বিশ্বের সবথেকে দ্রুতগতীর ১০ টি বাইক

বাইক নামটির সাথে কেমন জানি জড়িয়ে আছে এক উন্মাদনার নাম। বাইকে বসলেই শিকল ভেংগে এগিয়ে যাওয়ার এক প্রবল উন্মাদনা ভর করে। আর যদি স্বাদের এই বাইক হয় পৃথিবীর দ্রুতগামী বাইক গুলির মধ্যে একটি। তাহলে তো আর কোন কথাই নাই। আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব বিশ্বের সব থেকে দ্রুতগামি ১০ টি বাইকের সাথে। যারা তাদের দ্রুতগতীর জন্য রাজত্ব করছে এই ধরনীর বুকে।

সাধারনত উড়জাহাজ বা প্লেন ৯৫০ কিঃমিঃ প্রতি ঘন্টার গতীতে চলে, যা কিনা পৃথিবীর সব থেকে দ্রুতগামী বাইকের গতীর মাত্র ৩০%। আর এই বাইকের নাম "Tomahawk"। প্লেনের সাথে এর পার্থক্য শুধু একটাই, আর তা হল প্লেন আকাশে উড়ে আর বাইক উড়ে না। কিছু লোকের আদম্য প্রচেষ্টার কারনে মাত্র দু চাকার এই বাহন আজ এত দ্রুতগতী সম্পন্ন হয়েছে। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করি পৃথিবীর সব থেকে দ্রুতগতীর দশটি বাইকের গল্প।

০১) Dodge Tomahawk:


চার চাক্কার এই বাইক হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে দ্রুতগামী বাইক। এটি ৯৭ মাইল প্রতি ঘন্টার গতীতে উঠতে সময় নেয় মাত্র ২.৫ সেকেন্ড। আর যদি আপনি নিউটনের ৩য় সূত্রের কথা ভূলে যান তাহলে প্রতি ঘন্টায় এই বাইকের গতি ৬৪০ কিমি করে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। যদিও এটা শুধু মাত্র কাগজ কলমে সম্ভব কেননা আমাদের পৃথিবীর মধ্যাকার্ষন শক্তি ও বাতাসের বাঁধার কারনে এই গতীর বাস্তব রূপ দেখা অসম্ভব। ৮.৩ লিটারের ১০ সিলিন্ডার বিশিষ্ট ৫০০ অর্শ শক্তি সম্পন্ন ইঞ্জিন রয়েছে এই বাইকে।

০২) 2010 Suzuki Hayabusa GSX1300R:


২০১১ সালের তৈরি করা ২য় সর্বোচ্চ দ্রুতগামি বাইক এটি। ২০১১ সালের একটি রেসের সময় Loring Timing Association American Bill Warner (Bill Warner) এর নেওয়া রেকর্ড অনুযায়ী হায়াবুসার আপডেটেট মডেল ৫০২ কিমি প্রতি ঘন্টায় গতী তুলতে সক্ষম। যা বাইকের দুনিয়ায় গতীর আর এক নতুন রেকর্ড।


এই বাইকে আছে ১৯৭ অর্শ শক্তি বিশিষ্ট চার সিলিন্ডার বিশিষ্ট ইঞ্জিন। যা এই বাইককে দাড় করিয়েছে অন্যান্ন গ্রুতগামী বাইকের কাতারের শীর্ষ স্থানে।

০৩) MTT turbine superbike Y2K:


এই ধরনীর বুকে এটি একমাত্র বাইক যেটায় কোন সাধারন ইঞ্জিন ব্যাবহার করা হয় নাই। এই বাইকে ব্যাবহার করা হয়েছে উরোজাহাজের গ্যাস টারবাইন ইঞ্জিন। এমন কি গিনেজ রেকর্ডে এই বাইক এখন পর্যন্ত সব থেক শক্তিশালী বাইকের স্থান ধরে রেখেছে। এছাড়া সব থেকে দামী বাইকের স্থানটিও এই বাইকের দখলে। আর উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ব্যাবহার করায় এই বাইকের ইঞ্জিনের শব্দ সম্পূর্ন উড়োজাহাজের মত। এর ওজন ৬১.২ কেজি আর এর ইঞ্জিন ৩২০ অর্শ শক্তি সম্পন্ন আর এর সর্বোচ্চ গতী ৪০২ কিমি প্রতি ঘন্টায়।

০৪) Lightning Electric Superbike:


এই বাইকটি হল পৃথিবীর একমাত্র সুপার বাইক যা সম্পূর্ন একটা বিদ্যুৎ চালিত মটর দ্বারা চালিত। গ্রেট সল্ট লেকে এই বাইকের সর্বোচ্চ গতি উঠেছিল ৩৫২ কিমি প্রতি ঘন্টায়।


