ভয়ংকর ইন্দোনেশিয়ার লোককথা

বাংলা লোককথায় কত ভূত পেত্নী আর রাক্ষস খোক্কসের গল্প শুনেছেন ছোট বেলায়। এগুলা যেন অলংকৃত করে রেখেছে আমাদের লোকশিল্পকে। ঠিক এমনই ভাবে বিভিন্ন দেশের কৃষ্টিকালচারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গল্পকথা। এর আগে আপনাদের জানিয়েছিলাম জাপানের লোককথা, আজ আপনাদের শুনাবো ইন্দোনেশিয়ার প্রচলিত কয়েকটি গল্পকথা। যা শুনে আপনার শরীরের সব ক'টি লোপ দাঁড়িয়ে যেতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেই জাপানে প্রচলিত গল্পকথা গুলি,


Pocong:
মারা যাবার পরে, কবর দেবার সময় মৃত দেহকে সাদা কাপর দিয়ে মুড়িয়ে তার মাথার উপর একটা গিট আর পায়ের কাছে একটা গিট দেওয়া হয়। আর কবর দেবার পরে তারা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কবর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে পার্থিব দুনিয়ায়। যেহেতু তাদের হাত পা বাঁধা থাকে তাই তারা লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। এদের চেহারা অনেক সময় সাদা, গলিত বা অনেক সময় মাংস বাদে শুধু কঙ্কালও থাকতে পারে। এদের এরকম ফিরে আসার কারন হচ্ছে, তাদের অসম্পূর্ন কাজ। আর সেই কাজের জন্যই এরা বাইরে বেরিয়ে আসে। যেহেতু এদের হাত বাঁধা থাকে তাই এরা অনেক সময় আপনার দরজায় ধাক্কা দিয়ে থাকে তাদের মাথা দিয়ে।


Thuyul:
এরা হল গর্ভাবস্থায় মৃত বাচ্চা বা মৃত বাচ্চা। এদের সাধারনত কেউ পুষে রাখে এবং এরা যে কারো ঘর থেকে টাকা পয়সা চুরি করতে পারে। এদের দেখতে বাচ্চাদের মত, মাথায় কোন চুল থাকে না, সাধা চামরা এবং অনেক সময় কৃষ্ণ বর্নের চোখ থাকে। এরা শুধু মাত্র বাচ্চাদের পরিহিত ছোট নেংটি পরিহিত অবস্থাতেই থাকে। অনেকেই মনে করে Thuyul এর হাত থেকে তাদের টাকা পয়সা বাঁচাবার উপায় আছে। আর তা হল ঘরের ভিতরে ফলের বীচি রেখে দেওয়া। Thuyul এই বীচি দেখলেই তা গুনতে বসে যাবে। আর তা বারবার তারা গুনতে থাকবে যতক্ষন পর্যন্ত তারা টাকা পয়সা চুরি করার কথা ভূলে না যাবে। আর এদের ধাওয়া করে আপনি ধরতে পারবেন শুধু মাত্র এদের মত নেংটি পরিহিত অবস্থাতেই। লোকমতে অনেকেই Thuyul কে দেখেছেন এবং একে ধরার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তা করতে পারেন নাই বা পারলেও আজ অবধি তা প্রকাশ করেন নাই।


Gendruwo/Gandaruwo:
Gendruwo মূলত খারাপ ভূত। আর লিঙ্গ বিশেষে এরা সকলেই পুরুষ ভূত। এদের সম্পূর্ন শরীর নোংরা লম্বা লোমে ঢাকা থাকে, মাথায় থাকে লম্বা লম্বা চুল, আর লোমের রঙ হয় কালচে লাল। এদের হাতে ও পায়ে আছে বিশাল বড় বড় নোখ। ভয়ংকর প্রাণী বলতে যা বুঝায় তার সব গুনাগুনই আছে এর মাঝে। যদি মধ্য রাতে আপনি পচা মাংসের পোড়া গন্ধ পান আপনার জানালার বাইরে তার মানে সেখানে আছে Gendruwo. এরা নিজেদের রূপ পরিবর্তন করতে সক্ষম। অনেক সময় এরা অনেক স্ত্রী লোকের স্বামীর রূপ ধরে তাদের সাথে দৈহিক মিলনে মিলিত হয়।


Kuntilanak:
লোক বিশ্বাস মতে এরা হল সেই সকল নারী যারা সন্তান জন্ম দেবার পূর্বেই মারা যায়। এরা সাদা জামা পরে থাকে, আর মাথায় থাকে কাল লম্বা চুল, এদের চেয়ারা থাকে ভয়ঙ্কর আর তার থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর এদের অট্ট হাসি। এদের বসবাস উচু গাছের মাথায়। আর ঐ গাছের তলা দিয়ে যারা যায়, সুযোগ বুঝে তাদের ধরে। তারা পথিককে আটকে প্রচন্ড জোড়ে হাসি দিয়ে ভয় দেখায় এবং একটু পরেই উধাও হয়ে যায়। এমনকি তারা নিজেদের সুন্দরী নারীতে পরিনত করে গাড়ি চালকদের অন্ধকার পথে দাড় করিয়ে তাদের কাছে সাহায্য চায়, আর যে সাহায্য করে তার পরিনতি মৃত্যু।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info