ওরা দেখতে কুৎসিত, লম্বা মুখে বিশাল দাঁতের সারি সবসময় খাই খাই করে। জলের ওপর শুধু নাকটা ভেসে থাকে, নিঃশব্দে ভেসে বেড়ায়, কুঁতকুঁতে চোখ দু’টো সতর্ক, শিকারের সন্ধানে উন্মুখ। জলার ধারে পানি খেতে আসা অ্যান্টিলোপ, বরাহ কিংবা বাইসন ওদের সহজ টার্গেট, বাগে পেলে মানুষের মাংসেও অরুচি নেই। ভয়ংকর জোর গায়ে, কাঁটাযুক্ত ধারালো লেজওলা লম্বা, ভাসমান কালো শরীরটাকে দূর থেকে দেখে গাছের গুঁড়ি বলে ভ্রম হতে পারে সহজেই। খবরদার ভুলেও যেন ওটার কাছে যাওয়া না হয়, কারণ জলাশয়ের পানিতে ভেসে বেড়ানো সরীসৃপ গোত্রের এই প্রাণীটা সাক্ষাৎ এক মৃত্যুদানব "কুমির!"


জলাশয়ের স্থায়ী বাসিন্দা ভয়ংকর এই প্রাণীটির পৃথিবীতে বাস দুই’শ মিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে। মোট ২১ প্রজাতির কুমির আছে সারা দুনিয়ায়, আমেরিকান অ্যালিগেটরসহ। কিন্তু এই প্রাণীটি ক্রমশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর বুক থেকে। নাইজেরিয়ার একটি জলাভূমিতে শাক সবজি উৎপাদনের জন্য পানি শুকিয়ে ফেললে তিন বছরের মধ্যে ওই অঞ্চলের সব কুমির অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলো। ১৯৬৭ সালে প্যারিসে এক ধনী আমেরিকান ৭,৫০০ ডলার দিয়ে নোনা পানির একটি কুমিরের চামড়া কিনেছিলেন তার পোর্টেবল বারকে ঢেকে রাখার জন্য। এক জরিপের তথ্য হচ্ছে, উত্তর অস্ট্রেলিয়ার লিভারপুল নদীতে একরাতে কুমির শিকারীরা চল্লিশটি কুমির হত্যা করেছিলো। কুমির হত্যা বন্ধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যতই আইন প্রয়োগ করুক না কেন যে হারে এই প্রাণীটির নিধনযজ্ঞ চলছে তাতে এই শতাব্দী শেষ হবার আগেই শুধুমাত্র আমেরিকান অ্যালিগেটর ছাড়া অন্য কোন প্রজাতির কুমির কোথাও থাকবে না।
বিজ্ঞানীরাও ইদানিং কুমিরের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এই প্রাণীটির ওপর গবেষণা চালানো যে বড়ই কষ্টকর। কারণ এরা থাকে নির্জন, জনবিরল প্রত্যন্ত এলাকায়, বেশিরভাগ সময় কাদার মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকে চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে যায়। বেশিরভাগ সময় এরা কিছুই করে না, চুপচাপ ঝিমোয়। কিন্তু যখন জেগে ওঠে তখন এদের কাজগুলো দেখার মতোনই হয় বটে।
ডাইনোসররা বহু আগে পটল তুললেও তাদের স্বজাতি কুমিররা কিন্তু এখনও বহাল তবিয়তেই পৃথিবীতে বাস করছে। অন্যান্য সরীসৃপদের তুলনায় এই প্রাণীর মস্তিষ্ক অনেক জটিল। বেশিরভাগ কুমির পাখির মতোই বাসা বাঁধে। মাত্র কিছু প্রজাতি একা থাকতে পছন্দ করে। তাদের হিসহিস, নাক দিয়ে ঘোঁতঘোঁত ইত্যাদি শব্দ কিছু না কিছু অর্থ বহন করে।
পূর্ণ বয়স্ক কুমির ৩ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়, ওজন ১ টনেরও কিছু বেশি। কিছু প্রজাতির কুমির এক’শ বছরেরও বেশি বাঁচে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
