চায়নার সব থেকে ভয়ংকর পাহাড়ি রাস্তা


আজ আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব চায়নার সব থেকে ভংকর রাস্তার সাথে। কিন্তু পরিচয় করিয়ে দেবার আগে আপনাদের ঘুরিয়ে নিয়ে আসব এই পাহাড়ের অতীত ইতিহাস থেকে। তাহলে আর দেরি না করে চলেন ঘুরে আসি আজ চায়না থেকে।


hybridknowledge.info hybridknowledge.info

"মাউন্ট হুয়া" অথবা "হুয়া সান" নামে এই পাহাড়ের অবস্থান "হুয়াইন" শহর থেকে ১২০ কিমি পূর্বে। এটি চায়নার পাঁচটি বৃহত্তম পাহাড়ের মধ্যে একটি। এই পাহাড়টি ঐ অঞ্চলে ধর্মিয় ভাবে অনেকটা গুরুত্ব পূর্ন। এই পাহাড়ের আবার একটা না মোট পাঁচটি চূড়া আছে যার মধ্যে দক্ষিনের চূড়া সব থেকে উচু। এর উচ্চতা ২,১৫৪.৯ মিটার বা ৭,০৭০ ফুট।


এই পাহাড়ের পশ্চিম দিকের চূড়ায় খ্রীষ্ট ধর্মের অবির্ভাব হওয়ারও প্রায় ২শত বছর আগে প্রথম একটি মন্দির স্থাপন করা হয়। এই মন্দির তাওবাদ (Daoist) ধর্ম অনুসারিরা স্থাপন করে। আর তাওবাদি ধর্ম অনুসারিরা বিশ্বাস করেন যে এই পাহাড়ের চূড়ায় ভূ-গর্ভস্থ দেবতারা বসবাস করে। আর তৎকালীন ধর্মজাযকরা এই মন্দির গুলি ব্যাবহার করত মৃত ব্যাক্তির আত্মার সাথে কথা বলার বলার জন্য। কেননা তারা বিশ্বাস করত মানুষ মারা গেলে তার আত্মা ভূ-গর্ভে চলে যায়।


তাওবাদি ধর্ম খুব বেশী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে স্থানীয়দের মাঝে আর সাথে এই জায়গা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অনেকটা তীর্থ যাত্রার জন্য বা মৃত আত্মীয়দের প্রতি সন্মান জানতে বেশ লোক এখানে আসা শুরু করে। তবে খুব খাড়া রাস্তা আর বেশ দূর্গম এলাকা হওয়ার জন্য এখানে যে খুব বেশী লোক আসে তা কিন্তু না কিন্তু তাওবাদ ধর্মের অনুসারিরা এখানে কিন্তু আসে। ঐ যে বললাম তীর্থ যাত্রার জন্য তাদের এখানে আসতে হয়।


এই হুসান পাহাড় আরো একটা জিনিষের জন্যও বেশ জনপ্রিয় আর তা হল অমরত্ব অর্জন কারিদের জন্য। কি ভাবছেন আমার মাথা কি খারাপ হয়ে গেছে?! মানুষ কি কখনও অমর হয়!! না সত্যি মানুষ কখনই অমর হয় না, কিন্তু এই জায়গার অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, এই পাহাড়ের চূড়ায় এমন কিছু গাছ জন্মে যা মানুষকে অমর করতে সক্ষম। যা হোক বর্তমান সময়ে এখন পর্যন্ত কেউ এই গাছের সন্ধান পেয়েছে বলে জানা নেই।


১২৩০ সালে এই সব মন্দিরের নিয়ন্ত্রন চলে যায় Daoist Quanzhen School এর কাছে, আর ১৯৯৮ সালে হুসান ম্যানেজমেন্ট কমিটি এই নিয়ন্ত্রন তুলে দেন China Daoist Association এর হাতে। নিয়ন্ত্রনের এই পালা বদল করা হয় যাতে তাওবাদি ধর্মালম্বিদের মধ্যে যারা পাদ্রি তারা যেন আর সুন্দর ভাবে নিজেদের জীবন যাপন করতে পারে এছাড়া এখানকার পরিবেশ নষ্টো হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যায়।


এই পাহাড়ে ওঠার রাস্তা যে কতটা ভংকর তা হয়ত নিজে যেয়ে অনুভব না করলে তা প্রকৃত অর্থে কোন দিন বোঝা যাবে না। আপাতত আপনাদের জন্য এই পাহড়ি রাস্তার কিছু ছবি দেই, যাতে কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারেন। আর যদি শুধু ছবিতে মনের ক্ষুদা না মেটে তাহলে আর কি পাসপোর্ট, ভিসা আর প্লেনের টিকিট কেটে চলে যান চায়না আর যেয়ে নিজ চোখে দেখে আসুন এই ভংকর পাহাড়ি রাস্তা।


লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।