুড়ে নতুন করে রাস্তা করে দেওয়া হয় যাতে ওটা লোকচক্ষুর দৃষ্টি গোচর না হয়।


ভিকি এবং ক্যাশ আজীবন প্রশ্ন করে গেছেন এই রহস্যজনক ঘটনার, কিন্তু তাদের এই রহস্যের কোন সমাধান দিতে সরকার পক্ষের কেউই এগিয়ে আসেনি।

পানিতেও UFO:
UFO যে শুধু পৃথিবীর আকাশে কিংবা মাটিতে দেখা গেছে, তা কিন্তু নয় বরং পানিতেও ইউ এফ ও দর্শনের নজির মেলে। বিমিনির উত্তরে আইজাক লাইট আর মিয়ামি এর মধ্যেখানে গালফ স্ট্রিমের জলের তলায় বার বার দেখা গেছে সিগার আকৃতি UFO-এর। ডেলমনিকো নামের এক ক্যাপ্টেন পানির নিচে এই সাদাটে ধূসর বস্তুটি দেখতে পান। তার দাবী, এটি কোনভাবে পানিতে আলোড়ন তৈরি না করে চলাফেরা করছিল।

পুয়ের্টোরিকো এর কাছের সাগরেও UFO এর দেখা মেলে একবার। মার্কিন নৌবাহিনীর কোন একটা মহড়া চলাকালীন সময়ে তাতে অংশগ্রহণকারী সকল জাহাজ এবং সাবমেরিন এই জলের নিচে UFO টা দেখতে পান। সাবমেরিন একে ধাওয়া করলেও বস্তুটি নিমিষেই সাতাশ হাজার ফুট গভীর পর্যন্ত নেমে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিলো। এর গতিও ছিল অস্বাভাবিক এবং আলোড়ন বিহীন।

UFO এর কিছু ছবিঃ
যদিও ছবি ব্লগ আলাদা করেই দিয়ে দিবো UFO এর জন্য, তবু এখানে বেশ কিছু ছবি দিলাম,