কুমিরদের মধ্যে নোনা পানির কুমিরগুলো হয় সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর। ৩৩ ফুট লম্বা কুমিরেরও দেখা মিলেছে কুইনসল্যান্ডে। ধারণা করা হয়, কুমিররা ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছে। ফিজির সাগর তলেও বেশ কিছু কুমির বাস করে। কারণ তারা ঢেউয়ের দোলা একটুও পছন্দ করে না। উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় নোনাপানির কুমিরের সংখ্যা এক সময় মিলিয়নেরও বেশি ছিলো। কিন্তু সংখ্যাটা এখন ৫ হাজারে এসে ঠেকেছে। নোনা পানির এই কুমিরদের হিংস্রতা সম্পর্কে অনেক গল্প আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাকি বার্মিজ এক জলাভূমিতে হাজারেরও বেশি জাপানিকে সেখানকার কুমিরগুলো মহাউৎসাহে ভক্ষণ করেছিলো। ১৯৭৬ সালে, ইন্দোনেশিয়ার একটি ডুবন্ত ফেরি বোটের ৪০ জন আরোহীকে গলাধঃকরণ করেছিলো কুমির।
মানিনগ্রাডের বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এসব ঘটনাকে ‘গল্প’ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তাদের ধারণা কুমির নেহায়েতই ভীরু প্রকৃতির প্রাণী, মানুষজন সবসময় এড়িয়ে চলে। কিন্তু তারপরও বহুবার কুমিরের শিকার হয়েছে মানুষ। কিছুদিন আগে কুইনসল্যান্ডের এক তরুণ খনি শ্রমিক গিয়েছিল বরাহ শিকারে। তাকে জলাভূমিতে নেমে সাঁতরাতে দেখে তার এক বন্ধু। তারপর তার আর কোন খোঁজ নেই। পরে স্থানীয় এক পুলিশ অফিসার হতভাগ্য ছেলেটির আধ খাওয়া শরীর আবিষ্কার করেছিলো ওই জলাভূমি থেকে ধরা পড়া ১৮ ফুট লম্বা এক কুমিরের পেটে।
তবে মানুষখেকো হিসেবে মোট তিন জাতের কুমিরকে দায়ী করা যায়। এরা হচ্ছে নোনা পানির কুমির, আফ্রিকার নীল নদের কুমির এবং বৃহৎ আমেরিকান অ্যালিগেটর। তবে ভারতের মকর নামের এক শ্রেণীর কুমিরও মানুষের ওপর হামলা চালায় তাদের শান্তি বিঘ্নিত হলে।
কুমিরদের সম্পর্কে একটি মজার তথ্য হচ্ছে, এরা খাবার চিবোয় না, স্রেফ গিলে ফেলে। এমনকি পাথরও নাকি গপ করেই গিলে খায় এরা। তবে এদের জারক রস এতোই শক্তিশালী যে তারা পাথর পর্যন্ত হজম করে ফেলতে পারে।
শুরুতেই বলা হয়েছে, জলাশয়ের এই দানবটি এখন নিশ্চিহ্ন হবার পথে। এর একমাত্র কারন, এদের চামড়া। কুমিরের চামড়ার তৈরী মানিব্যাগের দাম ১২০০ টাকা, হাতব্যাগ ৮০০০ টাকা। মরা হাতির মতো মরা কুমিরও কুমির শিকারীদের কাছে লাখ টাকা দাম। কেনিয়ার লেক টুরকানাডে ৬৬ সালে ১২০০০ হাজার কুমির ছিল। কিন্তু চোরাশিকারীদের কারণে এই সংখ্যাটা এখন এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় শূণ্যের কোঠাতেই।
আফ্রিকার প্রকৃতি কুমিরদের বসবাসের জন্য খুবই কঠিন জায়গা। কিন্তু মানুষ তার জন্য আরো কঠোর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আফ্রিকান সরকার দলবদ্ধভাবে কুমির শিকার বন্ধ করলেও চোরা শিকারীদের দৌরাত্ম একটুও হ্রাস পায়নি।
বিজ্ঞানীরাও ইদানিং কুমিরের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এই প্রাণীটির ওপর গবেষণা চালানো যে বড়ই কষ্টকর। কারণ এরা থাকে নির্জন, জনবিরল প্রত্যন্ত এলাকায়, বেশিরভাগ সময় কাদার মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকে চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে যায়। বেশিরভাগ সময় এরা কিছুই করে না, চুপচাপ ঝিমোয়। কিন্তু যখন জেগে ওঠে তখন এদের কাজগুলো দেখার মতোনই হয় বটে।