০৫) Honda CBR1100XX Blackbird:


Model CBR 1100 XX মডেলের বাইকটি তৈরি করা হয় ১৯৯৬ সালে, আর এখন পর্যন্ত এই বাইকের তৈরি চালু আছে। আর এই বাইকের সর্বোচ্চ গতি ২০০ মাইল প্রতি ঘন্টায়।


০৬) Yamaha YZF R1 2011:


DOHC ইঞ্জিন বিশিষ্ট যার ধারন ক্ষমতা ৯৯৮ কিউবিক সেন্টিমিটার, ১৮২ অর্শ শক্তি বিশিষ্ট এই বাইকের সর্বোচ্চ গতি ৩০০ কিমি প্রতি ঘন্টায়।


০৭) MV Agusta F4 1000 R:


এই বাইকের চেসিস ডিজাইন করা করা হয়েছে সর্বাধুনিক সাস্পেনশন ব্যাবস্থা দিয়ে আর এর মূল শক্তি আসে ১০০০ সিসির ইঞ্জিন থেকে। আর এই বাইকের সর্বোচ্চ গতি ৩০০ কিমি প্রতি ঘন্টায়।


০৮) Kawasaki ninja ZX-11/ZZ-R1100:


Model ZX-11 মডেলের বাইকটি টানা ৬ বছর রেস ট্রাকে সর্বোচ্চ গতীর বাইকের খেতাব ধরে রেখেছিল। এই বাইকের সর্বোচ্চ গতি ২৮৯ কিমি প্রতি ঘন্টায়।


০৯) Aprilia RSV 1000R Mille:


১০) BMW K 1200 S:


১৬৭ অর্শ শক্তির এই বাইক শত কিমি এর সীমানা ছুতে সময় নেয় ২.৮ সেকেন্ড। দ্রুত গতীর সাথে এই বাইকের রয়েছে অসাধারন নিয়ন্ত্রন ব্যাবস্থা। এর এই নিয়ন্ত্রনের মূলে রয়েছে এর চাকার ডিজাইন। এই বাইকের রয়েছে খুবই ছোট একটা ভর বিন্দু। অর্থাৎ এটি রাস্তার সাথে একটা বিন্দুতে স্পর্শ করে থাকে মাত্র। এই কারন গতীতে থাকা অবস্থায়ও এর নিয়ন্ত্রন চালকের হাতেই থাকে অন্যান্ন বাইকের তুলনায়। এছাড়া এর ইলেক্ট্রিক সাস্পেন্সন ব্যাবস্থা এই বাইককে অনেকটা আরাম দায়ক। কেননা বন্ধুর রাস্তায় এই বাইক অন্যান্ন বাইকের তুলনায় অনেক কম ঝাকি খায়।


কেমন লাগছে জেনে, এই পৃথিবীর বুকে সব থেকে দ্রুতগামী আর শক্তিশালী বাইকের কথা জেনে? মনে হচ্ছে না একটা নিয়ে বেরিয়ে পরি পৃথিবী ভ্রমনে? মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। বাইক গুলির ডিজাইন যেমন মন কাড়া তেমনি এর গতীও আকাশ চুম্বি। কোন দিন আপনাদের কারো যদি কেনার সৌভাগ্য হয় আমাকে ঘুরানোর দাওয়াত দিতে ভুলবেন না কিন্তু।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক।
hybridknowledge.info

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জানার কোন অন্ত নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই, ভেবে যদি জানার ইচ্ছাকে দমন করে রাখা হয় তবে সে জীবনের কোন অর্থ নাই। কিন্তু সব জানতে হবে এমন কোন কথা নাই, তবে জানার ইচ্ছা থাকা চাই। আমাদের এই জানা জানির ইচ্ছকে সূত্র করে, আমাদের ছোট্ট একটি প্রয়াস ❝আমি জানতে চাই❞। আমাদের জানতে চাওয়ার ইচ্ছা পুরনের লক্ষে কখনো জেনেছি মহাকাশ নিয়ে, কখনো জেনেছি সমুদ্র নিয়ে, কখনো ডুব দিয়েছি কৌতুক এর মাঝে, আবার ভয়ে কেঁপেছি ভুতের গল্প পড়ে, কখনোবা শিউরে উঠেছি কিছু মানুষের কার্যকলাপ জেনে। কখনো জেনেছি নতুন আবিষ্কারের কথা, আবার জেনেছি আদি ঐতিহ্যের কথা, এত সব কিছু করেছি শুধু জানতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে।

hybridknowledge.info hybridknowledge.info