১৯৫২, নিউ জার্সি।
১৯৮৭, অরোরা, টেক্সাস।

UFO দেখা যাওয়ার কিছু স্থান ও বছরঃ
1883-08-12 - জাকাটেকাস, মেক্সিকো ।
1886-10-24- মারাকাইবো, ভেনেজুয়েলা।
1897-04-17- অরোরা, টেক্সাস।
1908-06-30- পডকামেনায়া টুনগুস্কা নদী, রাশিয়া।
1917-08-13, 09-13, 10-13 - ফাতিমা, পর্তুগাল।
1926- হিমালয়, নেপাল।
1942- হোপেহ, চীন।
1942-02-24- লস অ্যাঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়া।
1946- স্ক্যান্ডিনেভিয়া।
1946-05-18 - এঞ্জেলহোম মিউনিসিপালিটি, সুইডেন।
1947-06-21 - ওয়াশিংটন, ইউ এস।
1947-06-24- ওয়াশিংটন, ইউ এস।
1947-07-08 - রসওয়েল, ইউ এস।
1947-10- ফিনিক্স, অ্যারিজোনা।
1948-01-07- কেন্টাকি, ইউ এস।
1948-07-24- আলাবামা, ইউ এস।
1948-10-01- নর্থ ডাকোটা, ইউ এস।
1950-03-22- নিউ মেক্সিকো, ইউ এস।
1950-05-11- ম্যাকমিনভেল।
1951-08-25- লুব্বক, টেক্সাস।
1952-07-13- ওয়াশিংটন, ইউ এস।
1952-07-24- নেভাডা।
1952-09-12- ফ্লাটউডস, পশ্চিম ভার্জিনিয়া।
1953-05-21- প্রেসকট, ভার্জিনিয়া।
1953-08-12- বিসমার্ক, ডাকোটা।
1953-11-23- লেক সুপিরিয়র, কানাডা।
1955-08-21- কেন্টাকি।
1957-05-20- পূর্ব আংগ্লিয়া, যুক্তরাজ্য।
1957-11-02- লেভেলান্ড, টেক্সাস।
1959- সোভিয়েত ইউনিয়ন।
1959-06-26-27- পপুয়া নিউগিনি।
1961-09-19- নিউ হ্যাম্পশায়ার।
1964-04-24- সরক্কো, নিউ মেক্সিকো।
1964-09-04- সিস্কো গ্রুভ, ক্যালিফোর্নিয়া।
1965-12-01- সান মিগুয়েল, আর্জেন্টিনা।
1965-12-09- পেন্সিলভেনিয়া।
1966-01-11- ওয়ানাক, নিউ জার্সি।
1966-04-06- ক্লেয়টন, অস্ট্রেলিয়া।
1966-04-17- ওহাইও, ইউ এস।
1966-08-25- মিনোট, ডাকোটা।
1966-10-11- এলিজাবেথ, নিউ জার্সি।
1967-03-05- মিনোট, ডাকোটা।
1967-03-20- মাল্ম স্ট্রম, ইউ এস।
1967-05-20- ফ্যালকন লেক, কানাডা।
1967-08-29- কুসাক, ফ্রান্স।
1967-09-01- সেন্ট লুইস ভ্যালি, কলোরাডো।
1967-10-04- শ্যাগ হারবার, কানাডা।
1967-12-03- অ্যাশল্যান্ড,নেবরাস্কা।
1969-01-01- প্রিন্স জর্জ, কলোম্বিয়া।
1971-09-04- অ্যারেনাল, কোস্টারিকা।
1973-10-11- মিসিসিপি, ইউ এস।
1974-01-23- নর্থ ওয়েলস যুক্তরাজ্য।
1975-01-12- নর্থ বারজেন, নিউ জার্সি।
1976-06-22- ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ, স্পেন।
1976-09-19- তেহরান, ইরান।
1977-01-06- মন্ট্রিল, কুইবেক।
1978-05-10- এমিলসিন, পোল্যান্ড।
1978-10-21- ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া।
1978-12-21- নিউজিল্যান্ড।
1979-08-27- মিনেসোটা।
1979-11-09- লিভিংস্টোন, স্কটল্যান্ড।
1979-11-11- ভ্যালেন্সিয়া, স্পেন।
1980-12-28- সাফফোল্ক,ইংল্যান্ড।
1980-12-29- নিউ ক্যানি, টেক্সাস।
1986-11-17- আলাস্কা।
1990-03-30- ওয়ালোনিয়া, বেলজিয়াম।
1990-11-07- মন্ট্রিল, কুইবেক।
1991-04-21- লন্ডন, ইংল্যান্ড।
1991-09-15- স্পেস শাটল ডিসকভারি, মহাকাশ।
1993-08-08- ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া।
1996-01-20- মিনাস জেরাইস, ব্রাজিল।
1996-12-02- স্পেস শাটল ডিসকভারি, মহাকাশ।
1997-03-13- ফিনিক্স, অ্যারিজোনা।
1997-08-06- মেক্সিকো সিটি।
2001-03-19- স্পেস শাটল ডিসকভারি , অরবিট।
2001-07-15- নিউ জার্সি।
2005-04-27- ওয়াশিংটন , ইউ এস।
2007-02-02- লন্ডন, ইংল্যান্ড।
2007-02-16- কালিনিনগ্রাদ, রাশিয়া।
2007-03-03- নিউ দিল্লী, ইন্ডিয়া।
2007-03-10- ওহাইও
2007-05-02- সাট্টন, ইংল্যান্ড।
2007-05-12- আয়ারল্যান্ড।
2007-05-27- কানাডা
2007-05-28- বাঙ্গালোর, ইন্ডিয়া।
2007-09-25- কোডিয়াক, আলাস্কা।
2007-10-30- কলকাতা, ইন্ডিয়া।
2007-11-08- ল্যারনাকা, সাইপ্রাস।
2008-01-01- সান ডিয়েগো
2008-01-08 to 2008-02-09- স্টিফেনভিল, টেক্সাস, ডাবলিন।
2008-05 to 2008-09- ইস্তানবুল, তুরস্ক।
2008-06-20- যুক্তরাজ্য।
2008-06-21- মস্কো, রাশিয়া।
2008-12-10- জাগরিব, ক্রোয়েশিয়া।
2009-05-31- কলকাতা, ইন্ডিয়া।
2009- নেভাডা, মেক্সিকো সিটি।
2009-08-16- উরাল, রাশিয়া।
2009-10-20- ফ্লোরিডা, ইউ এস।
2009-12-09- ফিনমার্ক, নরওয়ে এবং সুইডেন।
2010-05 to 2010-12- ইস্তানবুল, তুরস্ক।
2010-07-09- হেজিয়াং, চীন।
2010-10-13- চেলসি, নিউ ইয়র্ক।
2011-01-26- কলকাতা, পশ্চিম বাংলা।
2011-02-20- ভ্যাঙ্কুভার।
2011-03-28- কলোরাডো।
2011-05-16- লি'স সামিট, মিসিসিপি।

সর্বশেষঃ 26-06-2011 অর্থাৎ এই মাসের ২৬ তারিখ, সিয়াটল, ওয়াশিংটন।

শেষকথাঃ
অনেকে বলেন UFO সত্যিই আনাগোনা করে এই গ্রহটিতে। অনেকে বলেন স্রেফ বুজরুকি। আমি বলি রহস্যই ভালো। পৃথিবীটা অনেক অদ্ভুত। রহস্য তাকে প্রতিনিয়ত ঘিরে রাখে বলেই তার সৌন্দর্য এতো বেশি। UFO কে নিয়ে তাই কিছু রহস্য চিরকাল বেঁচে থাকুক মানুষের মনে। এতো বড় বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড, তার রহস্যটাও বড় না হলে ঠিক মানায় না।

লেখকঃ ইনকগনিটো।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info