ডাইনোসররা বহু আগে পটল তুললেও তাদের স্বজাতি কুমিররা কিন্তু এখনও বহাল তবিয়তেই পৃথিবীতে বাস করছে। অন্যান্য সরীসৃপদের তুলনায় এই প্রাণীর মস্তিষ্ক অনেক জটিল। বেশিরভাগ কুমির পাখির মতোই বাসা বাঁধে। মাত্র কিছু প্রজাতি একা থাকতে পছন্দ করে। তাদের হিসহিস, নাক দিয়ে ঘোঁতঘোঁত ইত্যাদি শব্দ কিছু না কিছু অর্থ বহন করে।
পূর্ণ বয়স্ক কুমির ৩ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়, ওজন ১ টনেরও কিছু বেশি। কিছু প্রজাতির কুমির এক’শ বছরেরও বেশি বাঁচে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
কুমিরদের মধ্যে নোনা পানির কুমিরগুলো হয় সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর। ৩৩ ফুট লম্বা কুমিরেরও দেখা মিলেছে কুইনসল্যান্ডে। ধারণা করা হয়, কুমিররা ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছে। ফিজির সাগর তলেও বেশ কিছু কুমির বাস করে। কারণ তারা ঢেউয়ের দোলা একটুও পছন্দ করে না। উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় নোনাপানির কুমিরের সংখ্যা এক সময় মিলিয়নেরও বেশি ছিলো। কিন্তু সংখ্যাটা এখন ৫ হাজারে এসে ঠেকেছে। নোনা পানির এই কুমিরদের হিংস্রতা সম্পর্কে অনেক গল্প আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাকি বার্মিজ এক জলাভূমিতে হাজারেরও বেশি জাপানিকে সেখানকার কুমিরগুলো মহাউৎসাহে ভক্ষণ করেছিলো। ১৯৭৬ সালে, ইন্দোনেশিয়ার একটি ডুবন্ত ফেরি বোটের ৪০ জন আরোহীকে গলাধঃকরণ করেছিলো কুমির।
মানিনগ্রাডের বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এসব ঘটনাকে ‘গল্প’ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তাদের ধারণা কুমির নেহায়েতই ভীরু প্রকৃতির প্রাণী, মানুষজন সবসময় এড়িয়ে চলে। কিন্তু তারপরও বহুবার কুমিরের শিকার হয়েছে মানুষ। কিছুদিন আগে কুইনসল্যান্ডের এক তরুণ খনি শ্রমিক গিয়েছিল বরাহ শিকারে। তাকে জলাভূমিতে নেমে সাঁতরাতে দেখে তার এক বন্ধু। তারপর তার আর কোন খোঁজ নেই। পরে স্থানীয় এক পুলিশ অফিসার হতভাগ্য ছেলেটির আধ খাওয়া শরীর আবিষ্কার করেছিলো ওই জলাভূমি থেকে ধরা পড়া ১৮ ফুট লম্বা এক কুমিরের পেটে।
তবে মানুষখেকো হিসেবে মোট তিন জাতের কুমিরকে দায়ী করা যায়। এরা হচ্ছে নোনা পানির কুমির, আফ্রিকার নীল নদের কুমির এবং বৃহৎ আমেরিকান অ্যালিগেটর। তবে ভারতের মকর নামের এক শ্রেণীর কুমিরও মানুষের ওপর হামলা চালায় তাদের শান্তি বিঘ্নিত হলে।
কুমিরদের সম্পর্কে একটি মজার তথ্য হচ্ছে, এরা খাবার চিবোয় না, স্রেফ গিলে ফেলে। এমনকি পাথরও নাকি গপ করেই গিলে খায় এরা। তবে এদের জারক রস এতোই শক্তিশালী যে তারা পাথর পর্যন্ত হজম করে ফেলতে পারে।
শুরুতেই বলা হয়েছে, জলাশয়ের এই দানবটি এখন নিশ্চিহ্ন হবার পথে। এর একমাত্র কারন, এদের চামড়া। কুমিরের চামড়ার তৈরী মানিব্যাগের দাম ১২০০ টাকা, হাতব্যাগ ৮০০০ টাকা। মরা হাতির মতো মরা কুমিরও কুমির শিকারীদের কাছে লাখ টাকা দাম। কেনিয়ার লেক টুরকানাডে ৬৬ সালে ১২০০০ হাজার কুমির ছিল। কিন্তু চোরাশিকারীদের কারণে এই সংখ্যাটা এখন এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় শূণ্যের কোঠাতেই।
আফ্রিকার প্রকৃতি কুমিরদের বসবাসের জন্য খুবই কঠিন জায়গা। কিন্তু মানুষ তার জন্য আরো কঠোর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আফ্রিকান সরকার দলবদ্ধভাবে কুমির শিকার বন্ধ করলেও চোরা শিকারীদের দৌরাত্ম একটুও হ্রাস পায়নি।
ভারতে ঘড়িয়াল কুমিরদের রক্ষা করার প্রাণান্ত চেষ্টা চলছে। সারা ভারতে ঘড়িয়াল কুমিরদের সংখ্যা বর্তমানে মাত্র ষাট, আর নেপালে সম্ভবত চল্লিশ। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকেই এদের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে রাজা বাদশাদের রাজকীয় শিকারের কবলে পড়ে। উড়িষ্যায় এক মহারাজা একদিনে এক’শ ঘড়িয়াল হত্যা করেছিলেন শুধু টার্গেট প্রাকটিশ করতে, এমন কথাও শোনা যায়। তবে পঞ্চাশ এর দশকের শুরু থেকে ঘড়িয়ালদের সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। এর কারণ হচ্ছে বাধ তৈরি, চোরা শিকার এবং যথেচ্ছ মৎস শিকার।
জেলেরাও কিন্তু কুমির শিকারের জন্য যথেষ্ট দায়ী। কারণ কুমিরকে তারা প্রকৃতির শত্রু মনে করে, ভাবে এগুলো অতিশয় পেটুক, সকল মাছ এরাই সাবাড় করছে। প্রকৃতপক্ষে কুমির খায় খুব কমই, বেশিরভাগ খাবার সঞ্চয় করে রাখে। আর যে সব মাছ তারা শিকার করে সেগুলো জেলেরা সাধারণত ধরে না।
কুমির চাষ লাভজনক ব্যবসা বলে অনেকেই কুমিরের ফার্ম করেছেন। নিউগিনি থেকে জাপান কুমিরের ফার্ম একটি সাধারণ জিনিস। ভারতের উত্তর প্রদেশের দু’টো অঞ্চলে ঘড়িয়াল উৎপাদনের কেন্দ্র রয়েছে। নন্দনকানন বায়োলজিক্যাল পার্কে ২০ ফুট লম্বা ঘড়িয়ালও রয়েছে। তবে আমাদের মীরপুরের চিড়িয়াখানায় শিশু চেহারার যে দু’টি কুমির রয়েছে সেগুলো অন্যান্যদের তুলনায় কিছুই না।
সেন্ট লুসিয়ায় টনি নামে এক ব্যক্তির কুমির খামারে রয়েছে হরেক রকমের কুমির। এদের মধ্যে ৮০ বছর বয়স্ক, ১৪ ফুট লম্বা উলফগ্যাং কুমিরটি খুবই হিংস্র স্বভাবের। সে একবার তার এক ১০ ফুট লম্বা স্বজাতিকে কামড়ে প্রায় মেরে ফেলারই জোগাড় করেছিল। উলফগ্যাং ঐ খামারের কর্তা। ওখানকার সব কুমির তাকে রীতিমত সমঝে চলে। মেরী নামের আরেকটি কুমির, এটি মেয়ে, নভেম্বর মাসে এই পুকুরের পাড়ে গর্ত খুঁড়ে চল্লিশটির মত ডিম পেড়েছিলো। কিন্তু বাচ্চা ফুটে বেরুবার পর উলফগ্যাং সুযোগ বুঝে সেগুলোকে খেয়ে ফেলে। তবে ইদানিং উলফগ্যাং সেই সুযোগ আর পায় না। কারণ মেরী রীতিমত তার বাচ্চাদের পাহারা দিয়ে রাখে।
জেলেরাও কিন্তু কুমির শিকারের জন্য যথেষ্ট দায়ী। কারণ কুমিরকে তারা প্রকৃতির শত্রু মনে করে, ভাবে এগুলো অতিশয় পেটুক, সকল মাছ এরাই সাবাড় করছে। প্রকৃতপক্ষে কুমির খায় খুব কমই, বেশিরভাগ খাবার সঞ্চয় করে রাখে। আর যে সব মাছ তারা শিকার করে সেগুলো জেলেরা সাধারণত ধরে না।
কুমির চাষ লাভজনক ব্যবসা বলে অনেকেই কুমিরের ফার্ম করেছেন। নিউগিনি থেকে জাপান কুমিরের ফার্ম একটি সাধারণ জিনিস। ভারতের উত্তর প্রদেশের দু’টো অঞ্চলে ঘড়িয়াল উৎপাদনের কেন্দ্র রয়েছে। নন্দনকানন বায়োলজিক্যাল পার্কে ২০ ফুট লম্বা ঘড়িয়ালও রয়েছে। তবে আমাদের মীরপুরের চিড়িয়াখানায় শিশু চেহারার যে দু’টি কুমির রয়েছে সেগুলো অন্যান্যদের তুলনায় কিছুই না।
সেন্ট লুসিয়ায় টনি নামে এক ব্যক্তির কুমির খামারে রয়েছে হরেক রকমের কুমির। এদের মধ্যে ৮০ বছর বয়স্ক, ১৪ ফুট লম্বা উলফগ্যাং কুমিরটি খুবই হিংস্র স্বভাবের। সে একবার তার এক ১০ ফুট লম্বা স্বজাতিকে কামড়ে প্রায় মেরে ফেলারই জোগাড় করেছিল। উলফগ্যাং ঐ খামারের কর্তা। ওখানকার সব কুমির তাকে রীতিমত সমঝে চলে। মেরী নামের আরেকটি কুমির, এটি মেয়ে, নভেম্বর মাসে এই পুকুরের পাড়ে গর্ত খুঁড়ে চল্লিশটির মত ডিম পেড়েছিলো। কিন্তু বাচ্চা ফুটে বেরুবার পর উলফগ্যাং সুযোগ বুঝে সেগুলোকে খেয়ে ফেলে। তবে ইদানিং উলফগ্যাং সেই সুযোগ আর পায় না। কারণ মেরী রীতিমত তার বাচ্চাদের পাহারা দিয়ে রাখে।
এরকম আরেকটি ব্যক্তিগত খামারের মালিক ওয়েষ্ট পামবীচের এড এবং ফ্রান্সিন ফ্রয়লিক দম্পতি। তাদের খামারে কুমিরের সংখ্যা ২,৫০০। প্রতি সপ্তাহে এই কুমিরগুলো ৩,০০০ পাউন্ড মাছ এবং মাংস খায়। ফ্রয়লিকরা তাদের খামারে আরো ১০০০ কুমির উৎপাদনের কথা চিন্তা করছেন। কারণ কুমিরের চাষে তাদের আর্থিক লাভের অঙ্কটা নেহায়েত কম না।
কুমিরের চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা বলে এদিকে ইদানিং অনেকেই এগিয়ে আসছেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। এটি একটি শুভ সংবাদ। কিন্তু দুঃসংবাদ হচ্ছে চোরা কুমির শিকারীদের দৌরাত্ম ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বেশিরভাগ জীব বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা এভাবে কুমির নিধনযজ্ঞ চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আর কোনো কুমিরই থাকবে না। কুমিরের মাংস অনেকের প্রিয়। এজন্যেও দেদারসে এই প্রাণীটিকে হত্যা করা হচ্ছে। এই লোভ দমন করা সম্ভব না হলে কোটি বছরের এই প্রাচীন প্রজাতিটি একদিন হয়তো তার বিলুপ্ত স্বজাতি ডাইনোসরদের মতোই বিলীন হয়ে যাবে।
লেখকঃ অনীশ দাস অপু।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
কুমিরের চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা বলে এদিকে ইদানিং অনেকেই এগিয়ে আসছেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। এটি একটি শুভ সংবাদ। কিন্তু দুঃসংবাদ হচ্ছে চোরা কুমির শিকারীদের দৌরাত্ম ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বেশিরভাগ জীব বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা এভাবে কুমির নিধনযজ্ঞ চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আর কোনো কুমিরই থাকবে না। কুমিরের মাংস অনেকের প্রিয়। এজন্যেও দেদারসে এই প্রাণীটিকে হত্যা করা হচ্ছে। এই লোভ দমন করা সম্ভব না হলে কোটি বছরের এই প্রাচীন প্রজাতিটি একদিন হয়তো তার বিলুপ্ত স্বজাতি ডাইনোসরদের মতোই বিলীন হয়ে যাবে।
লেখকঃ অনীশ দাস অপু।
সম্পাদনায়ঃ জানা অজানার পথিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন